politics লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
politics লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
রাজনীতি হোক দেশের জন্য
আপনি বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জামায়াত, জাতীয় পার্টি, জাসদ, বাসদ যা খুশি করেন। তাতে আমার কোন আপত্তি নেই। এটা আপনার রাজনৈতিক অধিকার। আপনার রাজনৈতিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করার অধিকার আমার নেই। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা আপনার আছে। দল করার স্বাধীনতা আপনার আছে।
আমার আপত্তি হিংসা প্রতিহিংসায়। আপনি লীগ করেন জন্যে বিএনপিকে শত্রু ভাববেন, আবার বিএনপি করেন জন্যে লীগকে শত্রু ভাববেন কিংবা জামায়াত, জাতীয় পার্টি, জাসদ, বাসদ করেন জন্যে অন্য কোন দলকে শত্রু ভাববেন, এটা আমার পছন্দ নয়। এখানেই আমার যত আপত্তি। রাজনীতি আপনি কিসের জন্য করেন? দেশ ও দেশের মানুষের জন্যই তো, নাকি? তাহলে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিজেকে বিলিয়ে না দিয়ে প্রতিপক্ষের পিছনে সময় নষ্ট কেন করেন? মারামারি, হানাহানি, কাটাকাটি করতে গিয়ে নিজের জীবন, পরিবারের জীবন ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জীবনকে বিপদে ফেলেন কেন? যাঁদের জন্য এসব করছেন, তাঁরা তো তাঁদের স্হানে ঠিকই আছে। দিনে একজন আরেকজনকে গালি দিচ্ছে, খিস্তি খেউড়ি করছে, রাত হলে খোঁজ নিয়ে দেখেন তাঁরা একই টেবিলে বসে কোরমা পোলাও খাচ্ছে। একই পেয়ালায় সুরা পান করছে। তারপর দেখেন তাঁদের পরিবার, সন্তান, সন্ততি সবাই দেশের বাইরে। তাঁদের সেখানে আলিশান প্রাসাদ অট্টালিকা রয়েছে। আপনার কি আছে? কোন এমপি মন্ত্রীর পরিবার সন্তান সন্ততি এই দেশে আছে, বলতে পারেন? আর আপনার পরিবার পরিজন সন্তান সন্ততির কি খবর? তাঁরা কি তিনবেলা তিন মুঠো ডালভাত খেতে পারছে? মনে হয়, না। তাহলে কেন আপনি তাঁদের জন্য নিজেদের মধ্যে হিংসা, প্রতিহিংসা, মারামারি, কাটাকাটিতে লিপ্ত হচ্ছেন? কেন নিজের জীবনকে বিসর্জন দিচ্ছেন? পরিবার পরিজন ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে বিপদে ফেলছেন? একটু ভাববেন কি একবার?
যতদিন আপনারা ঠিক না হবেন, ততদিন এই অবস্থার পরিবর্তন হবে না। ততদিন নেতারা ঠিক হবে না। নেতারা ঠিক না হলে দল ঠিক হবে না। দল ঠিক না হলে দেশ ঠিক হবে না। দেশ-ই যদি ঠিক না হয়, তাহলে আপনার রাজনীতি কিসের জন্য?
সো, রাজনীতি হোক দেশের জন্য....
আরাফার ময়দানের নিম কূটনীতির সাথে মিশে আছে জিয়া ও বাংলাদেশের নাম।
ওআইসির একবারের বৈঠকে এক অদ্ভূত সমস্যার কথা তুলে ধরলো মালেয়শিয়া। আরাফার ময়দানে প্রতিবছর প্রচুর হাজিসাহেব হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছেন। প্রচণ্ড গরমে সেখানে ছায়া নেই। মরু থেকে ভেসে আসে গরম হাওয়ার হল্কা। হজ করা রীতিমতো অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে দক্ষিন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য। প্রথমে প্রস্তাব দেয়া হলো সৌদি আরব আর জর্ডান মিলে পুরো মাঠকে ঢেকে দেবে। কিন্তু এক সৌদি শেখ বললেন, এটি ঐতিহ্যের খেলাপ হবে। সেখানে খোলা আকাশের নিচে বা তাবুতে মুসাফিরের মতো একদিন অবস্থান করাই হজের ফরজ। অবকাঠামো গড়ার উপায় নেই।
এবার আরবের আধাপাগল নয়া বড়লোক দেশগুলো এক হাস্যকর প্রস্তাব দিলো। তারা একটু দূরে দূরে পিলার বানিয়ে এয়ার কুলার লাগিয়ে দেবে। এই প্রস্তাবও অবাস্তব। বাংলাদেশ একটি প্রস্তাব দিলো যা ছিলো আরব কূটনীতিবীদদের জন্য হাস্যকর। বাংলাদেশের জিয়াউর রহমানের প্রস্তাব ছিলো গাছ লাগালেই তো হয়। কিন্তু আরব কূটনীতিবীদরা বললেন, রাব উল খালির সবচেয়ে শকনো এলাকায় বাবলার কাঁটাগাছও হয়না, সেখানে হবে ছায়াদার গাছ!
বাংলাদেশ জানালো সবাই রাজি থাকলে এমন একটা গাছ দেয়া হবে, যার পানি লাগেনা তেমন। নদীর ধুধু চরে সে গাছ জন্মায়। সে গাছ কোনও কাটাদার গাছ নয়। রীতিমতো ছায়দার বৃক্ষ।
ওআইসি বলেছিলো এয়ার কুলারের ব্যয় তাও বহন করা যাবে, কিন্তু মরুতে যে গাছ হয়, তার ব্যয় নির্বাহের সামর্থ্য কি সব দেশ মিলেও হবে! জিয়াউর রহমান আস্বস্ত করে সেদিন বলেছিলো, গাছের পুরো ব্যয় নির্বাহ করবে বাংলাদেশ। ওআইসি শুধু পরিবহণ খরচ দিলেও হবে।
বাদশাহকে উপহার দেয়ার সময় জিয়াউর রহমান বলেন- “গরিব মানুষের দেশের গরিব রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে আপনার জন্য এই সামান্য উপহার।”
বাদশাহ ফাহদ এই উপহার পেয়ে বলেন - "বহু দেশ থেকে বহু মূল্যবান উপহার পেয়েছি; কিন্তু এমন মূল্যবান উপহার তিনি পাননি।" আবেগে আপ্লুত বাদশাহ জড়িয়ে ধরেন রাষ্ট্রপতি জিয়াকে। তিনি বলেন, আজ থেকে সৌদি আরব ও বাংলাদেশ পরস্পর অকৃতিম বন্ধু। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য অর্থ সাহায্য দিতে চান। কিন্তু এসময় জিয়াউর রহমান বলেন, আমাদের দেশের মানুষ গরিব, কিন্তু তারা পরিশ্রম করতে জানে। আপনার দেশের উন্নয়ন কাজের জন্য হাজার হাজার শ্রমিক দরকার। একটি নব্য স্বাধীন মুসলিম দেশের জন্য যদি আন্তরিকভাবে সাহায্য করতে চান, তবে আমার দেশের বেকার মানুষদের কাজ দিন। বাদশাহ ফাহদ রাজি হলেন। উন্মোচিত হলো এক নতুন দিগন্ত। তখন থেকে বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ সৌদি আরব গিয়ে নিজেদের ভাগ্য বদল সহ স্বাবলম্বী হয়ে ফিরেছেন বাংলাদেশে।
সেদিন বাংলাদেশ থেকে জিয়াউর রহমানের দেওয়া ১০ লাখ গাছ শুধু আরাফার ময়দানে স্থায়ী ছায়া এনে দিয়েছে তাইই নয়, সেই থেকে খুলে গেছে আরব বিশ্বে বাংলাদেশের শ্রমবাজার। বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার যে ভীষণ সঙ্কটে ভুগছিলো তা কিছুটা হলেও দূর হয়েছিল। শুধু একটি ছোট্ট আইডিয়া, বাংলাদেশি জাতিনিমের গাছ, র্যাডিক্যালি কমে গেছে হজ করতে গিয়ে হিটস্ট্রোকের পরিমাণ।
সৌদিতে আজও তাই আরাফার নিম গাছকে ভালোবেসে তারা জিয়া ট্রি হিসেবে ডাকে। এভাবেই আরাফার ময়দানের নিম কূটনীতির সাথে মিশে আছে জিয়া ও বাংলাদেশের নাম।
ক্ষমতার দম্ভে স্থাপিত মূতি ক্ষণস্থায়ী
ক্ষমতার দম্ভে স্থাপিত মূতি ক্ষণস্থায়ী
অলিউল্লাহ নোমান
বয়স যাদের ৪০-এর উপরে ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। ইরাকের নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। নিজের দেশে জনপ্রিয়তা থাকুক বা না থাকুক এক সময় তৃতীয় বিশ্বের দেশ গুলোতে সাদ্দামের বিপুল জনপ্রিয়তা ছিল। ১৯৯০ সালে ইরাক কুয়েত দখল করে নিয়েছিল। তখনই সাদ্দাম দুনিয়াব্যাপি আলোচিত এবং জনপ্রিয় নেতা। বাংলাদেশের ঘরে ঘরে সাদ্দাম হোসেনের ছবি শোভা পেতে দেখা গেছে তখন। এই সাদ্দামের দেশে রাস্তায় বিভিন্ন মোড়ে সাদ্দামের ভাস্কর্য বা মূর্তি বসানো হয়েছিল। দোর্দন্ড প্রতাপশালী একনায়ক প্রেসিডেন্টের পতন হয়েছে আমেরিকানদের হাতে। সাদ্দাম আমেরিকানদের আক্রমনের মুখে পালিয়ে গিয়েছিলেন রাজপ্রাসাদ ছেড়ে। তাঁর নিজ গ্রাম তিকরিতের এক কৃষি ফার্মের গুহায় আশ্রয় নিয়ে বাঁচার জন্য শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর। আমেরিকানরা তাঁকে খুজে বের করেছে। আমেরিকান সৈন্যরা সাদ্দামকে ধরে নিয়ে এসেছিল সেই গুহা থেকে।
সাদ্দাম হোসেন বাগদাদ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরপরই মূর্তি গুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়। রাস্তার মোড়ে তাঁর কোন মূর্তি রাখা হয় নি। সব গুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল আমেরিকনাদের হাতে বাগদাদ পতনের পরপরই।
আটক হওয়ার পর আমেরিকানদের পক্ষ থেকে সাদ্দাম হোসেনকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল দেশটির শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। জিজ্ঞাসাবাদের নেতৃত্বদানকারী সিআইএ’র কর্মকর্তা জন নিক্সন এ নিয়ে একটি বই লিখেছেন। বইটির নাম-DEBRIFING THE PRESIDENT. বইটিতে দেখা যায়, ধরে আনার পর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে প্রথম দিন বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। এরমধ্যে একটি প্রশ্ন ছিল সাদ্দাম হোসেনের ভাস্কর্য বা মূর্তি নিয়ে। নিক্সনের বইয়ে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদের শেষ প্রশ্ন ছিল এটি। সাদ্দাম হোসেনকে বলা হয়েছিল, আমরা জানি ইতিহাসে অমর হয়ে থাকতে অনেক চেষ্টা ছিল তোমার। শাসনকালকে স্মরণীয় করে রাখার অংশ হিসাবে তোমার মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল বিভিন্ন জায়গায়। এই মূর্তি গুলো ইতোমধ্যে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে, এই বিষয়টা এখন তোমার কাছে কেমন লাগছে?
নিক্সনের ভাষায় সাদ্দাম হোসেনের জবাব ছিল-"Saddam gave a little laugh. He put up his index finger and said, “I want you to listen to me. I never asked anyone to put up a statue of me. Oftentimes, members of the revolutionary Command Council would say to me. Saddam, we want to put your picture up somewhere or we want to put up a statue of you. I would tell them no. But commend would overrule me. Who am I overrule the command?"
আসলে স্বৈরশাসকরা সব সময়ই জনগণের দোহাই দিয়ে সব কাজ করেন। বিভিন্ন নামে থাকে তাদের চেলা চামুন্ডা এবং তোষামোদকারী। একনায়ক সাদ্দাম হোসেনও স্বৈরশাসকদের এ চরিত্রের বাইরের কেউ নন। তিনি তোষামোদকারীদের উপরই দোষ চাপিয়ে দিলেন। কিন্তু সাদ্দাম হোসেনের ভাষায় তোষামোদকারীদের নির্মিত ভাস্কর্য বা মূর্তি গুলো তাঁর জীবদ্দশায়ই ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল। এরজন্য তাঁকে ভিনদেশী গোয়েন্দাদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। সাদ্দাম হোসেন অমর হয়ে আছেন। তবে মূর্তির মধ্যে নয়। স্বৈরশাসন এবং নানা বিতর্কিত কর্মের মাঝে বেঁচে আছেন তিনি।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি জন্মের সাথে শেখ মুুজিবুর রহমানের অবদানও অনস্বীকার্য। তাঁর সফলতা এবং ব্যর্থতা দুই-ই রয়েছে। স্বাধীনতার পর তিনিও স্বৈরাশাসক হিসাবেই পরিচিতি পেয়েছেন। সারা জীবন গণতন্ত্রের ফেরি করেছেন। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার শ্লোগান দিয়েছেন। কিন্তু স্বাধীনতার পর আবার জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন। নিষিদ্ধ করেছিলেন রাজনৈতিক দল। বিলুপ্ত করে দিয়েছিলেন নিজের দল আওয়ামী লীগ। বাকশালের নামে এক দলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বন্ধ করে দিয়েছিলেন সকল গণমাধ্যম। সাদ্দাম হোসেনের মত এক নায়ক হিসাবেই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নিজেকে। এসব কর্মের জন্য শেখ মুজিবুর রহমান এমনিতেই বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা এখন ক্ষমতায়। তিনি পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে এক নায়কের মতই দেশ চালাচ্ছেন। তাঁকেও ইতোমধ্যে নানা উপাধিতে ভূষিত করা হচ্ছে। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় সফলতা হচ্ছে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ না করে বিরোধী দলের সবাইকে ঘরে ঢুকিয়ে দিতে পেরেছেন। এই দিক থেকে পিতার চেয়ে একধাপ এগিয়ে সফল বলা যায় তাঁকে। রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ না করে কিভাবে বিরোধী দল মুক্ত রাখা যায় দেশকে সেটা ইতোমধ্যেই প্রমাণ করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
সাদ্দাম হোসেন এবং শেখ মুজিবুর রহমানের মত তাঁরও চাটুকার তোষামোদকারীর অভাব নেই। মিডিয়া নামে দেশে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে সবাই তাঁর তোষামোদকারী। তাঁর সব কর্মকাণ্ডের জয়গান করেন সবাই। গত রাতেও কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় গাড়িতে বসে একটি ইন্ডিয়াপন্থি টিভি চ্যানেলের তথাকথিত টক শো’র আলোচনা দেখছিলাম সোস্যাল মিডিয়ায়। আওয়ামী পন্থি একজন সাংবাদিক ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যার প্রসংশা করে বলছিলেন, সরকার সেদিন তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যা প্রশংসণীয়। ভাস্কর্যের নামে মূর্তির বিরুদ্ধে যারা কথা বলছেন, তাদেরকেও ২০১৩ সালের ৫ মে’র শাপলা চত্বরের মত প্রতিহত করার নসিহত করতে শোনা গেছে তাকে। অর্থাৎ প্রয়োজনে গণহত্যা চালিয়ে মূর্তি নির্মান করতে হবে, এটাই ছিল এ আওয়ামী সাংবাদিকের টকশো পরামর্শ।
অথচ, বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষের সংস্কৃতি মূর্তিকে সমর্থন করে না। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এ মানচিত্রের সংস্কৃতি হাজারো বছর ধরে ধারণ করে আছে মানুষ। এখন হঠাৎ করে বিভিন্ন চেতনার শ্লোগান দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি স্থাপনের কথা বলা হচ্ছে। যারা এই চেতনার শ্লোগান দিয়ে মূর্তি স্থাপন করতে চায় তাদের এ অপচেষ্টা দীর্ঘ দিনের। নানা ইস্যুকে সামনে নিয়ে তারা বিতর্ক তৈরি করেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় সংস্কৃতির বিপরীতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তিকে কৌশল হিসাবে নেয়া হয়েছে।
জন নিক্সনের বই দিয়ে শুরু করেছিলাম। সাদ্দাম হোসেনের শেষ পরিণতি দিয়েই আজকের লেখা শেষ করব। সাদ্দাম হোসেনের গাড়ির ড্রাইভারের উদ্ধৃতি দিয় জন নিক্সন লিখেছেন, বাগদাদ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় অনেক রাত হয়ে গেছে। দীর্ঘ পথ চলায় ক্লান্ত সবাই। একটু বিশ্রাম প্রয়োজন। পথে এক বাড়ির সামনে গাড়ি থামানো হল। সাদ্দাম হোসেন বাড়িটিতে কিছু সময় বিশ্রামের জন্য আশ্রয় চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই বাড়ির ভেতর থেকে দরজা খোলা হয়নি। সামান্য বিশ্রামের জায়গা হয়নি তাদের। সাদ্দাম হোসেন তখনো তাদের প্রেসিডেন্ট। অথচ প্রেসিডেন্টকে আশ্রয় না দিয়ে তাড়িয়ে দেয় নিজ দেশের নাগরিক।
সুতরাং মূর্তি স্থাপন করলেই ইতিহাসে অমর হওয়া যায় না এটা এই দুনিয়ায় প্রমাণিত। ৯০ শতাংশ মানুষের ধর্মীয় সংস্কৃতি ও অনুভুতির বাইরে গিয়ে ক্ষমতার দাপটে মূর্তি স্থাপন করা যাবে। তবে এটা হবে ক্ষণস্থায়ী। অদূর ভবিষ্যতে এই মূর্তিকে মানুষ একদিন বুড়িগঙ্গায় ভসিয়ে দেবে।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও বামেরা জামায়াতে ইসলামীকে পাকিস্তানপন্থী বলে গালি দেয়।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও বামেরা জামায়াতে ইসলামীকে পাকিস্তানপন্থী বলে গালি দেয়। যদিও জামায়াত এটা অস্বীকার করেনা যে তারা ১৯৭১ এ স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের বিরোধী ছিলো এবং যতভাবে সম্ভব পাকিস্তানের ভেঙে যাওয়াকে ঠেকানোর জন্য কাজ করেছে। তবে জামাতে ইসলামীর নির্মোহভাবে পর্যালোচনা করলে দেখবেন তারা ভারত ভেঙে পাকিস্তান সৃষ্টিরও বিরোধিতা করেছিলো। কিন্তু পাকিস্তান সৃষ্টির পরে তারা পাকিস্তান রাষ্ট্রকে মেনে নিয়ে রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত থেকেছিলো।
জামায়াতকে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য যদি পাকিস্তানপন্থী বলে গালি দেয়া যায় তবে আওয়ামী লীগ সিপিবি ও বাংলাদেশের বেশীরভাগ বামেদের পূর্বসূরীদের পাকিস্তানের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য মরিয়া চেষ্টার জন্য কেন তাদেরকে পাকিস্তানপন্থী বলে গালি দেয়া যাবেনা। আমার এই কথাটা শুনে অনেকে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন। আসেন আমরা একটু ইতিহাস দেখি।
১৯৬৯ সালের ২৫ আগস্ট ছাত্র লীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন জামায়াতকেকে পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে পাকিস্তান বিরোধী বলে গালি দিয়েছিলো। বিবৃতিটি দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত হয়েছিলো। কৌতুকপ্রদ হচ্ছে, যেই জামায়াতকে তারা পাকিস্তানের শত্রু আখ্যা দিয়েছিলো সেই একই জামায়াতকে তারা আজ পাকিস্তানের চর বলে। দেখুন সেদিন তারা কী লিখেছিলো।
"পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমদ ও বিভিন্ন ছাত্র সংস্থার পাঁচজন ছাত্র নেতা জামাতে ইসলামীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান বিরোধী কার্য-কলাপের অভিযোগ করেন।
গত শনিবার রাত্রে এক যুক্ত বিবৃতিতে ছাত্রনেতৃবৃন্দ বলেন, জামাতে ইসলামীরা এখনও পাকিস্তানের অস্তিত্বেরই বিরোধী।
বিবৃতিতে অপর ৫ জন ছাত্রনেতা হইতেছেন: পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আঃ শঃ মঃ আবদুর রব, পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (মতিয়াগ্রুপ) সভাপতি শামসুদ্দোহা ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম এবং ছাত্র ইউনিয়নের (মেননগ্রুপ) সভাপতি জামাল হায়দার ও সম্পাদক মাহবুব উল্লাহ।"
এই বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছিলো ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান সফল হয়ে আইউব খানের পদত্যাগের ছয় মাস পরে। জামায়াতে ইসলামীকে পাকিস্তান বিরোধী কেন বলেছিল তারা, আজ আওয়ামী ও বামদেরকে তার কৈফিয়ত দিতে হবে। আবার এটাও তাদের জাস্টিফাই করতে হবে যে কেন পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ও বামদের নির্মিত ইতিহাসে জামায়াতকে পাকিস্তানপন্থী বলা হয়।
আওয়ামী লীগ আর বামেরা বলে ৪৮ এ ভাষার দাবীর আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতার আন্দোলনের সূচনা হয়। দেখুন, ৬৯ এ পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য পেরেশান হওয়া তোফায়েল আহমেদ ২০১৯ কী বলেছেন?
তোফায়েল আহমেদ গত বছর বলেছেন, “৪৯-এর ২৩ জুন আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করে মহান ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মহত্তর স্বাধীনতার বীজ রোপণ করেন শেখ মুজিব”
সূত্রঃ যুগান্তর, ১৫ আগস্ট ২০১৯
শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই বলেছেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ভাষা-আন্দোলনেরই সুদুর প্রসারী ফলশ্রুতি”
সূত্রঃ দৈনিক সংবাদ, ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৫
স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে শেখ মুজিব বেতার ভাষণে বলেছিলেন, ‘১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন কেবল ভাষার জন্য আন্দোলন ছিল না, বরঞ্চ তা ছিল সাংস্কৃতিক স্বাধিকার আর মানুষের মতো বাঁচার অধিকারের সংগ্রাম। সেদিন থেকেই শুরু হয়েছিল চরম সংগ্রামের প্রস্তুতি। এই আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের মানুষের স্বাধিকারের আন্দোলন, স্বাধীনতার আন্দোলন।’
সূত্রঃ দৈনিক বাংলা, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২
আওয়ামী স্তাবকেরা অবশ্য আরো আগিয়ে বলেন, শেখ মুজিব কোলকাতায় থাকাকালেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন। দেখুন,
“১৯৪৫-৪৬ শিক্ষাবর্ষে তৎকালীন ইসলামিয়া বর্তমানে মাওলানা আজাদ কলেজে পড়াশোনা করার সময় বেকার হোস্টেলেই থাকতেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার জন্য বরাদ্দ ছিল তিনতলার ২৪ নম্বর কক্ষটি। মনে করা হয়, বঙ্গবন্ধু দু'বছর এই কক্ষ থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন। যা তিনি ১৯৭১ সালে বাস্তবায়ন করেন।”
সূত্রঃ সময় নিউজ টিভি ১৭ মার্চ ২০২০
ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের রুশপন্থী ও চিনপন্থী উভয় গ্রুপের ১৯৬৯ এর ২৫ আগস্টের যৌথবিবৃতি যদি তাদের সৎ রাজনৈতিক অবস্থান হয় তাহলে মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার সংগ্রাম নিয়ে ১৯৭১ এর পরে সকল নির্মিত ইতিহাস মিথ্যা। এখন একটা প্রশ্ন সঙ্গত কারণেই সামনে চলে আসে যে ১৯৬৯ এর আগষ্ট মাসে যারা পাকিস্তান রাষ্ট্রের অখণ্ডতা রক্ষায় পেরেশান ছিলেন তারা কেন তার ঠিক এক থেকে দেড় বছরের মাথায় পাকিস্তান রাষ্ট্র ভেঙে বাংলাদেশ সৃষ্টির জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো? তাহলে এটা তো স্বীকার করতেই হবে, ১৯৫২ থেকে স্বাধীনতার বীজ বপন বা স্বপ্ন দেখার কথা মিথ্যা।
The Awami League and Communist party activists in Bangladesh abuse Jamaat-e-Islami (JeI) by calling its members as supporters of Paskistan. JeI does not deny that they were against the birth of Bangladesh in 1971 and tried their best to stall the disintegration of Pakistan. But, this is also the fact that JeI had resisted the creation of Pakistan by breaking up India. However, after Pakistan was born, JeI remained loyal to the country.
Why will you not abuse Awami League, CPB and other Leftist parties and call them pro-Pakistan if JeI is a pro-Pakistan group in your view? I guess, my argument sounds strange to many. Let’s take a look at history
On August 25, 1969, Chhatro League and Chhatro Union issued a newspaper statement in which they condemned JeI for taking a stand against Pakistan. That statement was published in Dainik Ittefaq, a Bangla language newspaper. It’s interesting that they call JeI leaders Pakistani spies.
Look what they wrote then.
“Tofayel Ahmed, president of East Pakistan Chhatroleague and five student leaders from different student organisations have charged that Jamaat e Islami is involved in anti-Pakistan activities. In a joint statement last Saturday the students said, Jamaat e Islami continues to be against the existence of Pakistan,” the statement said.
The other five student leaders who issued the statement are East Pakistan Chhatroleague general secretary A S M Abdur Rob, East Pakistan Student Union (Matia Group) president Shamsuddoha, EPSU (Matia Group) general secretary Nurul Islam, East Pakistan Student Union (Menon Group) president Jamal Haidar and EPSU (Menon Group) secretary Mahbubullah.”
This statement was published six months after the mass uprising of 1969 had met with a successful end and Ayub Khan had resigned. Can Awami League and Communist leaders justify why they called JeI an anti-Pakistan group before? Can they also explain why at a later stage they began calling JeI a pro-Pakistan organisation?
Awami League and Communist leaders and supporters say that the freedom movement in East Pakistan started with the Language Movement in 1948.
Let’s see what Awami League leader Tofayel Ahmed, who was in support of united Pakistan in 1969, said last year.
Tofayel Ahmed said: “Sheikh Mujib sowed the seed of greater freedom movement by founding Awami League on June 23, 1949 and launching great Language Movement.”
(Jugantor, 15 AUG 2019)
In 1975, Shiekh Mujib said: “The Language Movement in the long run led to the winning of Bangladesh’s independence and sovereignty.”
(Dainik Songbad, 21 FEB 1975)
After returning to Bangladesh, following the country’s independence, Sheikh Mujib said in a radio speech: “The Language Movement of 1952 was not just a movement for the language. It was also a struggle for cultural rights and that to live as human beings. That was the beginning of the preparation for the final struggle. For the people of Bangladesh that was a movement for their rights, and also a movement for independence.”
(Dainik Bangla, 15 FEB 1972)
However, Awami sycophants say, Sheikh Mujib dreamt of the independence of Bangladesh.
“In the academic year of 1945-46, Bangabondhu Sheikh Mujibur Rahman used to stay at Baker Hostel, while he was a student of Islamia College, which is now known as Maulana Azad College. Room No 24, on the second floor, was allotted to him. It is believed, he started dreaming of the independence of Bangladesh, while he stayed in that room. In 1971, he materialised his dream.”
(Samoy News TV, 17 MAR 2020)
If the 1969 joint statement of Chhatroleague, pro-Russian EPSU and pro-Chinese EPSU came from an honest political standpoint, whatever they wrote as the history of the Liberation War and the freedom struggle post-1971 is completely untrue.
Now this is a relevant question, why those who were staunch supporters of a united Pakistan in 1969, moved in the opposite direction and took part in the Liberation War. We all have to accept, the claim that the seeds of independence of Bangladesh were sown in 1952 is indeed bogus.
মক্কায় জিয়াউর রহমানের নিম গাছ লাগানোর সেই ইতিহাস..
১৯৭৭ সালে বাদশাহ ফাহদের আমন্ত্রণে সৌদি আরব যান বাংলাদেশের তৎকালীন
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং উপহার হিসেবে সাথে নিয়ে যান বেশ কিছু নিম
গাছের চারা। বাদশাহকে উপহার দেয়ার সময় বলেন- “গরিব মানুষের দেশের গরিব
রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে আপনার জন্য এই সামান্য উপহার।” বাদশাহ্ ফাহদ বহু
দেশ থেকে বহু মূল্যবান উপহার তৎকালীন সময় থেকে এখন পর্যন্ত পেয়ে আসছেন;
কিন্তু এমন মূল্যবান উপহার তিনি পাননি। আবেগে আপ্লুত বাদশাহ জড়িয়ে ধরেন
রাষ্ট্রপতি জিয়াকে। তিনি বলেন, আজ থেকে সৌদি আরব ও বাংলাদেশ পরস্পর
অকৃতিম বন্ধু।
video >
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)