আত্নহত্যা নাকি হত্যা পর্বঃ০১
- "আমার মনে হচ্ছে আমার স্বামীর একটি মেয়ের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক চলছে। আপনি একটু এব্যাপারে খোঁজ করুন এবং আসলেই কি আমার ধারণা সঠিক কিনা তা জানান।"
- "আপাততঃ আমি এসব কেস নিচ্ছি না।"
- "প্লিজ স্যার আমি অনেক বড় বিপদে আছি আমাকে একটু সাহায্য করুন। আপনার একটা সাহায্য একটা মেয়ের ঘর বাঁচাতে পারে।"
- "আমি কোন ভাবেই এই কেস নিতে পারবো না।"
মেয়েটা অনেক অনুরোধ করার পরে-ও ডিটেকটিভ বাহাদুর তার কেসটি নিতে মানা করে দেয়। মেয়েটি আর না পেরে বাহাদুর ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি থেকে বেরিয়ে যায়। মেয়েটি বের হওয়ার পর বাহাদুর খবরের কাগজটি হাতে নিয়ে পড়তে লাগলো। এমন সময় নিহাল বললো,
- "গত দুই দিন যাবত তুমি কোন কেসই নিতে চাইছো না আর এখন এই মেয়েটির কেসটি ও নিতে রাজি হলে না কিন্তু কেন?"
অনেকটা অভিমানী স্বরে ডিটেকটিভ নিহাল এই কথা বললো। বাহাদুর খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় উওর দিল,
- "আপাততঃ এসব কেসে ফোকাস করার ইচ্ছে নেই।"
- "কিন্তু মেয়েটার স্বামীর কেসটা তো অনেক সহজ। শুধু কার সাথে অবৈধ সম্পর্ক চলছে এটা খুঁজে বের করতে পারলেই কেস সলভ হয়ে যাবে।"
- "আচ্ছা এসব কথা বাদ দাও চলো বাইরে থেকে একটু ঘুরে আসা যাক।"
- "কোথায় যাবে?"
- "দেখি কোথায় যাওয়া যায়।"
এই বলে বাহাদুর চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াতেই দেখল কিছুক্ষণ আগে যে মেয়েটি তার স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কিত কেস নিয়ে এসেছিল সে তার কেসের ডিটেইলসের প্যাকেটটি ভুলক্রমে টেবিলে রেখে চলে গিয়েছে। বাহাদুর প্যাকেটটি তার পকেটে নিয়ে বিইএ থেকে বের হয়ে একটি রিকশা নিয়ে ২টি জায়গায় ঘোরাঘুরি করল। তবে ঘোরাঘুরি করার সময় বাহাদুর একটি কথাও বলেনি। ডিটেকটিভ নিহাল বুঝতে পারল যে বাহাদুর এখানে বেড়াতে আসেনি বরং বাহাদুর কেস ইনভেস্টিগেশন করতে এসেছে কিন্তু কোন কেস ইনভেস্টিগেশন করছে সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। অতঃপর জায়গা দুটি ঘুরে তারা দু'জন একটি চায়ের দোকানে বসলো আর সেখানেই তাদের সাথে দেখা হয়ে গেল পাশের থানার ইন্সপেক্টর জিহাদের সাথে। ইন্সপেক্টর জিহাদ তাদেরকে দেখতেই বলল,
- "আসসালামু আলাইকুম ডিটেকটিভ। কেমন আছেন?"
ডিটেকটিভ নিহাল উওর দিল,
- "ওয়া আলাইকুমুস সালাম ইন্সপেক্টর। আলহামদুলিল্লাহ, আপনি?"
- "জি আমিও ভালো তা এখানে কি কোন কেস ইনভেস্টিগেশন করতে এসেছিলেন?"
- "হ্যাঁ আবার না দুটোই।"
বাহাদুরের মুখ থেকে এমন উওর শুনে কিছুটা বিরক্তির স্বরে জিহাদ বললো,
- "আচ্ছা বাহাদুর আপনি সবসময় এতটা রহস্য নিয়ে কথা বলেন কেন? কখনো তো স্বাভাবিকভাবে কথা বলেন।"
জিহাদের একথার উত্তরে বাহাদুর একটি মুচকি হাসি দিল।
- "বাহ আপনার হাসিতে ও রহস্য আছে।"
একথা বলে জিহাদ চায়ে চুমুক দিল। কিছুক্ষণের নীরবতা কাটিয়ে জিহাদ আবারও বললো,
- "হঠাৎ করেই এই এলাকায় আত্মহত্যার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। আমার মনে হয় যারা আত্মহত্যা করে তারা তাদের জীবনকে বিন্দু পরিমানও ভালোবাসে না।"
এই বলে জিহাদ তার হাতে থাকা ক্যাপটি মাথায় পরে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াতে যাবে এমন সময় বাহাদুর বললো,
- "কোন কেস কে এক এঙ্গেল থেকে দেখলে সেটা কোনদিনও সলভ করা সম্ভব না। একটা কেস কে একাধিক এঙ্গেল থেকে দেখলে তখনই কেসটা আসলে কিসের সেটা বোঝা যাবে এবং সলভ করাও সহজ হবে।"
- "ঠিক কি বলতে চাচ্ছেন বুঝতে পারলাম না?"
জিহাদ প্রশ্ন করলো এবং তার প্রশ্নের উওরে বাহাদুর বললো,
- "হয়তো কেসগুলো কে একটা এঙ্গেল থেকে দেখছেন তাই আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। যদি বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে দেখেন এবং ভালোভাবে তদন্ত করেন তাহলে বুঝতে পারবে এগুলো আসলে আত্মহত্যা নাকি হত্যা!"
- "আপনার ভাষ্য মতে যতগুলো আত্মহত্যার কেস সামনে আসছে সবগুলো হত্যা তাই তো?"
- "আমার ভাষ্য বলতে কিছুই নেই ভালোভাবে তদন্ত করলে নিজেই সব প্রশ্নের উওর পেয়ে যাবেন।"
বাহাদুর আর কথা না বাড়িয়ে সোজা হাঁটা শুরু করল। তার পিছু পিছু ডিটেকটিভ নিহালও হাঁটা শুরু করলো। ইন্সপেক্টর জিহাদ কিছু জিজ্ঞেস করতে যে ও যেন পারল না। এদিকে ডিটেকটিভ নিহালের মনে হাজারো প্রশ্ন। সে এতো-টুকু সিওর যে, তারা যে দুটি জায়গায় গিয়েছিল সেখানে বাহাদুর ঘুরতে যায় নি বরং কেস ইনভেস্টিগেশন করতে গিয়েছে। খানিক পরে তারা দুজন আবারো বাহাদুর ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি তে পৌঁছাল। এজেন্সির ভেতরে প্রবেশ করতেই নিহাল বাহাদুর কে বললো,
- "আমি খুব ভাল করেই জানি, যে দুটি জায়গায় আমাকে নিয়ে গিয়েছো বেড়াবে বলে আসলে সে দুটি জায়গায় তুমি ইনভেস্টিগেশন করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কোন কেস ইনভেস্টিগেশন করতে গিয়েছ তাতো বলেনি।"
বাহাদুর স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন করলো,
- "যে দুটি জায়গায় গিয়েছিলাম সে দুটি জায়গা ঠিক কিরকম?"
- "আবাসিক এলাকা, কিন্তু কোন কেস ইনভেস্টিগেশন করতে গিয়েছিলে সেটা তো এখনো বলনি?"
- "একজন ডিটেকটিভের শুধু ভালো পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা থাকলেই হয় না বরং তার থেকে প্রখর মেধার অধিকারী হতে হয় এবং পুরাতন জিনিস গুলো মনে রাখার অভ্যাস করতে হয়।"
- "যেটা বলতে চাচ্ছ একটু সরাসরি বল।"
- "গত মাসের ৩ তারিখ ও ১৯ তারিখের খবর কাজগুলো নিয়ে আসো। ওই টেবিলে তৃতীয় ডেস্কে আছে।"
বাহাদুরের কথামতো নিহাল ডেস্ক থেকে গত মাসের ৩ তারিখ ১৯ তারিখের খবরের কাগজ গুলো বের করল এবং খবরের কাগজে দুটি বাহাদুরের সামনে দিল। বাহাদুর খবরের কাগজ হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে তারপর নিহালের কাছে নিয়ে বললো,
- "গত মাসের ৩ তারিখের খবরের কাগজের ৮ নাম্বার পৃষ্ঠা ও ১৯ তারিখের খবরের কাগজের ১২ নাম্বার পৃষ্ঠা উভয়ের চতুর্থ কলামের ৫ নং খবরটি ভালো করে দেখো।"
নিহাল খবর গুলো দেখে বললো,
- "আরে এগুলো তো গত মাসে ঘটে যাওয়া আত্মহত্যা খবর গুলো।"
- "তুমি এতটা সিওর হয়ে কিভাবে বলতে পারছো যে এগুলো আত্মহত্যা?"
- "পুলিশ ইনভেস্টিগেশনে তো ওটাই বলা হয়েছে।"
- "তুমি কি জানো না যে খবরগুলো দেখতে সাধারণত আত্মহত্যা মনেহয় সেগুলোর সঠিক তদন্ত হয় না? খবরের কাগজে যে ২ জনের ছবি দেখছ আমরা দুজন আজকে তাদের বাসার আশেপাশে গিয়েছিলাম। তবে দুঃখজনক বিষয় বাসার আশেপাশে তেমন সন্দেহভাজন কোন জিনিসই খুঁজে পেলাম না যেটার মাধ্যমে আমি বলতে পারবো যে এইগুলো হত্যা। বাসার আশেপাশে সবকিছুই স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল আর এমনটা হওয়াও স্বাভাবিক কারণ আমি প্রায় ১ মাস পরে কেসগুলো হাতে নিয়েছি। এতদিনে অল্প ক্লু থাকলে সেগুলো হারিয়ে গেছে। চাইলে তাদের বাসার ভেতরে ঢুকে তদন্ত করতে পারতাম কিন্তু পুলিশ অফিসারেরা যেভাবে তদন্ত করেছিল মনেহয় না কোন ক্লু পেতাম তাই তাদের বাসার ভেতরেও ঢুকিনি। তবে এখনো আমার মন বলছে যে এই কেসগুলো আত্মহত্যা না বরং হত্যা। তবে কোন ক্লু না পাওয়া পর্যন্ত আমি কিছুই প্রমাণ করতে পারবো না।"
- "এখন বুঝতে পারলাম আজকে সকালে যে মেয়েটি এসেছিল তার স্বামীর কেস নিয়ে তুমি কেন সে কেসটি নিতে চাওনি। তবে যে কেসটা নিয়ে বর্তমানে তুমি স্টাডি করছ সেটাতো সম্পূর্ণ ক্লু বিহীন কেস। তাই এটার কোন ফলাফলেই আমরা সহজে পৌঁছাতে পারবো না। আর কোন ফলাফলে পৌঁছাতে না পারলে এইগুলা যে হত্যা সেটাও প্রমাণ করা সম্ভব হবে না।"
- "এই দুটি খবরের কাগজের আত্মহত্যার খবর দুটি পাশাপাশি রাখ আর ছবিগুলো ভালো করে দেখ। তাহলেই বুঝতে পারবে এগুলো আত্মহত্যা নাকি হত্যা।"
ছবিগুলো পাশাপাশি রেখে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করার পর নিহালের ধারণাও পাল্টে গেল। কারণ ছবির দুজনের আত্মহত্যার পদ্ধতিটা একই। ডান হাতে ব্লেড ও বাম হাতের শিড়া কাটা। নিহাল বললো,
- "মনে হচ্ছে এ-ই খুনগুলোর খুনি একজনই।"
- "তুমি ঠিক ধরেছ সবগুলোর খুনি একজনই। তবে এই একটা মিল দিয়ে আমারা কিছুই প্রমাণ করতে পারবো না।"
- "বাহাদুর আমার তোমার প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। যেহেতু এই কেসটা তুমি হাতে নিয়েছ আশা করি এই কেসের শেষ তুমি দেখেই ছাড়বে। কিন্তু তার আগে আমাদের থেকে একটু অন্য ভাবেও চিন্তা করতে হবে। যেহেতু আমরা প্রাইভেট ডিটেকটিভ তাই আমাদের কাছে যেসব কেস আসবে আমরা যদি সেগুলো নিতে মানা করে দেয় তাহলে পরবর্তীতে হয়তো অনেকেই কেস দিতে চাইবে না। শুধু তাই না কেস না নেওয়া যেমন আমাদেরকে আর্থিক ভাবে ভালো আঘাত করছে তেমনি মানুষদের কে সার্ভিস দেওয়া থেকে ও দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। তাই আমি বলবো আজকে সকালে যে মেয়েটা এসেছিল তার স্বামীর কেস নিয়ে তুমি ওই কেসটা হাতে না-ও। যেহেতু মেয়েটা নিজ থেকেই বলেছে তার স্বামীর পরকীয়ার সম্পর্ক চলছে সেহেতু কেসটা আরও বেশি সহজ হয়ে গেল। এখন আমরা শুধু ওই মেয়েটা কে খুঁজলেই হবে যে পরকীয়া সম্পর্কের মূল। এই কেসটা সলভ হয়ে গেলে তারপর নাহয় অন্য কেস নিয়ে ভালো ভাবে চিন্তা করবে।"
অতঃপর বাহাদুর নিহালের কথায় সম্মতি জানালো। বাহাদুরের সম্মতি পেয়ে নিহাল যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেল। উচ্ছসিত কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
- "তা কেসটা কিভাবে তদন্ত শুরু করবে?"
- "আমার কাছে মেয়েটার স্বামীর কেস ডিটেলসের প্যাকেট টি আছে। আগে ভালো করে কেসের ডিটেইলস দেখি তারপর সিদ্ধান্ত নেব কিভাবে কেসটা তদন্ত শুরু করবো।"
যে-ই ভাবা সেই কাজ, বাহাদুর তার পকেটে থেকে কেসের ডিটেলসের প্যাকেট টি বের করে সেটি খুলতেই একটি ছেলে ও একটি মেয়ের ছবি বেরিয়ে আসলো। ছবিগুলোর পেছনে লেখা দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে ছেলের ছবিটি হলো মেয়েটির স্বামীর। নাম আসফাক আহমেদ আর মেয়ের ছবিটি হলো মূল আসামির অর্থাৎ আসফাক আহমেদের যার সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক চলছে তার। মেয়েটির নাম অন্তরা খানম। বাহাদুরের হাত থেকে ছেলের ছবিটি নিয়ে নিহাল এক প্রকার চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
- "আরে এই ভদ্রলোককে তো আমি আগেও দেখেছি!"
- "কোথায় দেখেছ?"
বাহাদুর অনেকটা কৌতুহলী হয়ে এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করল।
- "পাহাড়তলীর ডেলা টাওয়ারের সামনেই তার সাথে দেখা হয়েছিল। তবে আমাদের দেখা হওয়ার দৃশ্যটি খুবই অদ্ভুত ছিল। আমি ডেলা টাওয়ার অতিক্রম করে সামনে অগ্রসর হচ্ছিলাম আর তিনি ঢুকছিলেন এমন সময় আমাদের দুজনের একে অপরের সাথে খুব বাজে ভাবে ধাক্কা লাগে। যার ফলে তিনি তার বাঁহাতে খুব বেশি ব্যাথা পান এবং তার হাতে থাকা জিনিসগুলো পরে যায়। তারপর আমি নিজে সেসব জিনিস গুলো তার বাসা পর্যন্ত নিয়ে যায়। তবে অদ্ভুত ব্যাপার হলো ভদ্রলোক ধন্যবাদ দেওয়া তো দূরে থাক আমার মুখের উপর এমনভাবে দরজা বন্ধ করলেন যেন ঘরের মধ্যে অনেক মূল্যবান কিছু লুকিয়ে রেখেছেন।"
- "তোমার কি মনে আছে কত তলার কত নাম্বার ফ্ল্যাটে তার বাসা?"
- "হ্যাঁ মনে আছে, অষ্টম তলার বি নাম্বার ফ্ল্যাট।"
- "চলো তাহলে এখনই যাওয়া যাক।"
- "এত রাতে?"
- "রাতদিন বলতে কিছুই নেই, কেস যেহেতু হাতে নিয়ে ফেলেছি তাই আর দেরি না করে তদন্ত শুরু করে যাক।"
অতঃপর তারা দুজন একটি রিকশা নিয়ে সোজা ডেলা টাওয়ারের সামনে উপস্থিত হলো কিন্তু উপস্থিত হওয়ার পর বুঝতে পারল ডেলা টাওয়ারে নিশ্চয় কোন ঝামেলা হয়েছে। পার্কিং এরিয়ায় দুইটি পুলিশের গাড়ি আর আশেপাশে কয়েকটি পুলিশ গুলি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। শুধু তাই না টাওয়ারের ভেতরেও অনেকগুলো পুলিশ। দূর থেকে দেখলে মনে হচ্ছে সপ্তম অথবা অষ্টম তলায় অনেকগুলো পুলিশ একত্রে জমা হয়েছে। টাওয়ারের আরেকটু কাছাকাছি যেতেই একজন দারোয়ান তাদেরকে আটকে বললো,
- "স্যার এখন ভেতরে যাওয়া নিষেধ।"
- "কি হয়েছে?"
বাহাদুর দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করতেই প্রতি উত্তরে দারোয়ান বলল,
- "অষ্টম তলায় একজন আত্মহত্যা করছে।"
শুরুতেই দারোয়ানের মুখ থেকে এমন কথা শুনবে তা তারা কল্পনা ও করেনি। তাও নিজেকে সংযত রেখে বাহাদুর তার পকেট থেকে ছবিদুটি বের করে আসফাক আহমেদের ছবিটি দারোয়ানের দিকে এগিয়ে দিয়ে অনেকটা ভয়ার্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
- "দেখুনতো ছবিতে থাকা এই ভদ্রলোকটি আত্মহত্যা করেছে নাকি অন্য কেউ?"
দারোয়ান ছবিটি তার হাতে নিয়ে বললো,
- "হ্যাঁ আসফাক সাহেবই আত্মহত্যা করেছেন। বড্ড ভালো মানুষ ছিলেন তিনি। কেন যে আত্মহত্যা করলেন কিছুই বুঝতে পারছি না।"
নিহাল ও বাহাদুর দু'জনেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। ঠিক এই মুহুর্তে কি বলা উচিত তারা দু'জন তা বুঝতে পারছে না। তারা দু'জনেই এক অদ্ভুত ভাবনার মধ্যে ডুবে গেল। তবে তাদের ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে দারোয়ান বাহাদুরের হাতে থাকা মেয়ের ছবিটি নিয়ে জিজ্ঞেস করল,
- "এই ছবিটি আপনারা কোথায় পেয়েছেন?"
বাহাদুর জিজ্ঞেস করল,
- "আপনি কি এই মেয়েটাকে চিনেন আর মেয়েটাকে কি কখনো আসফাক আহমেদের সাথে দেখেছেন?"
- "জি চিনি এবং অনেকবার দেখেছি।"
দারোয়ানের একথা শুনে নিহালের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। তারমানে তারা আসল অপরাধীর খুব কাছে। নিহাল দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে জিজ্ঞেস করল,
- "শেষ কবে দেখেছিলেন?"
- "মারা যাওয়ার আগে।"
- "মারা যাওয়ার আগে মানে!"
- "ছবির মেয়েটা আসফাক আহমেদের স্ত্রী ছিলেন। ১ বছর আগে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন আর আজকে আসফাক সাহেব আত্মহত্যা করেছেন....
চলবে,
গল্পঃ #আত্মহত্যা_নাকি_হত্যা
পর্বঃ০১
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
We want 2nd part also
উত্তরমুছুনSotti good story
উত্তরমুছুন