ভয়ংকর দর্শন দেখাতে এবার সার্জারি করে নিজের নাক কেটে ফেললেন
পুরো বাংলাদেশে গুটিকয়েক লোকের কাছে জিম্মি
করোনা টেস্ট জা’লিয়াতি শাহাবুদ্দিন মেডিকেলের সহকারী পরিচালক আটক
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রাজধানীর সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
অভিযানে অসহযোগিতা করায় এবার প্রতিষ্ঠানটির সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবুল হাসনাত কে আটক করেছে র্যাব। আজ রোববার বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর গুলশান-২ এ অবস্থিত করোনা
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, ‘হাসপাতালগুলোতে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। আমরা হাসপাতালের বিভিন্ন সেবা প্রক্রিয়া, অসঙ্গতি ও কাগজপত্র চেক করছি।
উল্লেখ্য, র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে গত ৬ জুলাই করোনাভাইরাস পরীক্ষার জালিয়াতি ধরে র্যাব। এরপর রিজেন্টের দুটি হাসপাতালই সি’লগালা করে দেওয়া হয়। এছাড়া রিজেন্টের মালিক মোহাম্মদ সাহেদসহ ওই হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়।
শাহেদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা ছিল ডা. সাবরিনার
গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে শাহেদ ও সাবরিনা একে অপরকে জানাশুনার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন।
জানা গেছে, আগে থেকেই তারা একে অপরকে চিনতেন।
নিয়মিত পার্টিতে অংশ নিতেন।
সেই পার্টিতে চলতো ডিজে-মাদকতা। শাহেদ-সাবরিনা ছাড়াও সেই পার্টিতে সমাজের আরও অনেক চেনামুখ অংশ নিতেন।
এছাড়া তারা দিয়েছেন আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
করোনা সনদ জালিয়াতির আইডিয়া শাহেদের কাছ থেকে পেয়েছেন ডা. সাবরিনা।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে কাজ ভাগিয়ে নিতে ব্যবহার করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও সরকারদলীয় চিকিৎসক সংগঠনের একাধিক চিকিৎসককে। এছাড়া এক ব্যবসায়ীর হোটেল জোরপূর্বক দখল করে ব্যবসা করতেন শাহেদ। করোনাকালে দখল করা সেই হোটেলটি সরকারকে দিয়েছিলেন।
গোয়েন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উত্তরা ৬নং সেক্টরের পার্কের পাশের মিলিনিয়াম রেস্টুরেন্টটি রাজবাড়ীর এক বাসিন্দার |
তিনি দীর্ঘদিন ধরে জাপানে ছিলেন। জাপানি এক নারীকে বিয়েও করেছেন। তার স্ত্রী ও এক মেয়ে জাপানেই থাকেন। দেশে এসে তিনি ওই রেস্টুরেন্টটি করেন। পরে ২০১৯ সালে যৌথভাবে ব্যবসার জন্য রিজেন্টের শাহেদের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। চুক্তিতে বেশকিছু শর্তও জুড়ে দিয়েছিলেন। শর্তের মধ্যে ছিল শাহেদকে মাসে মাসে একটা ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।
কিন্তু কিছুদিনের মাথায় শাহেদ সেই হোটেলের যাবতীয় নিয়ন্ত্রণ নিজের কব্জায় নিয়ে নেন। হোটেলের মূল মালিককে হোটেলে ঢুকতে দিতেন না। হোটেলটির নিচে খাবারের রেস্টুরেন্ট ছিল। সেখানে জাপানি খাবারের আয়োজন করা হতো।
হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন ডা. সাবরিনা চৌধুরী জাপানি খাবার পছন্দ করতেন। তাই তিনি ওই রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে যেতেন। সেখানে শাহেদের সঙ্গে তার পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা। শাহেদের দখল করা হোটেলের ওপরে আবাসিক ব্যবস্থা ছিল। তাই প্রায়ই সেখানে আমোদ ফুর্তি ও মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হতো। বিত্তশালীদের আনাগোনা ছিল বেশ। সাবরিনা প্রায়ই এসব পার্টিতে অংশ নিতেন। এরপর থেকে তাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ হতো।
পুলিশ জানিয়েছে, শাহেদ কিছুদিন হোটেলটি তার কব্জায় রেখে পরিচালনা করেছেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে ওই হোটেলটি স্বাস্থ্য অধিদফতরকে দেন। শাহেদের মালিকানাধীন রিজেন্ট হাসপাতালটি ছিল করোনা ডেডিকেটেড। তাই সেখানকার চিকিৎসক-নার্সদের সেখানেই রাখা হতো।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, জোরপূর্বক দখল করে নেওয়ায় হোটেলের মূল মালিক উত্তরা পূর্ব থানায় শাহেদের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেছিলেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর জোনের সহকারী কমিশনার খন্দকার রেজাউল হাসান বলেন, শাহেদ হোটেলের মূল মালিককে বিতাড়িত করে দখল করে নেয়। করোনাকালে ওই হোটেলটি সরকারকে দিয়ে দেয়। হোটেলটিতে চিকিৎসক-নার্সরা থাকতেন। শুনেছি করোনার জন্য হোটেল বরাদ্দ দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে টাকা নিয়েছে। তবে আসলেই টাকা তুলেছে কিনা সেটি জানি না। বর্তমানে হোটেলটিতে খাবার ও আবাসিক কোনও ব্যবস্থাই চালু নাই বলে জানান তিনি। সূত্র: মানবজমিন
নেপথ্য থেকে ডা. সাবরিনা সহযোগিতা পেয়েছেন: ডিবি
শনিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে ডিএমপির গণমাধ্যম সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন। জেকেজি কোভিড-১৯ পরীক্ষা জালিয়াতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ডা. সাবরিনার পেছনে কারা রয়েছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে কমিশনার আবদুল বাতেন এসব কথা বলেন।
আবদুল বাতেন বলেন, ‘তদন্তের এ পর্যায়ে ডা. সাবরিনা আগে যে তথ্যগুলো দিয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আসলে ডা. সাবরিনা যে বিষয়টি মূলত ব্যবহার করেছে তা হলো ফেসভ্যালু ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন জায়গায় তার পরিচিত। স্বামী আরিফুলও তার সঙ্গে মূলত সে বিষয়টি ক্যাপিটালাইজড করে বিভিন্ন প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। যেমন প্রাথমিকভাবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় একটি প্রজেক্ট তৈরি করেছিল যেখানে স্যাম্পল সংগ্রহ ও কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা করার কথা ছিল তা তারা করেনি। আসলে বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তে তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পাওয়া গেলে তা আমরা আমলে নেব। এছাড়া অনিয়ম পাওয়া গেলে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা জানানো হবে।’
উল্লেখ্য, করোনা পরীক্ষায় প্রতারণার অভিযোগ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ওভাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী (সিইও) আরিফুল চৌধুরী ও তার স্ত্রী ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে। তাদের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাস টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
অপরাধ প্রমাণিত হলে তার মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। করোনা পরীক্ষার ভুয়া সনদসহ বহুমাত্রিক জালিয়াতিতে গ্রেপ্তার রিজেন্ট হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ও রিজেন্ট গ্রুপের...
করোনা পরীক্ষার ভুয়া সনদসহ বহুমাত্রিক জালিয়াতিতে গ্রেপ্তার রিজেন্ট হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম অপরাধ প্রমাণিত হলে তার মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
তিনি বলেন, সাহেদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে জাল মুদ্রার একটি মামলা করেছে র্যাব। এটি প্রমাণ করতে পারলে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন বা ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হতে পারে তার। এছাড়া অনকেগুলো প্রতারনার মামলা রয়েছে। সেখানে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় সর্বোচ্চ সাত বছরের সাজা হতে পারে সাহেদের।
খুরশিদ আলম খান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে রিজেন্ট হাসপাতালের যে চুক্তি হয়েছে তার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য দুদক টিম গঠন করেছে। চুক্তি অবৈধভাবে হয়ে থাকলে জড়িতদেরকে খোঁজে বের করা হবে। আর এই চুক্তির ফলে সরকারের কোন টাকা ক্ষতি হয়েছে কি না সেটা দেখা হবে। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি এবং আরও উর্ধ্বতনদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আর কোন কিছু উদ্ঘাটন হলে সবার বিরুদ্ধে অপরাধের ধরন অনুযায়ী মামলা হবে।
তিনি আরও বলেন, শাহেদের অবৈধ সম্পদের উৎস সম্পর্কে জানতে পৃথক অনুসন্ধান কমিটি গঠিত হয়েছে। উৎস যদি জ্ঞাত আয় বহির্ভুত হয় বা উৎসের সঙ্গে আয়ের মিল না থাকলে মামলা হবে। সেখানে কোন মানিলন্ডারিং এবং কাউকে ঘুষ দেয়ার প্রমাণ পেলে যাকে দিয়েছে তাকেসহ মামলা হবে।
সূত্র : আস