আরাফার ময়দানের নিম কূটনীতির সাথে মিশে আছে জিয়া ও বাংলাদেশের নাম।
ওআইসির একবারের বৈঠকে এক অদ্ভূত সমস্যার কথা তুলে ধরলো মালেয়শিয়া। আরাফার ময়দানে প্রতিবছর প্রচুর হাজিসাহেব হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছেন। প্রচণ্ড গরমে সেখানে ছায়া নেই। মরু থেকে ভেসে আসে গরম হাওয়ার হল্কা। হজ করা রীতিমতো অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে দক্ষিন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য। প্রথমে প্রস্তাব দেয়া হলো সৌদি আরব আর জর্ডান মিলে পুরো মাঠকে ঢেকে দেবে। কিন্তু এক সৌদি শেখ বললেন, এটি ঐতিহ্যের খেলাপ হবে। সেখানে খোলা আকাশের নিচে বা তাবুতে মুসাফিরের মতো একদিন অবস্থান করাই হজের ফরজ। অবকাঠামো গড়ার উপায় নেই।
এবার আরবের আধাপাগল নয়া বড়লোক দেশগুলো এক হাস্যকর প্রস্তাব দিলো। তারা একটু দূরে দূরে পিলার বানিয়ে এয়ার কুলার লাগিয়ে দেবে। এই প্রস্তাবও অবাস্তব। বাংলাদেশ একটি প্রস্তাব দিলো যা ছিলো আরব কূটনীতিবীদদের জন্য হাস্যকর। বাংলাদেশের জিয়াউর রহমানের প্রস্তাব ছিলো গাছ লাগালেই তো হয়। কিন্তু আরব কূটনীতিবীদরা বললেন, রাব উল খালির সবচেয়ে শকনো এলাকায় বাবলার কাঁটাগাছও হয়না, সেখানে হবে ছায়াদার গাছ!
বাংলাদেশ জানালো সবাই রাজি থাকলে এমন একটা গাছ দেয়া হবে, যার পানি লাগেনা তেমন। নদীর ধুধু চরে সে গাছ জন্মায়। সে গাছ কোনও কাটাদার গাছ নয়। রীতিমতো ছায়দার বৃক্ষ।
ওআইসি বলেছিলো এয়ার কুলারের ব্যয় তাও বহন করা যাবে, কিন্তু মরুতে যে গাছ হয়, তার ব্যয় নির্বাহের সামর্থ্য কি সব দেশ মিলেও হবে! জিয়াউর রহমান আস্বস্ত করে সেদিন বলেছিলো, গাছের পুরো ব্যয় নির্বাহ করবে বাংলাদেশ। ওআইসি শুধু পরিবহণ খরচ দিলেও হবে।
বাদশাহকে উপহার দেয়ার সময় জিয়াউর রহমান বলেন- “গরিব মানুষের দেশের গরিব রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে আপনার জন্য এই সামান্য উপহার।”
বাদশাহ ফাহদ এই উপহার পেয়ে বলেন - "বহু দেশ থেকে বহু মূল্যবান উপহার পেয়েছি; কিন্তু এমন মূল্যবান উপহার তিনি পাননি।" আবেগে আপ্লুত বাদশাহ জড়িয়ে ধরেন রাষ্ট্রপতি জিয়াকে। তিনি বলেন, আজ থেকে সৌদি আরব ও বাংলাদেশ পরস্পর অকৃতিম বন্ধু। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য অর্থ সাহায্য দিতে চান। কিন্তু এসময় জিয়াউর রহমান বলেন, আমাদের দেশের মানুষ গরিব, কিন্তু তারা পরিশ্রম করতে জানে। আপনার দেশের উন্নয়ন কাজের জন্য হাজার হাজার শ্রমিক দরকার। একটি নব্য স্বাধীন মুসলিম দেশের জন্য যদি আন্তরিকভাবে সাহায্য করতে চান, তবে আমার দেশের বেকার মানুষদের কাজ দিন। বাদশাহ ফাহদ রাজি হলেন। উন্মোচিত হলো এক নতুন দিগন্ত। তখন থেকে বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ সৌদি আরব গিয়ে নিজেদের ভাগ্য বদল সহ স্বাবলম্বী হয়ে ফিরেছেন বাংলাদেশে।
সেদিন বাংলাদেশ থেকে জিয়াউর রহমানের দেওয়া ১০ লাখ গাছ শুধু আরাফার ময়দানে স্থায়ী ছায়া এনে দিয়েছে তাইই নয়, সেই থেকে খুলে গেছে আরব বিশ্বে বাংলাদেশের শ্রমবাজার। বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার যে ভীষণ সঙ্কটে ভুগছিলো তা কিছুটা হলেও দূর হয়েছিল। শুধু একটি ছোট্ট আইডিয়া, বাংলাদেশি জাতিনিমের গাছ, র্যাডিক্যালি কমে গেছে হজ করতে গিয়ে হিটস্ট্রোকের পরিমাণ।
সৌদিতে আজও তাই আরাফার নিম গাছকে ভালোবেসে তারা জিয়া ট্রি হিসেবে ডাকে। এভাবেই আরাফার ময়দানের নিম কূটনীতির সাথে মিশে আছে জিয়া ও বাংলাদেশের নাম।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Thank you Mr pasident zia
উত্তরমুছুনSabas
উত্তরমুছুন