শেষ হুংকারেও লাভ হয়নি। তিনি এখানে কোন কিছুতে না পেরে শেষ পর্যন্ত ধর্ম টেনে সেই রাজাকারদের অনুপ্রেরনা দেওয়ার হীন চেষ্টা করেছিলেন।
পরাজয়ের প্রহর গুনতে থাকা নিয়াজীর শেষ হুংকার আজকের এইদিনে।
৩০ নভেম্বর, ১৯৭১
এইদিন নিয়াজী নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিহারী অধ্যুষিত এলাকায় চলমান ন্যায় ও অন্যায়ের যুদ্ধে অন্যায় করা রাজাকারদের অনুপ্রেরণা দিতে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ মূলক বক্তৃতা দেন তৎকালীন সময়ের বিহারী অধ্যুষিত সৈয়দপুরে।
সেই জনসভায় উপস্থিত অনেকের হাতেই হয়তো লেগেছিলো কিছুদিন আগে ট্রেনে পুড়িয়ে হত্যা করা শত শত নিরীহ মারওয়ারির রক্ত।
লে. জেনারেল নিয়াজী এদিন সৈয়দপুর সফরে যান। তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সৈয়দপুর বিমানবন্দরের পাশের মাঠে এক সভায় এখানে উপস্থিত বক্তারা ঘোষণা করেন, একজন পাকিস্তানি জীবিত থাকতেও পাকিস্তানের পবিত্র মাটি অপবিত্র হতে দেয়া হবে না। তারা সেনাবাহিনীর প্রতি স্থানীয় জনগনের পূর্ণ সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন। জনগন পাকিস্তানের পতাকা, ভারত খতম কর, আল জেহাদ,হিন্দু সাম্রাজ্যবাদ ধ্বংস কর, পাকিস্তান জিন্দাবাদ লেখা সম্বলিত অসংখ্য প্ল্যাকার্ড ফেস্টুন বহন করে এবং মুহুর্মুহু শ্লোগান দ্বারা এলাকা প্রকম্পিত করে রাখে। নিয়াজি তাদের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন এই অদম্য মনোবলে দিপ্ত জনতাকে পরাজিত করা যায় না।
শেষ হুংকারেও লাভ হয়নি। তিনি এখানে কোন কিছুতে না পেরে শেষ পর্যন্ত ধর্ম টেনে সেই রাজাকারদের অনুপ্রেরনা দেওয়ার হীন চেষ্টা করেছিলেন।
শেষ পর্যন্ত কোন ফায়দা হয়নি।
ন্যায়ের কাছে অন্যায়ের পরাজয় হয়েছেই তার ২ সপ্তাহ পরই।
ধিক্কার জানাই নিয়াজী ও তাদের দোসরদের যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য পবিত্র ধর্মকে ঢাল বানাতে চেয়েছিল সেইসময়। ধিক্কার জানাই নিয়াজী ও তার দোসরদের যারা নিরীহ মানুষ হত্যা করার জন্য শান্তির ধর্মের নাম নিয়ে মানুষকে উসকানি দিয়েছে। মুসলমানরা কখনো পরাজিত হয়না এই কথার মাধ্যমে নিয়াজী বাংলাদেশের পক্ষে থাকা সেই সময়ের ৮৫ ভাগ মুসলিমকে সরাসরি অমুসলিম ঘোষণা করে দেয়। নিয়াজীর পুরো যুদ্ধ জুড়েই মনোভাব ছিলো বাঙালিরা আর যাই হোক মুসলিম না 😠 এইরকম সংকীর্ণ মানুষ যারা কে মুসলিম কে মুসলিম না এইসব সার্টিফিকেট দেয় তাদের পরিনতি ইতিহাস দেখেছে।
সবাইকে বিজয়ের মাসের শুভেচ্ছা।
ছবি কৃতজ্ঞতা : সংগ্রামের নোটবুক
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Daron
উত্তরমুছুন