🔹🔵🔹জুম’আর আদব🔹🔵🔹
🔹🔵🔹জুম’আর আদব🔹🔵🔹
রহমান রহীম আল্লাহ্ তায়ালার নামে-
লেখকঃ অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম
1⃣ জুম’আর দিন গোসল করা। যাদের উপর জুম’আ ফরজ তাদের জন্য এ দিনে গোসল করাকে রাসুল (সাঃ) ওয়াজিব করেছেন(বুখারীঃ ৮৭৭, ৮৭৮, ৮৮০, ৮৯৭, ৮৯৮)। পরিচ্ছন্নতার অংশ হিসাবে সেদিন নখ ও চুল কাটা একটি ভাল কাজ।
2⃣ জুম’আর সালাতের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা। (বুখারীঃ ৮৮০)
3⃣ মিস্ওয়াক করা। (ইবনে মাজাহঃ ১০৯৮, বুখারীঃ৮৮৭, ইঃফাঃ৮৪৩)
4⃣ গায়ে তেল ব্যবহার করা। (বুখারীঃ৮৮৩)
5⃣ উত্তম পোশাক পরিধান করে জুম’আ আদায় করা। (ইবনে মাজাহঃ১০৯৭)
6⃣ মুসুল্লীদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা। (তিরমিযীঃ৫০৯, ইবনে মাজাহঃ১১৩৬)
7⃣ মনোযোগ সহ খুৎবা শোনা ও চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব। (বুখারীঃ ৯৩৪, মুসলিমঃ৮৫৭, আবু দাউদঃ১১১৩, আহমাদঃ১/২৩০)
8⃣ আগে ভাগে মসজিদে যাওয়া। (বুখারীঃ৮৮১, মুসলিমঃ৮৫০)
9⃣ পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন। (আবু দাউদঃ ৩৪৫)
🔟 জুম’আর দিন ফজরের নামাজে ১ম রাক’আতে সূরা সাজদা (সূরা নং-৩২) আর ২য় রাকা’আতে সূরা ইনসান(দাহর)(সূরা নং-৭৬) পড়া। (বুখারীঃ৮৯১, মুসলিমঃ৮৭৯)
1⃣1⃣ সূরা জুম’আ ও সূরা মুনাফিকুন দিয়ে জুম’আর সালাত আদায় করা। অথবা সূরা আলা ও সূরা গাশিয়া দিয়ে জুম’আ আদায় করা। (মুসলিমঃ৮৭৭, ৮৭৮)
1⃣2⃣ জুম’আর দিন ও জুম’আর রাতে বেশী বেশী দুরুদ পাঠ। (আবু দাউদঃ ১০৪৭)
1⃣3⃣ এ দিন বেশী বেশী দোয়া করা।। (বুখারীঃ ৯৩৫)
1⃣4⃣ মুসুল্লীদের ফাঁক করে মসজিদে সামনের দিকে এগিয়ে না যাওয়া। (বুখারীঃ৯১০, ৮৮৩)
1⃣5⃣ মুসুল্লীদের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনের কাতারে আগানোর চেষ্টা না করা। (আবু দাউদঃ ৩৪৩, ৩৪৭)
1⃣6⃣ কাউকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে বসার চেষ্টা না করা। (বুখারীঃ৯১১, মুসলিমঃ২১৭৭, ২১৭৮)
1⃣7⃣ খুৎবা চলাকালীন সময়ে মসজিদে প্রবেশ করলে তখনও দু’রাকা’আত ‘তাহিয়্যাতুল মাসজিদ’ সালাত আদায় করা ছাড়া না বসা। (বুখারীঃ ৯৩০)
1⃣8⃣ জুম’আর দিন জুম’আর পূর্বে মসজিদে জিকর বা কোন শিক্ষামুলক হালকা না করা। অর্থাৎ ভাগ ভাগ হয়ে, গোল গোল হয়ে না বসা, যদিও এটা কোন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান হোক না কেন। (আবু দাউদঃ ১০৮৯)
1⃣9⃣ কেউ কথা বললে ‘চুপ করুন’ এটুকুও না বলা। (নাসায়ীঃ ৭১৪, বুখারীঃ ৯৩৪)
2⃣0⃣ মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেয়াজ, রসুন না খাওয়া ও ধুমপান না করা। (বুখারীঃ ৮৫৩)
2⃣1⃣ ঘুমের ভাব বা তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে বসার জায়গা বদল করে বসা। (আবু দাউদঃ ১১১৯)
2⃣2⃣ ইমামের খুৎবা দেওয়া অবস্থায় দুই হাঁটু উঠিয়ে না বসা। (আবু দাউদঃ ১১১০, ইবনে মাজাহঃ ১১৩৪)
2⃣3⃣ খুৎবার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা। জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত হলেও ইমাম থেকে দূরে উপবেশনকারীরা বিলম্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (আবু দাউদঃ ১১০৮)
2⃣4⃣ জুম’আর দিন সূরা কাহফ পড়া। এতে পাঠকের জন্য আল্লাহ তায়ালা দুই জুম’আর মধ্যবর্তী সময়কে আলোকিত করে দেন। (হাকেমঃ ২/৩৬৮, বায়হাকীঃ ৩/২৪৯)
2⃣5⃣ জুম’আর আযান দেওয়া। অর্থাৎ ইমাম মিম্বরে বসার পর যে আযান দেওয়া হয় তা।(বুখারীঃ ৯১২)
2⃣6⃣ জুম’আর ফরজ নামাজ আদায়ের পর মসজিদে ৪ রাকা’আত সুন্নাত সালাত আদায় করা। (বুখারীঃ ১৮২, মুসলিমঃ ৮৮১, আবু দাউদঃ ১১৩০)
2⃣7⃣ উযর ছাড়া একই গ্রাম ও মহল্লায় একাধিক জুম’আ চালু না করা। আর উযর হল এলাকাটি খুব বড় হওয়া, বা প্রচুর জনবসতি থাকা, বা মসজিদ দূরে হওয়া, বা মসজিদে জায়গা না পাওয়া, বা কোন ফিতনা ফাসাদের ভয় থাকা। (মুগনি লিবনি কুদামাঃ ৩/২১২, ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহঃ ২৪/২০৮)
2⃣8⃣ ওজু ভেঙ্গে গেলে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া। অতঃপর আবার ওজু করে মসজিদে প্রবেশ করা। (আবু দাউদঃ ১১১৪)
2⃣9⃣ একান্ত উযর না থাকলে দুই পিলারে মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গায় সালাত আদায় না করা। (হাকেমঃ ১/১২৮)
3⃣0⃣ সালাতের জন্য কোন একটা জায়গাকে নির্দিষ্ট করে না রাখা, যেখানে যখন জায়গা পাওয়া যায় সেখানেই সালাত আদায় করা (আবু দাউদঃ৮৬২)। অর্থাৎ আগে থেকেই নামাজের বিছানা বিছিয়ে জায়গা দখল করে না রাখা বরং যে আগে আসবে সেই আগে বসবে।
3⃣1⃣ কোন নামাজীর সামনে দিয়ে না হাঁটা অর্থাৎ মুসুল্লী ও সুতরার মধ্যবর্তী জায়গা দিয়ে না হাঁটা। (বুখারীঃ৫১০)
3⃣2⃣ এতটুকু জোরে আওয়াজ করে কোন কিছু না পড়া, যাতে অন্যের সালাত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে। (আবু দাউদঃ ১৩৩২)
3⃣3⃣ খুৎবার সময় খতীবের কোন কথার সাড়া দেওয়া বা তার প্রশ্নের জবাব দানে শরীক হওয়া জায়েজ। (বুখারীঃ ১০২৯, মুসলিমঃ ৮৯৭)
3⃣4⃣ হানাফী আলেমগন বলেছেন যে, ভিড় প্রচণ্ড হলে সামনের মুসুল্লীর পিঠের উপর সিজদা দেওয়া জায়েজ (আহমাদঃ১/৩২)। দরকার হলে পায়ের উপর ও দিতে পারে (আর রাউদুল মুরবী)
3⃣5⃣ যেখানে জুম’আর ফরজ আদায় করেছে, উত্তম হল ঐ একই স্থানে সুন্নাত না পড়া। অথবা কোন কথা না বলে এখান থেকে গিয়ে পরবর্তী সুন্নাত সালাত আদায় করা। (মুসলিমঃ ৭১০, বুখারীঃ ৮৪৮)
📚সূত্রঃ বই-প্রশ্নোত্তরে জুমু’আ ও খুৎবা
নতুন বছর শুরু হোক নতুন কিছু দিয়ে
নতুন বছর শুরু হোক নতুন কিছু দিয়েঃ
আমার বয়স আল্লাহ্র রহমতে ৪০ চলছে। ২০০৩ সাল থেকে কম্পিউটারের টেবিল-চেয়ারের সাথে সম্পর্ক। নিয়মিত প্রায় ১৭বছর।
আপনাদের সবারই ধারণা আছে যে, যারা অফিসে বসে কাজ করেন কিংবা কম্পিউটার রিলেটেড কাজ করেন তাদের টেবিল-চেয়ারের সাথেই সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি। সেক্ষেত্রে আমারও কম্পিউটার আর চেয়ারের সাথে সম্পর্ক অনেক দীর্ঘ।
গত মার্চে বাসায় রিপেয়ার কাজ করানোর সময় নিজেই কিছু টাইলসের প্যাকেট এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরাচ্ছিলাম। সারারাত না ঘুমিয়ে সকালে কাজটি করছিলাম। পিঠে হাল্কা ব্যাথা ছিল কিন্তু পাত্তা দেইনি। শেষ প্যাকেটটি সরানোর আগে শরীর ও মন কোনটাই সায় দিচ্ছিল না। তবুও যেহেতু সর্বশেষ প্যাকেট ছিল তাই সেটি না সরালে কাজ অসমাপ্ত থেকে যাবে ভেবে প্যাকেটটি উঠাতে গেলেই; কোমড়ে কিছু একটা ঘটলো বলে আন্দাজ পেলাম।
আর নড়তে পারলাম না। সেখানেই শুয়ে পরলাম। তারপর ব্যাথা কাকে বলে তা জীবনে প্রথম বারের মত বুঝতে শিখলাম। আর কিছুক্ষণ পর পর পিঠের পেশীগুলো টান দিয়ে দিয়ে দম বন্ধ করে ফেলার অবস্থা করলো। তৃষ্ণা কি জিনিস সেটাও সেদিন বুঝলাম। কিছুক্ষণ পর পর কোকের বোতলের ছিপি দিয়ে একটু একটু পানি খেয়ে গলা ভিজাচ্ছিলাম। পানির মর্মও বুজলাম। ভাবলাম, এই এক ছিপি পানি না পেলে আমার কি হত! (তারপর থেকে আমি পানির অপচয় না করার চেষ্টা করি)
এরপর সামান্য না নড়িয়ে ৫/৬ জনে ধরে স্ট্রেচারে উঠিয়ে এ্যাম্বুলেন্সে করে আমাকে নিয়ে যাওয়া হল হাসপাতালে। এরপর এক্সরে রিপোর্ট আর ডাক্তারের বক্তব্যে উঠে আসলো চেয়ারে বসে থাকতে থাকতে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ডাক্তার জানালেন আমার এই সমস্যা অনেকদিন ধরেই।
ডাক্তারের বক্তব্য ঠিক ছিল কিন্তু আমার কাছে বিষয়টি ছিল পাত্তাহীন। এইসব সামান্য টুকটাক ব্যাথার কোন পাত্তা আছে নাকি আমাদের কাছে?
যাইহোক, তারপর টানা তিনদিন এক ইঞ্চি শরীর সরানোর মত সামর্থ্য আমার ছিল না। এপাশ-অপাশ করতেও অন্যের সহযোগীতা লাগতো। তিন সপ্তাহ লেগেছিল মোটামুটি ঠিক হতে। এই তিন সপ্তাহে আমার যা শিক্ষা হয়েছিল সেটা হচ্ছে, মানুষের হাত ভাঙলে গলায় ঝুলিয়ে রেখেও চলাফেরা করা যায়। পা ভাঙলেও ক্র্যাচে ভর দিয়ে চলা যায়, কিন্তু কোমর ভাঙলে শুয়ে থাকা ছাড়া কোন উপায় নেই। আর এরচেয়ে অসহায়ত্ব মানুষের কাছে আর অন্য কিছু নেই।
যাইহোক, গত ৯মাস ২৪ঘন্টাই আমার পিঠে চিনচিনে ব্যাথা করতো করতো। কোমর এদিক সেদিক নাড়ালে একটু আরাম লাগতো। আমি এই ব্যাথার নাম দিয়েছিলাম মিষ্টি মিষ্টি ব্যাথা। তবে মনের ভিতর একটা ভয় সবসময় কাজ করতো যে, যদি বেঁচে থাকি তাহলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই ব্যাথা আমাকে কোথায় নিয়ে যায় তা আল্লাহ্ই ভাল জানেন!
যাইহোক, যেহেতু আমি সবকিছু প্ল্যান মোতাবেক করি সেহেতু এবারের প্ল্যান ছিল নতুন বছরের প্রথমদিন থেকে আমি নিয়মিত সকালে দৌড়াবো। এমনিতেই আমি প্রতিদিন প্রচুর হাঁটাহাঁটি করি। কিন্তু কখনো দৌড়ানো হয়নি।
২৬ডিসেম্বর থেকে আমি দৌড়ের ট্রায়াল দেওয়া শুরু করি। সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কোমরের ব্যাথাটার কারণে দৌড়াদৌড়ি করা সম্ভব হবে কিনা সেটা দেখা। কিন্তু আমি আশ্চার্য হই যখন দেখি প্রায় ১কিলোমিটারেরও কম দৌড়ের পরই কোমরের চিনচিনে ব্যাথাটা অনেকটা হাল্কা হয়ে গেছে।
প্রথমদিন এরচেয়ে বেশী রিস্ক আমি নিতে চাইনি। তারপর আর কিছু পথ দৌড়াদৌড়ি করে বাসায় ফিরে আসি। বাসায় এসেও নিজেকে অনেকটা হালকা অনুভব করি।
পরদিন দৌড়ের পথ আরেকটু বাড়াই। যেমন, প্রথমদিন আমি আসাদগেট থেকে দৌড়ে সংসদ ভবনের সামনে পর্যন্ত যেতে পেরেছিলাম। এতেই আমার জিব্বা বের হয়ে যাওয়ার অবস্থা। তারপরের দিন আমি পুরো সংসদ ভবন অর্ধেক হেঁটে এবং অর্ধেক দৌড়ে পারি দেই। এরপরের দিনও একই দূরত্ব পারি দেই।
এরপরের দিন মানে গতকাল শারীরিক ও মানুষিক শক্তির কারণে আমি এক দৌড়েই সংসদ ভবনের পুরো এলাকা পারি দেওয়ার চেষ্টা করি। ৮০% ভাগ দৌড়েই পারি দেই, বাকীটা হেঁটে। ২০ ভাগও পারতাম কিন্তু গত চারদিনের দৌড়ের পর পায়ে যেখানে যেখানে ব্যাথা করতো সেটার বাহিরে নতুন এক জায়গায় ব্যাথা অনুভব করি। সেটার কারণে সম্ভব হয়নি। পুরো এলাকা পারি দিয়ে আরও কিছু এক্সারসাইজ করে বাসায় ফিরি।
মাত্র ৫দিনের দৌড়াদৌড়ির কারণে আমার কোমরের ব্যাথা এখন সাইকোলজিক্যাললি কিছুটা থাকলেও ফিজিক্যালি নাই বললেই চলে।
ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বেড়ে গেছে তাই সামান্য কাজ করে হাপিয়ে যাওয়ার সমস্যাটাও নাই। প্রথমদিন ১কিমি দৌড়াতেই যেই কষ্ট হয়েছে পাঁচদিনের মাথায় ৪কিমি দৌড়েও সেই কষ্ট হয়নি।
১৭/১৮ বছরের সিগারেটের বদভ্যাস তিনবছর আগে ছেড়ে দিয়েছি তাই একসময় শ্বাসকষ্টের যেই সমস্যা ছিল সেটাও নাই। এখন যেন বুক ভরে শ্বাস নিতে পারছি।
নতুন বছরের প্রথমদিনকে মাথায় রেখে নতুন কিছু করতে পারেন।
# যারা নামাজ পড়েন না তারা প্রথমদিন থেকে নিয়মিত নামায আদায় করার চেষ্টা করতে পারেন।
# যারা সিগারেট পান করেন তারা সিগারেট ছেড়ে দিতে পারেন।
# ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।
যা বুঝলাম হাঁটাহাঁটি থেকেও দৌড় বেশি উপকারী। যারা দীর্ঘ সময় চেয়ারে বসে থাকেন আর পিঠে কোন ব্যাথা আছে তাঁরা দৌড়াদৌড়ির অভ্যাস করতে পারেন। কিংবা আগে থাকতেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল। স্বাস্থ্য ভাল না থাকলে মনে সুখ আসে না, কাজে মন বসে না। কোন কিছুতে উৎসাহ পাওয়া যায় না। নতুন বছর শুরু হোক একটি ভাল অভ্যাস দিয়ে।
সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
বিল গেটস আমেরিকার নাগরিকত্ব ছেড়ে দিচ্ছে, শেষবারের মতো মাইক্রোসফটের অফিস ঘুরতে গিয়ে সে হু হু করে কেঁদে ফেলল।
বিল গেটস আমেরিকার নাগরিকত্ব ছেড়ে দিচ্ছে, শেষবারের মতো মাইক্রোসফটের অফিস ঘুরতে গিয়ে সে হু হু করে কেঁদে ফেলল। নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যেতে খারাপ লাগারই কথা। বিল গেটসেও খারাপ লাগছে। সে কান্না থামাতে পারছে না। চোখের পানিতে সার্জিকাল মাস্ক ভিজে মুখের সাথে লেগে গেছে।
কাঁদলে কি হবে, মনে মনে কিন্তু বিল গেটস খুবই খুশি। তার লাফাতে ইচ্ছে করছে। এতদিন পর সে তার স্বপ্নের চাকুরী খুঁজে পেয়েছে। এতগুলো বছর সে এমন একটা চাকুরীর চেষ্টাই করছিল। মাঝে মাইক্রোসফট গড়েছে, সেরা ধনী হয়েছে কিন্তু তলে তলে সে সবসময় এই ড্রিম জবের সন্ধান করছে।
ভাগ্য ভালো ফেসবুকে এক বন্ধুর কল্যাণে আগেভাগে চাকুরীর সার্কুলারটি তার নজরে এসেছিল। সঙ্গে সঙ্গে সিভি জমা দিয়ে সে প্রার্থনা বসে যায় -- হে ঈশ্বর, আমাকে এই চাকুরীটা দাও। তোমার কাছে আমি আর কিচ্ছু চাই না। আমার জীবন সার্থক হবে যদি এই চাকুরীটা আমি পাই। আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না প্রভু।
দোয়ার জোরেই কি না কে জানে বিল গেটসের কাছে ফিরতি মেইল আসল - তাকে শর্ট লিস্টেট করা হয়েছে। জুম ভিডিও কলে ইন্টার্ভিউ দিতে হবে।
ইন্টার্ভিউ এর কথা শুনে বিল গেটসের হাত পা কাপাকাপি শুরু হয়ে গেল। তার এতো বছরের প্রোগ্রামিং এর অভিজ্ঞতা, টেক লাইনে সে বস, তবুও তার টেনশন হচ্ছিল করছিল, যদি ইন্টার্ভিউ খারাপ হয়, যদি চাকুরী তার মিস হয়ে যায়!
এই চাকুরী না হলে বিল গেটসের জীবন বৃথা। দুনিয়ার প্রতিটা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, সফটওয়্যার ডেভলোপারদের কাছে এই চাকুরী সোনার হরিণ। আলাদীনের চেরাগ।
জুকারবার্গকে নিয়েই সমস্যা, সেও নাকি সিভি জমা দিয়েছে। কি যে হয় ভাবতে ভাবতে বিল গেটস ইন্টার্ভিউ দিল। প্রথমেই তাকে প্রশ্ন করলো চর্যাপদের রচয়িতা কে?
বিল গেটস জানত এমন প্রশ্নই আসবে, রবীন্দ্রনাথের বিয়ের তারিখ, সুফিয়া কামালের পছন্দের তরকারী এইসব প্রশ্নের উত্তর সে গত এক মাস রাত জেগে মুখস্ত করেছে। সে জানত তাকে এই প্রশ্নগুলোই করা হবে।
বিল উত্তর চটপট দিতে পারল, জুকার পারেনি। সে ভেবেছিল তাকে ওপিপি, এলগোরিদম, ডাটা স্ট্রাকচার এইসব নিয়ে প্রশ্ন করা হবে! শালা একটা পিউর বলদ।
বিল গেটসের চাকুরী হয়ে গেল।
আজ সে নতুন চাকুরী উদ্দেশ্যে আমেরিকা ছাড়ছে। বিলের বউ আকুল নয়নে কাঁদছে, ওগো, আমায় ভুলে যেও না। স্কাইপেতে কল দিও।
বিল গেটস হাসল। টাইম পাইলে দিমুনি। বলেই সে সুটকেস টানতে টানতে সোজা এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে হাঁটা ধরল।
কিছুক্ষন পর সে খেয়াল করল বিল গেটস দৌড়াচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভাব সে প্লেনে উঠতে চায়। চাকুরীতে জয়েন করতে চায়। এই চাকুরীর জন্য সে আমেরিকা ছাড়ছে, মাইক্রসফট ছাড়ছে, সংসার ছেড়েছে। এই চাকুরী তার সবে ধন নীলমনি।
এয়ারপোর্টে এসে বিল গেটস দেখল সাংবাদিকরা ভিড় করে আছে! সবাই কৌতূহলী হয়ে জানতে চাইছে -- ভাই, সব ছেড়ে ছুঁড়ে আপনি কই যান?
বিল গেটস দাঁত কেলাতে কেলাতে উত্তর দিল - বাংলাদেশে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট মেইন্টেনেন্সের দায়িত্ব পেয়েছি। 😀
---------
সম্পূরক খবরঃ
চারটি ওয়েবসাইট উন্নয়ন করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খরচ ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা!
পাঁচটি ডাটাবেইস তৈরিতে খরচ হয়েছে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা!
পাঁচটি কম্পিউটার সফটওয়্যার কেনায় খরচ ধরা হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা!
রচনা:রাফিউজ্জামান সিফাত
#এক_বাবার_আর্তনাদ
#এক_বাবার_আর্তনাদ
:
ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেনে উঠেই দেখি আমার উল্টো দিকে এক অসুস্থ্য বৃদ্ধ মাথা নীচু করে বসে আছেন। টিটিকে টিকিট দেখাতে না পেরে ভদ্রলোকের চোঁখে মুখে এতটাই অপরাধী ভাব যেনো এক, খুনের মামলার আসামী। টিটির অকথ্য ভাষার গালাগালি আমি tolarate করতে পারছিলাম না। একটু কর্কষ ভাষায় বলে ফেললামঃ "টিটি সাহেব ফাইনসহ কত? আমি দেবো।"
টিটি বললোঃ "আপনি দেবেন কেনো?
আমিঃ "তাতে আপনার কি? টাকা নিয়ে রশিদ কেটে দিন।"
রশিদটা বৃদ্ধের হাতে দিয়ে বললামঃ "বাবা,
রশিদটা রাখুন। পথে লাগতে পারে।"
কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধ বললোঃ "বাবা তুমি আমার
আমার মান সন্মান বাঁচালে।"
পরিস্থিতি স্বাভাবিকের জন্য মৃদু হেঁসে বললামঃ
"আপনি ঢাকায় কোথায় থাকেন?"
বৃদ্ধ বললোঃ"সে এক ইতিহাস। আপনার কি শোনার সময় হবে?"
আমিঃ "অবশ্যই, বলুন।"
বৃদ্ধ বললোঃ "আমি পাইকপাড়া বশিরউদ্দিন
স্কুলে B.Sc শিক্ষক ছিলাম।"
শিক্ষক শুনেই আমিঃ "স্যার, আমাকে তুমি করে বলবেন।"
স্যারঃ "বাইশ বছর পর স্যার শব্দটি শুনে
চোঁখের পানি ধরে রাখতে পারলাম নারে বাবা।"
টিস্যু এগিয়ে দিয়ে বললামঃ "স্যার, আপনার গল্পটা বলুন।"
স্যারঃ"তিন বছর বয়সের যমজ দুটো ছেলে আর মেয়েটি জন্মের সময় ওদের মায়ের মৃত্য হলো। সন্তানদের দিকে তাঁকিয়ে আর বিয়ে করলাম না। পাইকপাড়ায় মাথা গুঁজার ঠাঁই করি। সন্তানদেরকে
বাবা-মায়ের আদর দিয়ে বড় করলাম। বড় ছেলেটা বুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করলো। ছোট ছেলেটা ঢাকা মেডিক্যাল থেকে পাশ করলো।"
আমিঃ "মেয়েটিকে কি পড়ালেন?"
স্যারঃ "নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষজনের ধারনা মেয়েকে লেখা পড়া শিখিয়ে লাভ কি? পরের বাড়ী চলে যাবে। বরঞ্চ ছেলেকে সুশিক্ষিত করে তুললে বৃদ্ধ বয়সে একটু মাথা গুঁজার ঠাঁই হবে।
আমরা খুব স্বার্থপর জাতিরে বাবা। মেয়েটি ইন্টারমিডিয়াট করার সাথে সাথে বিয়ে দিয়ে দিলাম। ছাত্রী ভালো ছিলো।"
আমিঃ "তারপর?"
স্যারঃ "ছেলে দুটোকে বিয়ে করালাম। ছেলে দুটোর অনুরোধে
জমিটুকু বিক্রী করে বড় ছেলে পল্টনে আর ছোট ছেলে উত্তরায় ফ্ল্যাট কিনলো।"
আমিঃ "মেয়েকে কিছুই দেন নাই?"
কাঁদতে কাঁদতে স্যারঃ "সেটাই একটা বিরাট ভুল। ছেলের বৌদের সিদ্ধান্ত প্রতি মাসের ১ হতে ১৫ বড় ছেলের বাসায় আর ১৫-৩০ ছোট ছেলের বাসা সুটক্যাস নিয়ে ছুঁটাছুটি। মেয়ে অবশ্য বহুবার বলেছে আব্বা আপনি আমার কাছে চলে আসেন। কোন মুখ নিয়ে যাবো? কতদিন যাবৎ বুকের বাম দিকটা ব্যাথা করছে।"
আমিঃ "ডাক্তার দেখাননি?"
মৃদু হেঁসে স্যারঃ "ডাক্তার আবার, ছোট বৌমাকে বললাম আর কয়েটা দিন থাকি। সে সুটকেসটা বাহিরে ফেলে দিয়ে ইংরাজীতে বললো See you next month। বড় ছেলের বাসায় গিয়ে দেখি তালা মারা। দাড়োয়ান বললো ওরা দু সপ্তাহের জন্য মালেশিয়া গেছে। তারা জানে নির্ধারিত সময়ানুযায়ী আমার আসার কথা। পকেটে বিষ কেনার পয়সাও নেই। তাই ভাবলাম মেয়েই শেষ অবলম্বন।"
আমিঃ "মেয়ে কি করে?"
স্যারঃ "স্বামীটা খুব ভালো। ওকে শাহজালাল থেকে কম্পিউটার সায়েন্সএ পাড়িয়ে ওরা দুজনই প্রাইভেট ব্যাঙ্কে আছে।"
আমিঃ "আপনার মেয়ে যদি আপনাকে গ্রহণ না করে।"
স্যারঃ "মেয়ের পায়ে ধরে কান্না করলে। আমাকে তাঁড়িয়ে দেবে না।"
আমিঃ "এতো আত্মবিশ্বাস? মেয়ে কি জানে আপনি আসছেন।"
স্যারঃ "না, আমারতো মোবাইল নেই।"
আমিঃ "নম্বর দিন, কথা বলিয়া দিচ্ছি।"
স্যারঃ "না না বাবা, মোবাইলেতো মেয়ের পাঁ ধরে মাফ চাইতে পারবো না। পরে যদি নিষেধ করে দেয়।"
আমি বলছি আপনার মেয়ে কনোদিন বাবা-মাকে তাঁড়িয়ে দেবে না।
এক প্রকার জুড় করে ফোন ডায়রী দেখে স্পিকার অন করে ডায়াল করলাম
আমিঃ "হ্যালো, আপনি কি শাহানা?"
অপরপ্রান্তঃ "জ্বী, কে বলছেন?"
আমিঃ "একখানা সুখবর দেওয়ার জন্য ফোন করলাম।"
অপর প্রান্তঃ "কিসের সুখবর?"
আমিঃ "কিছুক্ষনের মধ্যে আপনার বাবা অর্থাৎ স্যার রেল স্ট্যাশনে পৌঁছাবেন।"
মেয়েটি চিৎকার দিয়ে বলে উঠলোঃ "এই শুনছো, আব্বা আসছেন। চলো আমরা স্ট্যাশনে যাই। কতদিন হয় আব্বাকে দেখি না। নিবিড় চল বাবা, তোর নানা ভাই আসছে, চল স্ট্যাশনে যাই।"
কিছুক্ষন পর স্ট্যাশনে ট্রেনটি ধীর গতিতে চলছিলো। জানালা দিয়ে তাঁকিয়ে দেখলাম। ঘরের সাধারণ কাপড় পড়া স্বামী/সন্তানসহ এক নারী অধীর আগ্রহে তাঁকিয়ে যাত্রী খুঁজছিলো। তাঁকানো দেখেই বুঝে গিয়ে স্যারকে বললামঃ "আপনার মেয়ে?"
স্যার বেশ নার্ভাস স্বরে বললোঃ "হো মা।"
আমি ইশারা দিতেই ওরা দরজার সামনে এসেই। স্বামী স্যারের ভাঙ্গা সুটকেসটা নিয়ে পাঁ ছুঁয়ে প্রণাম করলো। মেয়েটি বাবাকে জঁড়িয়ে ধরে কাঁদছিলো। স্যারের চোঁখ ভরা অশ্রু আমাকে বায় দিলো। ট্রেন ছুটতে লাগলো।মেয়ে,জামাই আর নাতি স্যারকে ধরে আস্তে আস্তে নিয়ে যাচ্ছে আর ট্রেনটির দিকে তাকাচ্ছিলো।
মেয়েটির কান্না দেখে মনে হলো মা তাঁর হাঁরিয়ে যাওয়া সন্তানকে বহুদিন পর ফিরে পেলো।
আকাশের দিকে তাঁকিয়ে ভাবছিলামঃ "আজ আমার বাবা বেঁচে থাকলে এই আনন্দের থেকে আমিও বঞ্চিত হতাম না।"
#লেখা গুলা ভালো লাগলে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দিয়ে পাশে থাকবেন 🙏🙏🙏
#সবাই_মা_বাবার_সেবা_করার_চেষ্টা_করবেন
স্যার ও ছাএের ভালবাসা এর একটি সত্য গল্প
একটা টিউশনি করবে?
: কোথায়?
: ষোলশহর।
: ছাত্র না ছাত্রী?
: ছাত্র।অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।
: ছাত্র পড়াব না।
: বিরাট পুলিশ অফিসারের ছেলে। বাবা ডিআইজি। ভালো বেতন দেবে। ভালো নাস্তা পাবে। আরে এতো বড়ো পুলিশের ঝাড়ুদার হতে পারাও ভাগ্যের। সুপারিশে চাকরিও হয়ে যেতে পারে। দুদিন পর আইজিপি হবেন।
টিউশনি শুধু টাকা নয়, টাকার চেয়ে বড়ো কিছু। এটি বিসিএস-প্রস্তুতির একটি মোক্ষম কৌশল, টাকা তো আছেই। রাজি হয়ে যাই রাজীবের প্রস্তাবে।
রাজীব বলল : বেতন মাসে আটশ টাকা।
সে সময় আটশ অনেক মোটা অঙ্কের টাকা। এত আকর্ষণীয় বেতনের টিউশনিটা রাজীব নিজে না-করে কেন যে আমাকে দিচ্ছে বুঝতে পারছিলাম না। কিছু সমস্যা তো আছেই!
: তুমি করছ না কেন?
: আমার সময় নেই।
ডিআইজি সাহেবের ছেলের নাম ওমর। ফর্সা, তবে ধবধবে নয় কিন্তু বেশ মায়াময়। বিশাল বাসা, বারান্দায় দামি ফুলের টব। চারিদিকে সমৃদ্ধির ছড়াছড়ি। রাজীব আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে চলে গেল।
ওমর সালাম দিয়ে বলল : স্যার, বিড়াল প্রথম রাতেই মেরে ফেলা উচিত। আমার কথা নয়, আমার ডিআইজি বাবার কথা, ঠিক না?
: ঠিক। কিন্তু বিড়াল কোথায়?
: আছে স্যার, আছে। অনেক বড়ো বিড়াল।
: আমি বিড়াল মারব কেন?
: একটা কথা বলব?
: বলো।
: আগের কথা আগে বলে দেওয়া ভালো। রাখলে আমারও লাভ আপনারও লাভ। নইলে দুজনেরই ক্ষতি। আমি চাই না আপনার ক্ষতি হোক।
: কী কথা বলে ফেল।
ওমর বলল : আপনার বেতনের চল্লিশ পার্সেন্ট আমাকে দিয়ে দিতে হবে। আপনার বেতন আটশ টাকা। চল্লিশ পার্সেন্টে হয় তিনশ বিশ টাকা। তবে আমাকে তিনশ টাকা দিলেই হবে, বিশ টাকা আপনার বখশিস। কী বলেন স্যার?
প্রথমে মাথাটা ঝিম ঝিম করে ওঠে। ইচ্ছে করছিল ঘুরিয়ে একটা চড় দিই। হাত এগিয়ে নিয়েই থামিয়ে ফেলি। মুহূর্তের মধ্যে স্বাভাবিক করে ফেলি নিজেকে। তারপর সহজ গলায় আদর মেখে বললাম : কম নেবে কেন বাবা?
: এমনি।
: না, আমি পুরো তিনশ বিশ টাকাই দেব।
: তাহলে স্যার ভাংতি দিতে হবে। আমি একশ টাকার নিচে ভাংতি রাখি না।
: তাই হবে।
বিচিত্র অভিজ্ঞতার আশায় আমার মনটা ফুরফুরে হয়ে ওঠে। মজার হবে টিউশনিটা, দেখি কতদূর যেতে পারে ওমর। মাস শেষ হওয়ার কয়েক দিন আগে আমি একটি খামে করে তিনশ বিশ টাকা ওমরের হাতে তুলে দিই।
ওমর যথাসময়ে টাকা পেয়ে খুশি।
হাসি দিয়ে বলল : স্যার, আপনি খুব ভালো মানুষ।
আমি বললাম : তুমি আমার কাছ থেকে শিখছ আর আমি শিখছি তোমার কাছ থেকে। পরস্পরের বেতন যথাসময়ে দিয়ে দেওয়া উচিত। তাহলে শ্রমের মর্যাদা মাসের প্রথমদিকে হাসার সুযোগ পায়।
ওমর বলল : থ্যাংক ইউ স্যার। সব মানুষ যদি আপনার মতো হতো!
চার মাস পর ডিআইজি সাহেব পড়ার রুমে এলেন। এতদিন তাকে একবারও দেখিনি, বেশ গম্ভীর চেহারা, দেখলে সমীহ আসে। চোখের চশমায়, দামটা পুলিশের পোশাকের মতো ঝিলিক মারছে, হাতের ঘড়িতে আরও বেশি।তিনি ওমরের একটি খাতা হাতে তুলে নিয়ে দেখতে দেখতে বললেন : মাস্টার সাহেব, আপনার বেতন চারশ টাকা বাড়িয়ে দিলাম।
: কেন স্যার?
আমরা পুলিশের লোক। গুণীর কদর করতে জানি। এ পর্যন্ত কোনো শিক্ষক আমার ছেলের কাছে দুই মাসের বেশি টিকেনি। প্রত্যেকে আমার ছেলেটাকে বকা দিয়েছে, মেরেছে, অশ্রাব্য কথা বলেছে। ছেলে কেবল আপনারই প্রশংসা করেছে। আপনি নাকি অনেক ভালো পড়ান।
তিনি একটা কলম ও একটা ডায়েরি আমার হাতে দিয়ে বলেন : এগুলোর আপনার উপহার।
: থ্যাংক ইউ স্যার।
কলমটা ছিল সম্ভবত পার্কার। তখন তো আর মোবাইল ছিল না, ওই সময় পার্কার ছিল আমাদের কাছে স্মার্ট ফোনের মতো লোভনীয়।
ডিআইজি সাহেবে চলে যেতে ওমর বলল : স্যার।
তুমি কী কলম আর ডায়েরি হতেও ভাগ চাইছ?
ওমর হেসে বলল : না স্যার। বস্তুতে আমার আগ্রহ নেই। টাকা হলে সব বস্তু পাওয়া যায়।
: তবে?
: আমার পাওনা এখন চারশ আশি টাকা। আমি আশি টাকা নেব না, একশ টাকা নেব। তার মানে পাঁচশ টাকা।
: ঠিক আছে। খুব বেশি না হলে আমার বেশি দিতে কষ্ট লাগে না। তুমি আমার শিক্ষক, তোমাকে বিশ টাকা বেশি দিতে না-পারলে আমার জ্ঞান অর্জন হবে কীভাবে?
ওমরের হাসিটা আরও বিস্তৃত হলো। কমিশন নিলেও পড়াপাড়ি বেশ ভালোই হচ্ছে।আরও তিনি মাস কেটে যায়। এরমধ্যে, আমার বেতন আরও দুইশ টাকা বেড়ে গেছে। ওমরকে এখন টাকা দিতে কষ্ট হচ্ছে না। জীবনে প্রথম শেখলাম-- দেওয়া- নেওয়ার মাহাত্ম্য। ওমর একটা জীবন্ত স্মার্ট ফোন।
সেদিন বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছিল। ওমরকে অন্যদিনের চেয়ে বেশ আনমনা মনে হচ্ছে।
বললাম : কী হয়েছে?
: স্যার, আমাকে একটা কাজ করে দিতে হবে।
: কী কাজ?
: একটা চিঠি লিখে দিতে হবে।
: চিঠি তো লিখেই দিই।
: স্কুলের চিঠি নয়।
: কোন চিঠি?
: আমার প্রেমিকা, সরি স্যার বান্ধবীকে দেওয়ার জন্য।
: কী লিখব?
: আপনার মতো করে আপনি লিখে দেবেন। আমি তাকে ভালোবাসি। তাকে না- দেখলে বুকটা কেমন মোচড় খায়। কিছু ভালো লাগে না। সে খুব সুন্দর।
চিঠি লিখে দিলাম গভীর ভাষায়, প্রেমের মমতায়।
রাস্তায় এসে ইচ্ছেমতো হাসলাম। ওমর আর রেহাই পাচ্ছে না। বাসে উঠতে গিয়ে দেখি, ফারহাদ। আমার ক্লাসম্যাট এমদাদের ছোট ভাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে। সাবজেক্টটা ঠিক মনে পড়ছে না।
আমাকে সালাম দিয়ে বলল : ভাইজান, আমাকে একটা লজিং দেবেন?
: আমি তো লজিং নিয়ে থাকি না। এমদাদের কাছে অনেকগুলো লজিং আছে। আমাকেও বলেছে, কাউকে পেলে খবর দেওয়ার জন্য। তাকে গিয়ে বলো।
: বলেছিলাম, দেবে না।
: কেন?
: সে আমাকে লজিং দেবে না।
ফরহাদকে বিদায় করে নিজের রুমে চলে যাই। শুক্রবার বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে যাবার কথা কিন্তু যাওয়া হলো না। ওমর খবর পাঠিয়েছে, শুক্রবার তাদের বাড়ি যেতে হবে। তার শুভ জন্মদিন।
কী নিয়ে যাই?
অনেক চিন্তাভাবনা করে ওমরের বান্ধবী নিহা নিশিতাকে দেওয়ার জন্য একটা চিঠি লিখি। ওমর চিঠি পড়ে এত খুশি হয় যে, সে মাসের পুরো কমিশনটাই আমাকে ফেরত দিয়ে দেয়।
অবাক হয়ে বললাম : ফেরত দিলে যে?
ওমর আমাকে আরও অবাক করে দিয়ে বলল : আপনার লেখার সম্মানি। স্যার, চিঠিটা একদম ফাটাফাটি হয়েছে।
লেখার সম্মানি! আমি চমকে উঠি। লেখার প্রথম আয়, এ তো বিশাল কারবার! তাহলে কেন এতদিন লিখিনি! ওমরের উৎসাহে উৎসাহিত হয়ে পত্রিকায় লেখা শুরু করি। তারপর আস্তে আস্তে লেখা আমার নেশা হয়ে যায়।
যতই গল্প করি, যতই প্রেমপত্র লিখে দিই না কেন,
লেখাপড়ায় ওমরকে এমন কৌশলে ব্যস্ত রাখি যে, সে ধীরে ধীরে বইয়ে ঝুঁকে পড়ে, তার সব আনন্দ অন্যান্য জায়গা হতে বইয়ের পাতায় এসে ভীড় করতে শুরু করে। আগে তার বাবাকে বলত চকলেটের কথা, এখন বলে বইয়ের কথা। আগে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীতে তার আলমিরা ছিল ভর্তি; এখন সেখানে ঠাঁই পেয়েছে এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিট্রানিকা, পৃথিবীর বিখ্যাত লেখকদের নানা বই। আমার কাছ থেকে নাম নিয়ে যায় বইয়ের, নিয়ে আসে তার বাবাকে দিয়ে। দেশে না পেলে বিদেশ থেকে। কত দামি দামি বই, আমার কাছে মনে হতো : সামর্থ্যবানদের ইচ্ছাই প্রাপ্তি।
আরও তিন মাস পর আমার বেতন হয় পনেরশ টাকা। বিশাল অঙ্ক, অনেক সরকারি অফিসারও তখন এত বেতন পেতেন না। এখন ওমরের পাওনা গিয়ে দাঁড়ায় ছয়শ টাকায়।
মাসের শেষদিন ওমরকে ছয়শ টাকা দিতে যাই। লজ্জায় চোখটা নিচু করে ফেলে সে। আগের মতো দ্রুত হাত এগিয়ে দিচ্ছে না : সরি স্যার।
: নাও তোমার টাকা।
: লাগবে না স্যার।
: আরে নাও। আমি অত টাকা দিয়ে কী করব?
: স্যার, একমাসে যতটাকা আপনাকে দিই, আমি একদিনে তার চেয়ে অনেক বেশি দামের চকলেট খাই। একটা চকলেটের দাম একশটাকা, দিনে বিশটা চকলেট আমি একাই খাই। বাবার হুকুমে সুইজারল্যান্ড থেকে আসে।
তারপরও আমি বললাম : নাও।
: লাগবে না স্যার।
: আগে লাগত কেন?
তাস খেলতাম, নিহা নিশাতকে দিতাম। এখন তাস খেলা সময় নষ্ট মনে হয়, বই পড়ি। নিহা নিশাতকে যতক্ষণ দিই ততক্ষণ খুশী থাকে, শুধু চায় আর চায়। বই শুধু দিয়ে যাই, কিছুই চায় না।
আমি সাফল্যের হাসি নিয়ে বের হয়ে আসি।
বার্ষিক পরীক্ষার পর ওমরদের বাসায় যাওয়া বন্ধ হয়ে যাই। ডিআইজি সাহেব বলেছেন এক মাস পর থেকে আবার পড়ানো শুরু করতে। আমার মতো ভালো মাস্টারকে তিনি ছাড়বেন না। বদলি হলে সেখানে নিয়ে যাবেন।
পনের কী বিশদিন পর দেখি আমার মেস-বাসার সামনে একটা বিরাট গাড়ি দাঁড়িয়ে। দেখলে বোঝা যায় বড়ো পুলিশ অফিসারের গাড়ি।
হন্তদন্ত হয়ে বের হয়ে আসি।
ওমর আর তার বাবা গাড়ি হতে নামছেন।
ডিআইজি সাহেব বললেন : মাস্টার সাহেব, আমার ছেলে বার্ষিক পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছে। এর আগে কোনোদিন পঞ্চাশেও ছিল না। এক বছরের মধ্যে আপনি আমার ছেলেটাকে পরিবর্তন করে দিয়েছেন। এটি আমার কাছে অলৌকিক মনে হয়।
প্রশংসা আমার মনে অদ্ভুত এক আনন্দ বইয়ে দিল।
ডিআইজি সাহেব আমার হাতে একটা ঘড়ি তুলে দিয়ে বললেন : আমার ছোট ভাই আমার জন্য সুইজারল্যান্ড থেকে এনেছেন। আপনাকে দিলাম। এটি কোনো বিনিময় নয়, উপহার; ভালোবাসার নিদর্শন।
আনন্দে আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। এমনভাবে কেউ আমাকে কোনোদিন এমন উপহার দেননি।
ওমর আমার পায়ে ধরে সালাম করে বলল : স্যার, আপনি আমাকে বদলে দিয়েছেনে।
ডিআইজি সাহেব ওমরের এমন আচরণে আবেগপ্রবণ হয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরেন : মাস্টার সাহেব, ওমর আমাকেও পাত্তা দিত না। এ পিচ্চি ছেলের কাছে আমি ছিলাম কেবল টাকার-ঝুড়ি। আপনি তাকে জানোয়ার থেকে মানুষ করে দিয়েছেন। বলুন কীভাবে সম্ভব হয়েছে?
বললাম : ভালোবাসা, শুধুই ভালোবাসা।
: আপনি আমার কাছ থেকে কী চান?
: ভালোবাসা, শুধুই ভালোবাসা
ঘটনার সময়কাল : জানুয়ারি ১৯৮৬।...
[ #লেখকঃ বিশিষ্ট লেখক ড. আমিন স্যারের "ভালবাসা, শুধুই ভালবাসা'' গ্রন্থে তার জীবনের সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা একটি গল্প। ]
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা মনে করে তারাই দেশের সেরা পাবলিক
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা মনে করে তারাই দেশের সেরা পাবলিক।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা মনে করে তারাই দেশের সেরা পাবলিক।
আবার এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা মনে করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বুঝি গরু-গাধাই!!!
এসব দেখে আমি মোটেও আশ্চর্যিত হইনা আর!!
.
কিন্তু সবচাইতে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, এর কোনোটাতেই পা না রাখা কিছু পাবলিক অর্থ্যাৎ ভার্সিটির পড়ালেখা বা সার্টিফিকেট সম্পর্কে কোনোরকমেরই
ধারণা না থাকা পাবলিকরা এই তিন ভার্সিটির পাবলিকদেরই মনে করে জাতীয় গরু-গাধা….
তাদের মতে এগুলা সব বালপাকনা পোলাপান!!!
.
বাংলাদেশের প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়ে কি পরিমাণ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী আছে তা এরা কল্পনাও করতে পারেনা!!!
.
পৃথিবীর সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বাংলাদেশী কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই তার মানে তো এই নয় এইসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো মেধাবী সূর্যসন্তানরা নেই!!
আপনি নিজেই তা আপনার চারপাশে পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পাচ্ছেন, ভাই!
তবুও এত হিপোক্রেসী কি জন্যে বলেন তো???
.
আপনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার সাথে
বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার তুলনা করলে কেবল বোকামীই করবেন।
বাংলাদেশের মত একটা রাজনৈতিক অস্থিতিশীল ও সকল ক্ষেত্রেই দুর্নীতিগ্রস্ত
দেশের শিক্ষাব্যবস্থাও ত্রুটিপূর্ণ এটা না বুঝলে চলে?
এখানকার বিশ্বদ্যিালয়গুলো মুলতঃ সেশন জট, নোংরা ছাত্ররাজনীতি, মেধাবীদের সুযোগ-সুবিধার অভাব, বাস্তব জীবনমুখী শিক্ষার অভাবে পৃথিবীর অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তুলনায় পিছিয়ে আছে।
.
আপনি ডিগ্রী কলেজে পড়েই যদি নিজেকে এত জ্ঞানী ও মেধাবী ভাবতে পারেন
তাহলে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পড়াশুনা করা ছাত্র-ছাত্রীরা কেনো নিজেদের
উচ্চশিক্ষিত বা মেধাবী ভাবতে পারবে না, বলুন???
.
বাংলাদেশী কোনো বিশ্ববিদ্যালয় কেনো পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় নেই সেই চিন্তায় নিজের ঘুম হারাম না করে নিজে এমন কিছু করে দেখান যেটা শুধু বাংলাদেশেই নয় পুরো পৃথিবীতে রোল মডেল হয়ে থাকবে…..
.
কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী!!! দয়া করে অযথাই কেউ এটা নিয়ে আমার সাথে বা অন্য কারো সাথেই কখনো তর্ক করবেন না।
যে যেই বিশ্ববিদ্যালয়েই লেখাপড়া করুক না কেনো সবার আগে মানুষের মত মানুষ হওয়া প্রয়োজন সবারই…….
গাদাগাদা, মোটা মোটা বইগুলো মুখস্ত করে আপনি হয়তো উচ্চশিক্ষিত এবং
বড় কোনো পদের চাকুরে হতে পারবেন….
.
কিন্তু, মানুষের মত মানুষ এবং একজন বড় মাপের মানুষ ও বড় মনের মানুষ হতে হলে অবশ্যই অবশ্যই আপনার মধ্যে মানবিকতা, উদারতা, নিরঅহংকারীতা , মানুষকে সম্মান করতে জানা, মানুষের সাথে আন্তরিক ব্যবহার করা, কারও অনুভূতিকে অসম্মান না করা, নিজের চেয়ে কম যোগ্যতার মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য না করা এসব মানবিক গুণাবলীও থাকতে হবে……
.
আর আপনি এগুলো শিখবেন আপনার পরিবার, পরিবেশ ও সমাজ থেকে…
কিছু জিনিস থাকে যেগুলো পরিবার থেকে না শিখলেও মানুষ নিজের বিবেকের দ্বারা করে
.
আপনি একজন উচ্চ ডিগ্রীধারী উচ্চশিক্ষিত এবং অনেক বড় পেশার মানুষ হয়েও
আপনার মধ্যে যদি এসব গুণাবলীর অভাব থাকে তাহলে ধরে নেবেন, আপনার পারিবারিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক-নৈতিক-ধর্মীয় শিক্ষা এগুলোর অভাব আছে….
সেইসাথে এটাও ধরে নেবেন আপনি ভাই উচ্চশিক্ষিত হতে পারেন, কিন্তু মানুষ হিসেবে আপনি খুবই অহংকারী, অযোগ্য, অসভ্য, খুব স্বার্থপর এবং খুবই নিচু মনের মানুষ!!!!!
.
আর আপনি যদি সত্যিই এমন খবিশ টাইপের মানুষ হয়েই থাকেন তবে আমি আশা করবো পৃথিবীর এই ভয়ংকরতম সংকটময় দিনে আপনি নিজেকে সংশোধন করবেন….
আদারওয়াইজ গো টু দ্যা হেল!!!
.
ছেলে, মেয়ে উভয়কেই বলা...
একজন উচ্চশিক্ষিত ও বড় পেশার পরিচিত মানুষের কাছ থেকে এমন ব্যবহার পেয়ে খুবই মনোক্ষুণ্ণ হলাম...... :)
প্লিজ জানুয়ারি থেকেই স্কুল খুলে দিন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিন। বাচ্চাগুলো মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেল!
জানুয়ারি থেকেই স্কুল খুলে দেওয়ার বিষয়ে আমি একটি স্ট্যাটাস দিয়েছি। বন্ধুরা অনেকেই আমার সাথে একমত হতে পারেন নি। তাদের উদ্বিগ্নতার জবাবে আমি একটি মন্তব্য করেছি। মন্তব্যটি দীর্ঘ হওয়ায় এখানে পোস্ট করা হলো।
“আমি পরিবারসহ কোভিড ১৯ আক্রান্ত হয়েছিলাম। প্রথমে আমি আক্রান্ত হই। আমার জ্বর ঠান্ডা বা খারাপ লাগা যে করোনার কারণে, সেটি আমি বুঝতে পারি জ্বর শুরুর পাঁচ দিন পরে, যখন জ্বর আর নেই, কিন্তু খারাপ লাগা ও দুর্বলতা আছে। এটি বোঝার আগেই পরিবারের অন্যরা আক্রান্ত হয়ে গেছে। তারমানে, বাহক ছিলাম আামি। আমার থেকে আক্রান্ত আমার স্ত্রী এবং দুই বাচ্চা। এখন আপনি বলেন, বাচ্চাদের ঘরে রেখে কি তাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে বাাঁচাতে পেরেছি?
(এখানে আরো বলে রাখি, আমি এবং আমার স্ত্রী করোনার জন্য যে অসুবিধাগুলো ভোগ করেছি, বাচ্চারা কিন্তু তা করে নি। তাদের সবকিছুই ছিল স্বাভাবিক, উপসর্গুলোও দ্রুত নিরাময় হয়ে গেছে- বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটি একটি লক্ষণীয় দিক।)
সেদিন মিরপুর ১১ নম্বরে দুইটি বুফে রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম খোঁজ নিতে। গিয়ে দেখি প্রচণ্ড ভীড়। (এটিই এখন সব রেস্টুরেন্টে স্বাভাবিক চিত্র)। নারী-পুরুষের সাথে অসংখ্য শিশু। বুঝতেই পারছেন, সেখানে সাবধানতা দূরের কথা, কারো মুখে মাস্ক পর্যন্ত নেই। নেই, ন্যুনতম দূরত্ব। যেই ভীড় দেখেছি, কাঙালি ভোজেও এরকম ভীড় হয় না।
যদি শিশুদের, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্যই স্কুল বন্ধ থাকবে, তাহলে শুধু স্কুল কেন? সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট, গণপরিবহনে ঠাসাঠাসি যাত্রী বহন করা, হাট-বাজার - এই সব কিছুই বন্ধ করতে হবে, কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এসবের শৃঙ্খলা। কোথাও তো তা নেই। সব ক্ষেত্রেই তো নিয়ম উধাও বা শিথিল। চারদিকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণহীনভাবে খুলে দিয়ে, শুধু স্কুল বন্ধের ফলাফলটা কী - বলেন আমাকে?
স্কুল বন্ধের ভালো দিক যদি করোনার বিস্তৃতি রোধ করা হয়, তাহলে বলব, সেটি করতে অনেক আগেই বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়েছে। উল্টো স্কুল কলেজ বন্ধ রেখে এদেশের লক্ষ লক্ষ শিশুর শিক্ষা জীবন শেষ করে দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ শুধু শহরের মায়েদের তুলতুলে ননী খাওয়া বাচ্চাদের না। সবাই টাকাওয়ালা ধনী আভিভাবকের বাচ্চা না। শহরের অনেক বাচ্চাই অনলাইনের সুযোগ পেলেও গ্রামের দরিদ্র শ্রেণীর শিশুরা তা ভাবতেই পারে নি। গ্রামের শতকরা আশি ভাগ বাচ্চা গত মার্চের পরে বই হাতেও ধরে নি। স্কুল খোলা নেই মানেই গ্রামের বাচ্চাদের পড়াশোনা নেই। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর যে ক্ষতিটা হয়ে গেল, তার ভার কীভাবে বইবে ভবিষ্যৎ? স্কুল বন্ধ না রেখে কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সীমিতভাবে তা চালানো যায়, সেই ব্যবস্থা করা যেত। প্রয়োজনে একেক শ্রেণীর সপ্তাহে দুই দিন করে ক্লাস হতো, পরীক্ষাগুলো হতো, তবুও চর্চাটা নষ্ট হতো না।
আমিও চাইব না বাচ্চারা ক্ষতিগ্রস্থ হোক, কারো মায়ের বুক খালি হোক। কিন্তু সাবধানতা অবলম্বন করেই স্কুল-ক্লাস চালু রাখা যেত। পরীক্ষা নেওয়া যেত। আমাদের সরকার যেহেতু প্রকৃতপক্ষে করোনা মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়েছে। করোনা-বাণিজ্য, লুটপাট ঠেকাতে পারে নি। প্রকৃতপক্ষে জনগণের জন্য করোনার চিকিৎসা সুলভ করতে পারে নি, তখন উচিৎ ছিল, শিক্ষার পরিবেশটা কীভাবে ঠিক রাখা যায় সেটি চিন্তা করা।
আমাদের একটি কার্যকর সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। নিশ্চয়ই অনিশ্চিত সময়ের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা কোনও সুফল বয়ে আনবে না।
একটি মানব সন্তান, তার মানুষিক দিয়ে সবচেয়ে স্পর্শকাতর মুহুর্তটি পার করে
বয়:সন্ধি কালে/টীনএজ বয়সে । হাইস্কুলের ছাত্র/ছাত্রী ।
আমাদের দেশে, নিজ ঘর থেকে- সংসদ ভবন পর্যন্ত, কোথাও কেও ভাবে না । স্টাডিও নাই ।
এই নতুন প্রজন্মকে কোরোনা আতঙ্কে- আতঙ্কিত ভীতু না বানিয়ে,
মানে- ঘরে আটকে না রেখে,
প্রয়োজনীয় সতর্কতার নির্দেশ আর ডিসিপ্লিনের সাথে
স্কুল খুলে দিক ।
কোরোনা যোদ্ধা হিসেবে আগামি দিনে- সাহসী প্রজন্মের কাঁধে থাকবে দেশ ।
ভীতু ভেরার কাঁধে না ।
মানবসন্তান দুর্যোগ ভয় না পেয়ে ভয়কে জয় করেছে বলেই এতদূর এসেছে। ভয়কে জয় না করতে পারলে, দুর্যোগে গর্তে লুকালে মানব ইতিহাস এমন হতো না। অনেক আগেই মানব প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটত।
দুর্যোগ ভয় পাওয়া মানবজাতির ধর্ম না। অথচ করোনার প্রতিরোধ ব্যবস্থার নামে আমরা সেই ভয়ের বীজটাই শিশুদের মনে গেঁথে দিলাম। বিপদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা শেখানোর একটি চমৎকার সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছি।
ধার করা গল্প তবে শিক্ষনীয় অনেক
.
#একজন ডাক্তার বাংলাদেশে প্রাইভেট হাসপাতালের চাকরি ছেড়ে, কানাডায় গিয়ে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে সেলসম্যান হিসাবে যোগ দিলেন।
স্টোরের মালিক জিজ্ঞেস করলেন- তোমার কোনো অভিজ্ঞতা আছে ?
তিনি জানালেন- আমি দেশে একজন ডাক্তার হিসেবে পরিচিত ছিলাম।
চাকরির প্রথম দিনে তিনি খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করলেন।
সন্ধ্যে ছ’টায় ছুটির সময় বস তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন----- আজ তুমি ক’জন ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করেছো ?
তিনি উত্তর দিলেন----- আমি আজ সারাদিনে একজন ক্রেতার কাছে বিক্রি করেছি।
মালিক আশ্চর্য হয়ে বললেন- মাত্র একজন? এখানকার প্রত্যেক সেলসম্যান দিনে ২০ থেকে ৩০ জন ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করে।
তা তুমি কত ডলারের পণ্য বিক্রি করেছো ?
তিনি বললেন---- ৯৮,৭৬,৫৪৩ ডলার ।
বস অবাক হয়ে বললেন-
"কী! এটা তুমি কিভাবে করলে" ?
তিনি বললেন- ওই ক্রেতার কাছে প্রথমে মাছ ধরার একটি ছোট্ট বড়শি বিক্রি করেছি । তারপর একটি বড় ও একটি মাঝারি বড়শি বিক্রি করলাম। এরপর একটি বড় ফিসিং রড আর কয়েকটি ফিসিং গিয়ার বিক্রি করলাম। তারপর আমি তাকে প্রশ্ন করলাম- আপনি কোথায় মাছ ধরবেন?
তিনি বললেন----- তিনি সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় মাছ ধরবেন।
তখন আমি তাকে বললাম----- তাহলে তো আপনার একটি নৌকার প্রয়োজন হবে। আমি তাকে নিচতলায় নৌকার ডিপার্টমেন্টে নিয়ে গেলাম। ভদ্রলোক সেখান থেকে কুড়ি ফুট দীর্ঘ দুই ইঞ্জিন-বিশিষ্ট নৌকা কিনলেন।
এরপর আমি তাকে বললাম---- এই নৌকাটি তো আপনার ভক্সওয়াগন গাড়িতে ধরবে না, একটা বড় গাড়ির প্রয়োজন ! আমি ভদ্রলোককে অটোমোবাইল ডিপার্টমেন্টে নিয়ে গেলাম। আমার পরামর্শে তিনি নৌকাটি বহন করার উপযোগী একটি গাড়ি বুকিং দিলেন। তারপর আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম---- মাছ ধরার সময় কোথায় থাকবেন?
তিনি জানালেন- এ বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা করেননি।
আমি তাকে ক্যাম্পিং ডিপার্টমেন্টে নিয়ে গেলাম। তিনি আমার পরামর্শ মতো ছ’জন লোক ঘুমানোর উপযুক্ত একটি ক্যাম্প তাঁবু কিনলেন।
সবশেষে আমি তাঁকে বোঝালাম---- আপনি যখন এতোকিছু কিনেছেন, এখন কিছু খাবার ও পানীয় কিনে নেওয়া উচিত।
ভদ্রলোক দু’শ’ ডলার দিয়ে কিছু মুদি-দ্রব্য ও দু’ কেইস বিয়ার কিনলেন !!
এবারে স্টোরের মালিক একটু দমে গিয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে বলে উঠলেন-----
"যে লোকটা একটি বড়শি কিনতে এসেছিলো, তুমি তাকে দিয়ে এতোকিছু কেনালে" !!
ডাক্তার ভদ্রলোক বললেন----
" না স্যার, ওই ভদ্রলোক শুধুমাত্র মাথাব্যথার ওষুধ কিনতে এসেছিলেন। আমি তাঁকে বোঝালাম---- মাছ ধরলে মাথাব্যথার উপশম হবে" ...... 😜
স্টোরের মালিক এবারে জানতে চাইলেন- এর আগে তুমি কী কাজ করতে ?
তিনি বললেন-----
"আমি বাংলাদেশে একটি প্রাইভেট হাসপাতালের ডাক্তার ছিলাম। দরকার না হলেও তখন রোগীদেরকে নানা ধরনের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা, ইকো, ইসিজি, সিটি স্ক্যান, এক্সরে, এম.আর.আই ইত্যাদি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতাম" ।
স্টোরের মালিক বললেন- তুমিএখন থেকে আমার চেয়ারেই বসবে।
আর আমি তোমার দেশে গিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে ট্রেনিং নিয়ে আসবো ...!!
*******ধার করা গল্প, তবে শিক্ষনীয়******
লক্ষ্য করুন কম কম বয়সী সুস্থ মানুষ মারা যাচ্ছে তাহলে মৃত্যুর কথা স্মরণ করা উচিত নাকি
আশেপাশে লক্ষ্য করলেই বাস্তবতাই এর উত্তর পেয়ে যাবেন । কত কম বয়সী সুস্থ সবল মানুষ মারা যাচ্ছেন । তাদের মধ্যে কারো বয়স আমার বা আপনার মতো । তাহলে মৃত্যুর চিন্তা সবসময়ই মাথায় থাকা উচিত কিনা ?
মৃত্যুর কথা স্মরণ রেখে আমরা নিয়মিত নিচের আমলগুলো করবো ইনশাআল্লাহ !
✓ সাইয়্যেদুল ইস্তিগফারঃ
(اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ )
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্কতানী ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আহ্দিকা ওয়া ও’য়াদিকা মাসতাত’তু আ’উযুবিকা মিন শার্রি মা ছা’নাতু আবূউলাকা বিনি’মাতিকা আ’লাইয়্যা ওয়া আবূউলাকা বিযানবী ফাগ্ফির্লী ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্যুনূবা ইল্লা আনতা
অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমার রব। তুমি ছাড়া আর কোনো সত্য মাবুদ নাই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ, আমি তোমার বান্দা। আমি তোমার ওয়াদা ও অঙ্গীকারের উপর সাধ্যানুযায়ী প্রতিষ্ঠিত। আমি অনিষ্টকর যা কিছু করেছি তা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমার উপর তোমার যে নিয়ামত আছে তার স্বীকৃতি দিচ্ছি। তোমার নিকট আমার গুনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও; কেননা তুমি ছাড়া আর কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারে না।
উৎসঃ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৬৭)
বিস্তারিতঃ
(১) হযরত সাদ্দাদ ইবনে আওস (রাযিঃ) হইতে বর্নিত আছে যে,
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন যে, যে ব্যাক্তি দিলের একিনের সহিত দিনের যে কোন অংশে এই কালিমাগুলি পড়িয়াছে এবং সেইদিন সন্ধ্যার পূর্বে তাহার মৃত্যু হইয়া গিয়াছে সে জান্নাতীদের মধ্য হইতে হইবে। এমনিভাবে যদি কেহ দিলের একিনের সহিত রাত্রের কোন অংশে এই কালিমাগুলো পড়িয়াছে এবং সকাল হওয়ার পূর্বে তাহার মৃত্যু হইয়া গিয়াছে সে জান্নাতীদের মধ্য হইতে হইবে।
(বোখারী)
(২) আবু মামার (র)……শাদ্দাদ ইবন উস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নবী (সা) বলেছেনঃ সাইয়্যেদুন ইস্তিগফার যে ব্যক্তি দিনের (সকাল) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এ ইস্তিগফার পড়বে আর সন্ধা হওয়ার আগেই সে মারা যাবে, সে জান্নাতী হবে । আর যে ব্যাক্তি রাতের (প্রথম) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এ দু’আ পড়ে নেবে আর সে ভোর হওয়ার আগেই মারা যাবে সে জান্নাতী হবে ।
[সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৬৭]
✓ ইস্তিগফার
استغفر الله
উচ্চারনঃ আস্তাগ্ ফিরুল্লাহ
অর্থঃ আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
উৎসঃ (মুসলিম)
বিস্তারিতঃ
(১) হযরত আগার মুযানী (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, “কখনো আমার অন্তরে সাময়িক অবহেলা চলে আসে। তখন আমি আল্লাহর কাছে একশত বার তওবা-ইস্তেগফার করি।
(মুসলিম)
(২) হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (স) কে বলতে শুনেছি। তিনি বললেন, “আল্লাহর শপথ! আমি দৈনিক সত্তর বারের অধিক আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তাওবা করি।”
(বুখারী)
সুপ্রিয় পাঠক, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনের কখনো কোনো প্রকার ভুল করেননি , গুনাহ করেননি তাই তিনি যদি দিনে সত্তরবার তাওবা করেন তাহলে আমার আপনার কতবার তাওবা করতে হবে ?
✓ লা হাওলা
لا حول ولاقوة إلا بالله
উচ্চারনঃ লা হাওলা ওলা ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্
অর্থঃ আল্লাহর আশ্রয় ও শক্তি ছাড়া আর কারো কোনো ক্ষমতা নাই ।
[ উৎসঃ সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৯৬৭
একটি শিক্ষনীয় পোস্ট-
-
🎓১। তিন সময়ে ঘুমানো থেকে বিরত থাকুনঃ
ক ) ফজরের_পর_থেকে_সূর্যোদয় পর্যন্ত,
খ ) আছর_থেকে_মাগরিব এবং
গ ) মাগরিব_থেকে_ এশা পর্যন্ত ।
🎓২। দুর্গন্ধময় লোকের সাথে বসবেন না ।
🎓৩। এমন লোকের কাছে ঘুমাবেন না যারা ঘুমানোর পূর্বে মন্দ কথা বলে ।
🎓৪। বাম হাতে খাওয়া এবং পান করা থেকে বিরত থাকুন ।
🎓৫। দাঁতে আটকে থাকা খাবার বের করে খাওয়া
পরিহার করুন ।
🎓৬। হাতে পায়ের আঙ্গুল ফোটানো পরিহার করুন ।
🎓৭। জুতা পরিধানের পূর্বে দেখে নিন ।
🎓৮। নামাজে থাকা অবস্থায় আকাশের দিকে
তাকাবেন না ।
🎓৯। টয়লেটে থুথু ফেলবেন না ।
🎓১০। কয়লা দিয়ে দাঁত মাঝবেন না ।
🎓১১। প্যান্ট বা ট্রাউজার পা পায়জামা বসে ডান পা আগে পরিধান করুন ।
🎓১২। ফুঁক দিয়ে খাবার ঠাণ্ডা করবেন না ।
প্রয়োজনে বাতাস করতে পারেন ।
🎓১৩। দাঁত দিয়ে শক্ত কিছু ভাঙতে যাবেন না ।
🎓১৫। ইকামাহ এবং নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে কথা বলবেন না ।
🎓১৬। টয়লেটে থাকা অবস্থায় কথা বলবেন না ।
🎓১৭। বন্ধুদের সম্পর্কে গল্প করবেন না ।
ভালো কিছুও নয়। ভালো বলতে বলতে মুখ দিয়ে শয়তান খারাপ কিছু বের করে দেবে ।
🎓১৮। বন্ধুদের জন্য প্রতিকুলতা সৃষ্টি করবেন না ।
🎓১৯। চলার সময় বার বার পেছনে ফিরে তাকাবেন না.
🎓২০। হাঁটার সময় দম্ভভরে মাটিতে পা ঠুকবেন_না ।
🎓২১। বন্ধুদের সন্দেহ করবেন না ।
🎓২২। কখনো মিথ্যা বলবেন না ।
ঠাট্টা করেও নয় ।
🎓২৩। নাকের কাছে নিয়ে খাবারের গন্ধ শুকবেন না ।
🎓২৪। স্পষ্ট করে কথা বলুন যাতে লোকজন সহজে বুঝতে পারে ।
🎓২৫। একা ভ্রমণ করবেন না ।
দুইয়ের অধিক বা সম্ভব হলে দলবেঁধে ভ্রমণ করুন।
🎓২৬। একা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিবেন না,
বুদ্ধিসম্পন্ন কারো সাথে পরামর্শ করুন ।
তবে সিদ্ধান্ত হবে আপনার।
🎓২৭। নিজেকে নিয়ে কখনো গর্ব করবেন না ।
🎓২৮। খাবার নিয়ে কখনো মন খারাপ করবেন না
যা পেয়েছেন তাতেই আল্লাহ্ পাকের শুকরিয়া
আদায় করুন ।
🎓২৯। অহংকার করবেন না ।
অহংকার একমাত্র আল্লাহ্ পাকের সাজে ।
🎓৩০। ভিক্ষুকদের পরিহাস করবেন না ।
🎓৩১। মেহমানদের মন থেকে যথাসাধ্য ভালো মতো আপ্যায়ন করুন ।
🎓৩২। ভালো কিছু তে সহযোগিতা করুন ।
🎓৩৩। দারিদ্র্যের সময়ও ধৈর্যধারণ করুন ।
🎓৩৪। নিজের ভুল নিয়ে ভাবুন এবং অনুসূচনা করুন ।
🎓৩৫। যারা আপনার প্রতি খারাপ কিছু করে,
তাদের সাথেও ভালো আচরণ করুন ।
🎓৩৬। যা কিছু আছে তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন ।
আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্ যা দিয়েছেন তার জন্য
শুকরিয়া আদায় করুন ।
🎓৩৭। বেশি ঘুমাবেন না, এতে স্মৃতি শক্তি লোপ পাবে ।
🎓৩৮। নিজের ভুলের জন্য দিনে অন্তত ১০০ বার আল্লাহ্ পাকের কাছে অনুতপ্ত হন আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ুন ।
🎓৩৯। অন্ধকারে কিছু খাবেন না ।
🎓৪০। মুখ ভর্তি করে খাবেন না ।
বাচ্চাদের কেও মুখ ভর্তি করে খেতে দিবেন না
ভাইরাস নিয়ে চীন কাজ শুরু করেছে ১৯৮০ সালেরও আগে
।
অনেকের গবেষণা মতে চীন ক্ষমতার লড়াইয়ে টিকে থাকার জন্য এই bioweapons নিয়ে কাজ করছিলো।
হয়ত এক্সিডেন্টলি অথবা পরিকল্পনামাফিক ভাইরাস নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে।
আমেরিকা যখন nuclear weapons নিয়ে কাজ করছে
তখন চায়না করছে bioweapons নিয়ে কাজ।
নাকের ডগায় বসে থেকে ভারত তিলে তিলে গড়ে তুলেছে তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
একটা বাটনে চাপলে ধুলায় মিশে যাবে অর্ধেক দুনিয়া।
ইজরাইলের মত রিফিউজি দেশ তারাও গড়ে তুলেছে পৃথিবীর সবচেয়ে নিঃছিদ্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
আর বাংলাদেশ??
এই যুদ্ধে বাংলাদেশ কোথায়???
জাপানে ডিফেন্স ফোর্স তৈরীতে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ছিলো।
জাপান প্রতিরক্ষা খাতের পুরো অর্থই ট্রান্সফার করে দিলেন শিক্ষা খাতে।
যেখানে স্কুল লেভেলেই সহবৎ শেখানোর পাশাপাশি জাপান সামরিক কৌশলও শেখালো তার বাচ্চাদের।
এলিট ফোর্স নেই কিন্তু পুরো দেশের ১০০% নাগরিক যুদ্ধকৌশল শিখে বসে আছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ, সরকারি তরফ থেকে তিলে তিলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে৷
বই থেকে মোরাল এডুকেশন তুলে দিয়েছে।
কোচিং সেন্টারের ব্যবসা চাঙ্গা করতে গিয়ে পুরো জেনারেশনকে খেলাধুলা থেকে বিরত রেখেছে।
খাবারে ফরমালিন বিষ মিশিয়ে শারীরিক ভাবে দূর্বল জাতি তৈরি করেছে।
টাকার লোভে ডাক্তাররা মায়ের পেট কেটে সিজারের নামে লাখে লাখে প্রি ম্যাচিউর বেবি বের করে এনেছে।
টেলিযোগাযোগ কোম্পানি গুলো পরিকল্পনা করে ইয়াং জেনারেশনকে ফেসবুক আড্ডায় ঢুকিয়ে দিয়েছে।
জোর করে ছাত্রদের সরল রৈখিক রাজনীতিতে যুক্ত করা হয়েছে।
একটা দেশের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করার জন্য যা যা করা সম্ভব তার সব কিছুই এপ্লাই করা হয়েছে৷
দেশের কোন স্ট্রং পররাষ্ট্র নীতি তৈরি হয়নি।
বিজ্ঞান গবেষণায় কোন বরাদ্দ নেই, কারো কোন আগ্রহ নেই।
সবাইকে বিসিএস গাইড ধরিয়ে দিয়ে সরকারের অনুগত করা হয়েছে।
বেস্ট সেলিং এর দৌড়ে টিকে থাকতে কেউ এখন আর বুদ্ধিবৃত্তিক লেখাঝুকা করতে আগ্রহী নয়।
রাজনৈতিক দল গুলো মনের মাধুরী মিশিয়ে ইতিহাস বিকৃত করে চলেছে।
মোদ্দা কথা শিক্ষা, স্বাস্থ, পররাষ্ট্র নীতি, বিজ্ঞান, ইতিহাস, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, অর্থনীতি, পরিবেশ
যে কোন সূচকে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ভয়াবহ অন্ধকার।
এখানে ফ্লাইওভার নির্মাণকে উন্নতি বলা হয়,
অথচ এই ফ্লাইওভার হাজারে হাজারে পরে আছে চায়নায়।
একটা নিন্ম মানের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকে বিজয় ধরা হয়,
অথচ নাসা ছুটে চলেছে গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে।
একটা দেশ যার নিজেস্বতা বলে কিচ্ছু নেই।
নিজস্ব ট্রেডমার্ক নেই,
নিজস্ব আবিষ্কার নেই,
নিজস্ব পলিসি নেই,
নিজস্ব পন্য নেই।
এই দেশ নিয়ে গর্ব করার মত কিছুই অবশিষ্ট রইলো না!!!
হাওয়ায় দেশ চলছে।
ব্যাংকে টাকা রাখবেন, টাকা হাওয়া হয়ে যাবে,
বুঝতেই পারবেন না৷
বিশ্ববিদ্যালয় বাচ্চাদের চাকুরীর জন্য তৈরি করবে
কিন্তু নতুন কোন আইডিয়া নিয়ে আলাপ হবে না।
আচ্ছা এই যে চীন আরো ৪০ বছর আগে থেকে ভাইরাস নিয়ে কাজ করছে এই তথ্য কেন বাংলাদেশের কাছে থাকবে না?
যেদেশের সাথে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বানিজ্যিক সম্পর্ক৷
হাগু করতে গেলেও চাইনিজ কমড লাগে,
সেই দেশ কেন আগে থেকেই চায়নাকে অবজার্ভ করবে না?
কেন তারা জানবে না যে আগামীকাল চায়না কেমন রিয়াক্ট করতে পারে?
কেন আগে থেকেই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকবে না?
পুরোদস্তুর একটা খাদক (ভোক্তা) দেশ তৈরি হয়েছে।
যাকে বলে বাজার!
ভারতের বাজার, চায়নার বাজার, পাকিস্তানের বাজার, কোরিয়ার বাজার।
শুধু বাজারই না, ৩য় শ্রেণীর পন্য বিক্রি করার জন্য ২০ কোটি ক্রেতার এক বাজার।
যাকে স্লেভ বললেও ভুল হবে না।
স্বাধীনতার তকমা জড়িয়ে থাকবে,
কিন্তু আদতে দেশ, মন, মস্তিষ্ক বেচে বসে আছে অন্য দেশের কাছে।
যাদের নিজেস্য কোন ক্ষমতা নেই।
পুরোটাই পরগাছা।
একটা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য পর্যন্ত অন্য দেশের দিকে তাকিয়ে আছে।
যদি কাল এই ভ্যাকসিন না দেয় কেউ,
পুরো জাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে৷
হুদাই বড় বড় ডায়লগ, বাঙ্গালী বীরের জাতি।
চায়না যখন আগামী ১০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর ক্ষমতা দখল করতে ব্যস্ত,
X. আমেরিকা যখন গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে রকেট ছুটিয়ে চলেছে,
ভারত যখন একটার পর একটা নিউক্লিয়ার টেস্ট করছে
তখন আমরা ব্যস্ত এই গবেষণায় যে স্বাধীনতার ভাষণ কে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু না জিয়াউর রহমান?
দুনিয়া যখন স্পেস ট্রাভেল করছে
তখন আমরা একটা মেট্রোরেল তৈরি করেই নিজেদের উন্নত জাতি বলে নিজেরাই নিজেদের পীঠ চুলকাচ্ছি।
আহা বাঙ্গালী!!
কথায় আছে মূর্খের রাজা হওয়া থেকে জ্ঞানীর চাকর হওয়া উত্তম...
ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে খাবার খান নাকি জাদূর জিনিস খাচ্ছেন ?
ঘুমের মধ্যে যারা সপ্তাহে ২/৩ দিনের মত খাবার খান তাদেরকে অতিমাত্রায় যাদু করা হয়। ঘুমের মধ্যেও যাদু করা হয়। যখন কোন তান্ত্রিক/কবিরাজরা সরাসরি খাদ্য খাওয়াতে পারে না তখন স্বপ্নে জ্বিন শয়তান দ্বারা খাদ্য খাওয়ানোর মাধ্যমে যাদুর বিষ তাদের শরীরে ঢুকিয়ে দেয়।
আবার অনেকে মাসে কয়েক বার অথবা কয়েক মাস এর মধ্যে প্রায়ই খাবার খেয়ে থাকেন।
আবার দেখা যায় যে, অনেককে কোন যাদুকর/তান্ত্রিক/কবিরাজরা তাদের কোন ক্ষতি করে না এবং তাদের কোন মানুষ শত্রু নেই। তবুও আপনি খাবার খাচ্ছেন।
যারা স্বপ্নের মাধ্যমে খাবার খান তাদের কে বেশিরভাগ, শনিবার এবং মঙ্গল বার, চান্দের প্রথম তারিখে খাইয়ে থাকে।
আবার অনেকে স্বপ্নে খাবার খাচ্ছেন ঠিকই কিন্তু অসুস্থ হচ্ছেন না শারীরিকভাবে।
এখন একটু ভাবুন তো এই খাবার কেন খাচ্ছেন?
তাহলে, এই খাবারের কারন কি হতে পারে?
মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন,
'নিশ্চয় শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু'। (সূরা বাকারাহ আয়াত-৩১৬)।
ان الشيطان لكم عد وفاتذوه عدوا
অর্থ: “শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু কাজেই শয়তানকে শত্রু হিসেবে গ্রহণ করো।” (সুরা ফাতির-৬)
একথা আল্লাহ তাআলা সমস্ত মানুষদেরকে উদ্দ্যেশ্য করে বলেছেন, কাউকে নির্দিষ্ট করে নয়। এখন যারা মনে করেন, আপনাদের কোন শত্রু নাই তারা এই আয়াত দেখুন। মানুষ শত্রু/শয়তান আপনার পিছনে লেগে না থাকলেও অদৃশ্য শত্রু/জ্বিন শয়তান আপনার পিছনে লেগেই থাকবে মৃত্যু পর্যন্ত।
যারা যাদুগ্রস্থ সেলফ্ রুকিয়াহ/সরাসরি রুকিয়াহ করতেছেন তারা দেখা গেছে প্রতিরাতেই ঘুমের মাঝে খাবার খাচ্ছেন। এর কারন হলো আপনি যখন শয়তানের সাথে লড়াই করতেছেন, শয়তানও আপনার সাথে লড়াই করতেছে। আপনার আমলের কারনে শয়তানেরও কষ্ট হচ্ছে। তাই সেও আপনাকে খাওয়ানোর মাধ্যমে অসুস্থ/যাদু করার চেষ্টা করছে।
এক্ষেত্রে আপনি সকাল সন্ধ্যার মাসনুন আমলগুলো চালিয়ে যাবেন। সেলফ রুকিয়াহ/সরাসরি রুকিয়াহ বন্ধ করবেন না। এবং নিকস্থ রাক্বীর পরামর্শ নিবেন। ভয়ের কারন নেই!
এখন যাদেরকে কেউ যাদু করেনি এবং স্বপ্নে খাবার খান কিন্তু অসুস্থও হচ্ছেন না। তাদের ক্ষেত্রে যদি এমন ব্যক্তি হয় যে, আপনি নিয়মিত সালাত আদায় করেন না, অযথা সময় ব্যয় করেন, নিয়মিত কুরআন তেলোয়াত করেন না, ভিবিন্ন কুফর ও শিরক কাজে লিপ্ত, পরক্রিয়া করেন, অবৈধ সম্পর্ক করেন, অন্যের উপর জুলুম করেন, মিথ্যা কথা ও কসম করেন, বেপর্দায় চলাফেরা করেন ইত্যাদি.... তাদেরকে শয়তান এসব অবৈধ কাজে লিপ্ত করে রাখে। এবং আপনার ভিতরে কৌশলে শয়তানের বিষ ঢুকিয়ে দেয়।
তাদেরকে যাদু করে আত্মাকে নষ্ট করে ফেলে যার কারনে আপনি আল্লাহ ইবাদত সমূহ করতে অলসতা বোধ করছেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন, শয়তানের কৌশল দুর্বল। (সূরাঃ নিসা-৭৬)।
তারমানে শয়তান অবশ্যই কৌশল অবলম্বন করে।
এখন খাবার খেলেই যে, তা যাদু অথবা শয়তানি যাদু হতে পারে তা নাও হতে পারে। এর জন্য আপনি যদি রাতে ভিবিন্ন খাবার প্রায় খেতে দেখেন তাহলে, এটা কি আসলেই শয়তানের পক্ষ থেকে তা জানার জন্য সকালে উঠে এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন তা হলোঃ-
সকালে ফজর নামায শেষে অযু অবস্থায় এক লিটার বা কম পানি নিবেন এবং এই দোয়া, সুরা, আয়াত গুলি ৩ বার করে পড়ে ফুঁ দিয়ে পর পর ৩ গ্লাস পানি খালি পেটে খাবেন।
(১)দুরুদ শরীফ, নামাজে যেটা পড়েন
(২)সূরা ফাতেহা
(৩)আয়াতুল কুরসী
(৪)সুরা আরাফ হতে -১১৭-১২২
(৫)সূরা ইউনুস হতে -৮১-৮২
(৬)সুরা ত্বহা হতে -৬৯
(৭)ইখলাস
(৮)ফালাক
(৯)নাস
(১০)পুনরায় দুরুদ শরীফ
ঐচ্ছিক হিসেবে চাইলে আপনি এগুলো সাথে পাঠ করতে পারেন।
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التامَّاتِ مِنْ شرِّ مَا خَلَقَ
আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন শাররি মা খালাক্ব।
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِيْ لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلاَ فِيْ السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
বিস্মিল্লা-হিল্লাযী লা ইয়াদ্বুররু মা‘আ ইস্মিহী শাইউন ফিল্ আরদ্বি ওয়ালা ফিস্ সামা-ই, ওয়াহুয়াস্ সামী‘উল ‘আলীম।
যদি পানি আপনি একবারে খেতে না পারেন তাহলে, ২/৩ মিনিট পর পর খাবেন।
যদি এই খাবার আপনার জন্য ক্ষতিকারক হয়ে থাকে তবে পানি খাওয়ার পর পরই বমি/টয়লেট/ হয়ে সেই যাদু/বিষ বের হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে কখনো টয়লেট/বমি হওয়া পর পরই শরীর কাপুনি অথবা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। আবার এমনটা নাও হতে পারে। যদি এমন হয় তাহলে ভয় না পেয়ে বেশি বেশি আয়াতুল কুরসি, ইখলাস, ফালাক, নাস পরতে থাকুন অথবা হেডফোন দিয়ে শুনতে থাকুন। আলহামদুলিল্লাহ কিছুক্ষন পর সুস্থ হয়ে যাবেন।
এবার আসুন আমরা কিভাবে রাতে শয়তান থেকে হেফাযত থাকবো-
রাতে ঘুমানোর আগে সূরা ফাতিহাসহ আয়াতুল কুরসি, সূরা বাকারাহ শেষ ২ আয়াত, সূরা কাফিরুন, ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়ে সমস্ত শরীর মাসেহ করে, ঘুমানোর দোয়া পড়ে ডান প্বার্শ হয়ে ঘুমিয়ে যাবেন। অবশ্যই অযু অবস্থায় ঘুমাতে হবে।
বিঃদ্রঃ ঘুমের মধ্য খাবার খাওয়া দুটি দিক, যদি কেউ প্রতিনিয়ত খায় তাদের অধিকাংশ যাদুগ্রস্ত, এক্ষেত্রে যদি আসিক জ্বিন দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে জ্বিনে নিজেই যাদু করে, হয় জ্বিন নিজেই যাদুকর বা অন্য জ্বিনের সাহায্য নিয়ে যাদু করে ব্যক্তি কে নিজের বশে রাখে।
দ্বিতীয় :-কেউ যখন যাদুকরের কাছে যায় ব্যক্তি কাছে কিংবা দুরে হলে, যদি খাবার মাধ্যমে যে যাদু করে সেটা ব্যক্তি কে খাইয়াতে অসম্ভ হিলে যাদুকর জ্বিনের সাহায্য খাবার কাজটি করে থাকে
পৃথিবীর সবচেয়ে কনিষ্ঠা মা... যিনি মাত্র পাঁচ বছর বয়সে গর্ভবতী হন
((পৃথিবীর সবচেয়ে কনিষ্ঠা মা... যিনি মাত্র পাঁচ বছর বয়সে গর্ভবতী হন....))
ছবিটা দেখে কি মনে হচ্ছে....???
এরা দুজন সম্পর্কে কি হতে পারে...! !??
ভাই বোন নিশ্চয়ই....!!
যদি আপনার উত্তর এটাই হয় তবে আপনি ভূল....!!!
পৃথিবীর ইতিহাস জুড়েই এমন কিছু ঘটনা রয়েছে যা সত্যি বলে বিশ্বাসই করতে ইচ্ছে করে না। এমন কিছু অনন্য রেকর্ড রয়েছে, যা সকলকে হতবাক করে দেয়। এরকমই এক অত্যদ্ভূত রেকর্ডের অধিকারী দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর বাসিন্দা লিনা মেদিনা। বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকণিষ্ঠ বয়সে মা হওয়ার রেকর্ড করেছিলেন তিনি। অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনা হল, লিনা যখন তার প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন মাত্র পাঁচ বছর বয়সে!
১৯৩৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর পেরুর ট্রিকাপো নামে এক ছোটো শহরে জন্ম হয়েছিল তার। লিনার যখন পাঁচ বছর বয়স, তখন তার বাবা-মা লক্ষ্য করেছিলেন তার পেট হঠাৎ ফুলতে শুরু করেছে। তারা প্রথমে ভেবেছিলেন লিনার সম্ভবত পেটের কোনও রোগ হয়েছে। কিংবা তার পেটে টিউমার হয়েছে। গভীর উদ্বেগে তারা লিনাকে এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। চিকিৎসকরা বিভিন্ন রোগের জন্য ছোট্ট লিনার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন। কিন্তু, কিছুতেই তার রোগ ধরতে পারছিলেন না।
অবশেষে, ধরা পড়ে যে লিনা গর্ভবতী, এক সন্তানের জন্ম দিতে চলেছে সে। চিকিৎসকরা এই আবিষ্কারে একেবারে হতবাক হয়ে যান। এরপর লিনাকে হাসপাতালে ভর্তি করে একদল চিকিৎসক পরীক্ষা করে এই বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছিলেন। ১৯৩৯ সালের ১৪ মে, মাত্র ৫ বছর ৭ মাস ১৭ দিন বয়সে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন লিনা।
অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল ডাক্তারদের। লিনা যে পুত্রের জন্ম দিয়েছিলেন সেও সুস্থই ছিল। ঘটনাচক্রে, ওই দিনটি আবার পেরুতে মাতৃ দিবস হিসাবে পালিত হয়।
১৯৭২ সালে বিবাহ করেছিলেন লিনা। নার্সের কাজ করতেন। তার সেই সন্তান জীবিত ছিল ৪০ বছর। কিন্তু, এত ছোট বয়সে লিনা কীভাবে গর্ভবতী হল, সেই প্রশ্নের উত্তর আজও পাওয়া যায়নি। মনে করা হয়, সম্ভবত পরিবারের বা প্রতিবেশীদের কেউ তাকে ধর্ষণ করেছিল।
কিন্তু, ৫ বছর বয়সে কীভাবে সন্তান ধারণ সম্ভব তা নিয়ে রহস্য রয়ে গেছে। সাধারণ চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে, মেয়েরা বয়সন্ধিতে না পৌঁছালে তাদের শরীরে সন্তান ধারণের প্রয়োজনীয় হরমোনই তৈরি হয় না। তাই এই ঘটনাটা ডাক্তারদের কাছে শুধু বিস্ময়কর নয়, অসম্ভব ছিল। চিকিৎসা বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞরা আজও লিনার মাতৃত্বের ধাঁধার উত্তর খুঁজে পাননি।
ঘুমের ভিতর বোবায় ধরা বা sleep paralysis
#বোবায়_ধরা
#Sleep_Paralysis
বোবায় ধরা (Sleep Paralysis): চিকিৎসাশাস্ত্রের ভাষায় এই সমস্যাকে বলা হয় স্লিপ প্যারালাইসিস, বা ঘুমের মধ্যে পক্ষাঘাত।
স্লিপ প্যারালাইসিস হলে একজন ব্যক্তি কিছু সময়ের জন্য কথা বলা বা নাড়াচাড়া করার শক্তি হারিয়ে ফেলেন।
এটি সাধারণত কয়েক সেকেন্ড থেকে এক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। তবে ওই সময়টায় রোগী ভীষণ ঘাবড়ে যান, ভয় পেয়ে যান।
বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিস হল গভীর ঘুম ও জাগরণের মাঝামাঝি একটি স্নায়ুজনিত সমস্যা।
ঘুমের ওই পর্যায়টিকে বলা হয় র্যাপিড আই মুভমেন্ট-রেম।
রেম হল ঘুমের এমন একটি পর্যায় যখন মস্তিষ্ক খুব সক্রিয় থাকে এবং এই পর্যায়ে মানুষ স্বপ্ন দেখে থাকে।
কিন্তু সে সময় শরীরের আর কোন পেশী কোন কাজ করেনা। এ কারণে এসময় মস্তিষ্ক সচল থাকলেও শরীরকে অসাড় মনে হয়।
স্লিপ প্যারালাইসিস তরুণ-তরুণী এবং কিশোর বয়সীরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
বোবায় ধরা কাদের হয়, কেন হয়?
স্লিপ প্যারালাইসিস হওয়ার নির্দিষ্ট কোন বয়স নেই। এই পরিস্থিতি যে কারও সঙ্গে যেকোনো বয়সে হতে পারে।
তবে ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা বা এনএইএস-এর তথ্য মতে তরুণ-তরুণী এবং কিশোর বয়সীরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
স্লিপ প্যারালাইসিস হওয়ার পেছনে কিছু কারণকে চিহ্নিত করেছে তারা।
১. পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব বা ছেড়ে ছেড়ে ঘুম হওয়া। অসময়ে ঘুমানো। অনেক সময় কাজের সময় নির্দিষ্ট না হলে, অথবা দূরে কোথাও ভ্রমনে গেলে এমন ঘুমের সমস্যা হতে পারে।
২. মাদকাসক্ত হলে অথবা নিয়মিত ধূমপান ও মদপান করলে।
৩. পরিবারে কারও স্লিপ প্যারালাইসিস হয়ে থাকলে।
৪. সোশ্যাল অ্যাঙ্কজাইটি বা প্যানিক ডিসঅর্ডার বা বাইপোলার ডিজঅর্ডারের মতো মানসিক সমস্যা থাকলে।
বোবায় ধরার লক্ষণ:
ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী স্লিপ পারালাইসিসের সাধারণ কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে। সেগুলো হল:
১. বড় করে নিশ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হয়। মনে হবে যেন বুকের মধ্যে কিছু চাপ দিয়ে আছে। দম বেরোচ্ছেনা।
২. অনেকের চোখ খুলতে এমনকি চোখ নাড়াচাড়া করতেও সমস্যা হয়।
৩. অনেকের মনে হয় যে কোন ব্যক্তি বা বস্তু তাদের আশেপাশে আছে, যারা তার বড় ধরণের ক্ষতি করতে চায়।
৪. ভীষণ ভয় হয়। শরীর ঘেমে যায়।
৫. হৃৎস্পন্দন ও শ্বাস প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যায়। অনেকের রক্তচাপও বাড়তে পারে।
৬. পুরো বিষয়টা কয়েক সেকেন্ড থেকে এক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। প্রভাবটি কেটে গেলে আগের মতো কথা বলা বা নড়াচড়া করায় কোন সমস্যা থাকেনা। তারপরও অনেকে অস্থির বোধ করেন এবং পুনরায় ঘুমাতে যেতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
এর চিকিৎসা:
স্লিপ প্যারালাইসিস আসলে গুরুতর কোনও রোগ নয়। মাঝে মাঝে নিজে থেকেই ভাল হয়ে যায়।
মনকে চাপমুক্ত রাখার পাশাপাশি ঘুমানোর অভ্যাসে ও পরিবেশে ইতিবাচক পরিবর্তন আনলে অনেক ক্ষেত্রেই এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা সাধারণ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন:
১. রাতে অন্তত ৬ ঘণ্টা থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করা। এবং সেই ঘুম যেন গভীর হয়।
২ . প্রতিদিন রাতে একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং সকালে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠার অভ্যাস করা। এমনকি ছুটির দিনগুলোতেও।
৩. ঘুমের জন্য শোবার ঘরটিতে আরামদায়ক পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করতে হবে। যেন সেই ঘরে কোলাহল না থাকে, ঘরটি অন্ধকার থাকে এবং তাপমাত্রা সহনীয় মাত্রায় থাকে, খুব বেশি না আবার কমও না। সম্ভব হলে ঘরে ল্যাভেন্ডারের সুগন্ধি ছিটিয়ে দেয়া যেতে পারে।
৪. ঘুমাতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে ভারী খাবার সেইসঙ্গে ধূমপান, মদ পান এবং ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় যেমন চা-কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত চার ঘণ্টা আগে ব্যায়াম করার চেষ্টা করা।
৬. ঘুমের সময় হাতের কাছে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ অর্থাৎ ঘুমের বাঁধা হতে পারে এমন কোন বস্তু রাখা যাবেনা।
৭. দিনের বেলা দীর্ঘসময় ঘুম থেকে বিরত থাকতে হবে।
৮. স্লিপ প্যারালাইসিস হলে নিজের মনকে প্রবোধ দিতে হবে যে ভয়ের কিছু নেই, এই পরিস্থিতি সাময়িক, কিছুক্ষণ পর এমনই সব ঠিক হয়ে যাবে। এই সময়ে শরীর নাড়াচাড়া করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে হবে।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে:
এসব নিয়ম মেনে চলার পরও যদি কারও বাড়াবাড়ি রকমের স্লিপ প্যারালাইসিস হয় অর্থাৎ আপনার ঘুমে নিয়মিতভাবে ব্যাঘাত ঘটে তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
একা একা কবর খোঁড়ার পর!!
একা একা কবর খোঁড়ার পর!!
"লোকটা তেজারতির ব্যবসা করতেন বলেই কি তার জানাযায় লোক হয়নি??তেজারতি নাকি হারাম!অথচ এদিয়ে কতই উপকার হয় মানুষের?? নিজের ভাই যেখানে সামান্য টাকা দিয়ে সাহায্য করে নাহ সেখানে কতই নাহ উপকার করেন এই তেজারতি কারবারিরা??বিনিময়ে লাভ করবেন নাহ??এই লাভটাই নাকি হারাম!!এই দুনিয়ায় লাভ ছাড়া কিছু হয়??এলাকার মানুষের নিষেধ অমান্য করে ইস্কান্দার মির্জা এসেছেন জানাযায়।তার হিসেবে সুদের ব্যবসা অন্যায় কিছু নয়।এসে লাভ ও হয়েছে ঢের।বেশকিছু দলিল পত্র হাতিয়ে নিয়েছেন ইস্কান্দার মির্জা। কোমরে সেটি গুঁজে ফেলেছেন।এদিকে তেজারতি ব্যবসার মুকুটহীন সম্রাট নূরে এলাহির কবরে শোয়াইতে লোকের সংকট দেখা দিলো!তার ছেলেরা থাকে বিদেশে।এলাকার গুটিকয়েক যারা এসেছেন তারা রোগাক্রান্ত দেখতে!অগত্যা ইস্কান্দার মির্জা একাজে ও এগিয়ে আসলেন!লাশ নামিয়ে বিজয়ের হাসি দিলেন।আজকে লোকটার জানাযায় এসে কোটিপতি বনে যাওয়ার আনন্দের ঘটনা কয়জনের জীবনে ঘটে??জানাযা শেষে দীর্ঘ মোনাজাত হলো। ইস্কান্দর কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে উঠলো!বাসায় ফিরতে ফিরতে ইস্কান্দার ভাবলেন নিজেও বিশাল তেজারতির কারবারি হবেন!লোকেদের সুদের বিনিময়ে ঋণ দেয়া পাপের কিছুই নাহ।বাসায় ফিরে গোসল করতে যাবেন কোমরে গুঁজে রাখা কোটিপতি হওয়ার কাগজগুলো বের করতে গেলে পুরো দুনিয়া কেঁপে উঠলো ইস্কান্দর মির্জার!!কাগজ নেই!!তখনি বেরিয়ে গেলেন পুরো রাস্তা খুঁজে পাওয়া গেল নাহ কাগজ।কবরস্থানে গেলেন নাহ হদিস নাই কাগজটার!কাগজটা যে কবরেই পড়ে গেছে বুঝতে বেশিক্ষণ লাগলো নাহ ইস্কান্দার মির্জার!এখন সমাধান??একমাত্র সমাধান হলো কবর খুঁড়ে কাগজ উদ্ধার করা!এটা রাত ছাড়া সম্ভব নয়।এদিকে আকাশজুড়ে মেঘের ঘনঘটা! বৃষ্টি পড়লেই সব শেষ!!আল্লাহ আল্লাহ করে রাত ঘনিয়ে এলো।দ্রুতই রাস্তাঘাটে মানুষের সংখ্যা কমে গেল।শক্তিশালী টর্চ নিয়ে প্রয়োজনীয় অস্ত্র নিয়ে একাই গেলেন কবর খুড়তে!থমথমে পরিবেশে কবর খুড়তে লাগলেন ইস্কান্দার মির্জা!! দীর্ঘ পরিশ্রম শেষে কবর খুড়ে বাঁশ চাটাই সরিয়ে ইস্কান্দার মির্জা পাথর হয়ে গেলেন!লাশটা উল্টে আছে!!মুখে টর্চ মারতে দেখা গেল মানুষের মল উপচে পড়ছে!গায়ে কালো কুচকুচে ছোট্ট ছোট্ট সাপ মাংস ভেদ করে শরীরে প্রবেশ করছে!!নূরে এলাহীর দেহ কেমন নীলাভ আকার ধারন করছে!!রোবট এর মতন ইস্কান্দার মির্জা পুনরায় কবর মাটিতে ভরে দেন।সব ঠিকঠাক করতেই ঝুম বৃষ্টি নামে!বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতেই তওবা করতে করতে বাসায় ফিরেন ইস্কান্দার মির্জা!! বিড়বিড় করে বলতে লাগলেন "আল্লাহ সুদকে করেছেন হারাম।।ব্যবসাকে করেছেন হালাল!!
(ছবির সাথে ঘটনার সম্পর্ক নাই।বহুবছর আগে মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়া একটি ঘটনা অবলম্বনে লেখা)
ভয়ঙ্কর নেশা, মানুষের মাংস রান্না করে খাওয়া!
#বিস্তারিতঃ
#আজ থেকে প্রায় দেড়শ বছর আগে তৎকালীন জার্মানির মুয়েনস্টারবার্গে বসবাস করত কার্ল ডেনকে, মানুষের কাছে যে পরিচিত ছিল এক আপাদমস্তক ভদ্রলোক হিসেবে। কিন্তু এই লোকটির ছিল এক ভয়ঙ্কর নেশা, মানুষের মাংস রান্না করে খাওয়া!
কার্ল ডেনকের জন্ম ১৮৭০ সালের ১০ আগস্টে, ওবেরকুনজেন্ডরে, আজ যেটা ক্যালিনোইস গোর্ন নামে পরিচিত। দশ বছর বয়সে সে পরিবারের সাথে মুয়েনস্টারবার্গে (আজকে যেটা পোল্যান্ডের জিয়েবিচ) চলে আসে।
ছোটবেলায় সে ছিল সরল প্রকৃতির। একই সাথে ছিল একগুঁয়ে ধরনের। কিছুদিন স্কুলে গেলেও শিক্ষকেরা তার উপর অত্যন্ত বিরক্ত ছিল। পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ কিংবা কোনো কিছু আয়ত্ত করার মতো মানসিকতাই ছিল না তার। এজন্য প্রায়ই শাস্তি দেয়া হত তাকে। বারো বছর বয়সে সে স্কুল ছেড়ে দেয়, চলে যায় বাড়ি ছেড়েও।
তার বয়স যখন পঁচিশ, তখন বাবা মারা যায়। এরপর পরিবার থেকে কিছু টাকা পেয়ে জমি কিনে চাষবাসের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়, বিক্রি করে দেয় জমি। তারপর একটা বাড়ি কিনলেও, মন্দার কারণে সেটাও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় সে।
বড় হবার পর থেকে তার মধ্যে একাকী থাকবার প্রবণতা দেখা দেয়। তার পরিবারের লোকজন জানায়, ভয় কিংবা বিরক্তি এই দুটো ব্যাপার কখনোই ডেনকের মধ্যে দেখা যায় নি। এমনকি তারা তাকে কখনো অতিমাত্রায় রাগ পর্যন্ত করতে দেখে নি। যৌবনে তো সে একাই থাকত নিজের মতো। কেবল একবার পরিবারের লোকজনের সাথে খেতে এসেছিল সে। ঐ একবারের আগমনটাই মনে রয়ে গেছে তাদের, কারণ ডেনকে সেবারে একাই সাবাড় করেছিল ১ কেজির মত মাংস।
তবে শহরের মানুষের কাছে ডেনকে পরিচিত ছিল তার ভদ্রতা, নম্রতা আর বিনয়ের জন্য। মাঝেমধ্যে মানুষকে সাহায্যের জন্যও তার সুখ্যাতি ছিল। স্থানীয় চার্চে বাদ্যযন্ত্র বাজাত সে। চমৎকার আচরণের জন্য তার একটা ডাকনামও জুটেছিল, ঠিক ধর্মীয় যাজকদের মত, ‘ফাদার ডেনকে’।
এই ভদ্রতার আড়ালের চেহারাটি প্রকাশ পাবার দিনটি ছিল ১৯২৪ সালের ডিসেম্বরের ২১ তারিখ। সেদিন বেলা ১টার দিকে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে ছুটে এল এক লোক, রক্ত ঝরছিল তার শরীর থেকে। ভয়ার্ত চেহারায় সে পুলিশকে জানাল, কার্ল ডেনকে নাকি একটা কুঠার দিয়ে তাকে মারার চেষ্টা করেছে। ভিনসেনজ অলিভার নামের এই লোকটি ছিল ভ্যাগাবন্ড প্রকৃতির। ওদিকে মুয়েনস্টারবার্গের মানুষ ডেনকেকে চিনত একজন ভালো মানুষ হিসেবে। মাত্র নয় হাজার মানুষের বসবাস ছিল সেই শহরে, যেখানে মোটামুটি সবাই সবাইকে চিনত। তাই শুরুতেই পুলিশ বিশ্বাস করল না অলিভারকে।
একজন ডাক্তার অলিভারের আঘাতটা পরীক্ষা করে পুলিশকে নিশ্চিত করল যে, তাকে কোনো ভারী অস্ত্র দিয়েই আঘাত করা হয়েছে। এরপর ডেনকেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সে অলিভারের উপর হামলার কথা স্বীকার করল। কিন্তু অলিভারকে একজন চোর ভেবেই তার উপর আঘাত করেছে, এমনটাই দাবি করল সে। অবশ্য নিজের দাবিটা প্রমাণ করে পুলিশের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আর অপেক্ষা করেনি ডেনকে। তাকে থানার হাজতে আটকে রাখার কয়েক ঘণ্টা পরেই সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় তার মৃতদেহ। শহরের মানুষের কাছে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ডেনকে আত্মহত্যা করে গলায় রুমাল পেঁচিয়ে।
ডিসেম্বরের ২৪ তারিখে পুলিশ যায় ডেনকের বাড়িতে। ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফ্রেডেরিখ পিয়েত্রুস্কির রিপোর্ট থেকে জানা যায় তারা কী বীভৎস দৃশ্য দেখেছিল সেখানে।
সে বাড়িতে পাওয়া গিয়েছিল টুকরো টুকরো মাংস আর হাড়। মাংসগুলো চুবানো ছিল একটা কাঠের ড্রামে লবণ মেশানো পানিতে। মাংসের রং আর প্রকৃতি দেখে তদন্তকারী বিশেষজ্ঞরা জানান, ভিকটিমদের মেরে ফেলার কয়েক ঘণ্টা পর তাদের শরীর টুকরো করার কাজ শুরু করত ডেনকে।
তিনটা পাত্রে পাওয়া গিয়েছিল রান্না করা মাংস, সাথে ছিল ক্রিম সস। একটা পাত্রের অর্ধেক পরিমাণ মাংস ছিল না। বোঝাই যাচ্ছিল, গ্রেফতার হবার আগ মুহুর্তে সেটুকু খেয়েছিল ডেনকে।
শরীর থেকে মাংস কেটে নিয়ে রান্না করে ডেনকে তো নিজে খেতই, সেগুলো বাজারেও বিক্রি করত শুকরের মাংস বলে। আর সে মাংস দিয়ে আপ্যায়ন করত তার ভিকটিমদের কার্ল_ডেনকে,,!!সে বাড়িতে আরো পাওয়া গিয়েছিল একটা গামলা ভর্তি চর্বি। সেগুলো পরীক্ষা করেও পাওয়া গিয়েছিল মানব প্রোটিনের অস্তিত্ব, মানে ওগুলো ডেনকের হাতে খুন হওয়াদের শরীর থেকেই নেয়া।
ডেনকের বাড়িতে, বাড়ির পেছনের জলাশয়ে আর সে শহরের ধারের এক বনের মধ্যে পাওয়া গিয়েছিল মানব শরীরের বিভিন্ন অংশের অবশিষ্টাংশ। তার মধ্যে ছিল হাত, পা, উরু, গলা, বুকসহ মানুষের শরীরের প্রায় সমস্ত অংশের হাড়। আর পাওয়া গিয়েছিল তিনশ একান্নটি দাঁত।
দাঁতগুলো রাখা ছিল একটা টাকার থলে, দুটো টিনের বাক্স আর তিনটা কাগজের ব্যাগের ভেতরে। টাকার থলেতে রাখা ছিল কেবল মাড়ির দাঁত, আর অন্যগুলোতে ছিল বাকি দাঁত। ছয়টা ছাড়া বাকি সব দাঁতই খুব ভালোভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল ডেনকে। অন্তত ২০ জন মানুষের দাঁতের নমুনা পাওয়া গিয়েছিল সব মিলিয়ে।
পরীক্ষা করে যে কজনের শরীরের অংশ আলাদা আলাদাভাবে বোঝা গেছে, বিশেষজ্ঞদের মতে, তাদের মধ্যে একজনের বয়স ষোল বছরের বেশি ছিল না, একজন ছিল ত্রিশোর্ধ, দুজন বিশোর্ধ আর বাকি চারজন ছিল চল্লিশোর্ধ। ডেনকের বাড়ি থেকে যে হাড় ও অন্যান্য অংশ পাওয়া গিয়েছিল সেগুলো অন্তত আট জন মানুষের শরীরের অংশ বলে জানা যায় পরীক্ষার পর।
ডেনকে তার খুন করা মানুষগুলোর চামড়া আর চর্বি থেকে বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী বানাতো। প্যান্ট কিংবা মোজা বাঁধার জন্য বেল্টের মতো যে সাসপেন্ডার নামক লম্বা বন্ধনী ব্যবহার করা সেটা বানাতো চামড়া থেকে। এমনকি আত্মহত্যা করার সময় তার নিজের পরনেই ছিল এমন একটা সাসপেন্ডার। এছাড়াও চামড়া আর চুল দিয়ে দড়ি বানাত ডেনকে। চর্বি থেকে সাবান বানানোর চেষ্টার নমুনাও পাওয়া গেছে তার ঘর থেকে।
সে ঘরে আরো পাওয়া যায় একসাথে বেঁধে রাখা অবস্থায় একচল্লিশটি পুরনো কাপড়ের পুটলি। বিভিন্ন মানুষের পরিচয়পত্র আর নানাবিধ কাগজও ছিল। ডেনকে ভিকটিমদের এই ব্যক্তিগত কাগজপত্রগুলো যত্ন করে সংরক্ষণ করেছিল।
কয়েকটা কাগজে ডেনকের হাতে লেখা ৩০ জন মানুষের নাম পাওয়া যায়। সেখানে নারী পুরুষ উভয়ের নামই ছিল। কোনো কোনো নামের পাশে সে মানুষটির কিছু তথ্যও লেখা ছিল। সেই লিখিত নামের তালিকার কিছু লোকের পরিচয়পত্রও পাওয়া যায় ঘরে। অর্থাৎ সেই তালিকার সবাই যে ডেনকের হাতে মারা পড়ে তার পেটে গিয়েছিল, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। ধারণা করা হয়, অন্তত চল্লিশ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করেছিল ডেনকে।
নরঘাতক ডেনকের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া যা কিছু সে ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল তার মধ্যে ছিল তিনটা কুঠার, একটা বড় কাঠ কাটার করাত, একটা গাছ কাটার করাত, একটা পিকেক্স বা দুদিকেই ধারালো কুঠার আর তিনটা ছুরি। এই পিকেক্সটা দিয়েই অলিভারের উপর হামলা করেছিল ডেনকে।
সবার কাছে এমন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ডেনকে কেন যে এই ভয়ঙ্কর হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছিল তা নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে পুলিশ এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। মানুষের যে স্বাভাবিক নৈতিকতা বোধ থাকে, এই লোকটার মধ্যে হয়ত তেমন কোনো বোধের অস্তিত্বই ছিল না। প্রচণ্ড রকমের স্বার্থপরতা কাজ করত তার ভেতরে। এমনিতে মানুষের ক্ষতি করার ইচ্ছে না থাকলেও, এমন নৃশংস কাজ সে হয়ত করেছে মূলত খাবারের চাহিদার কারণে। আর দশটা মানুষের মতো খাদ্যাভ্যাস তার ছিল না। অনেক বেশি পরিমাণ খাবারের চাহিদা থাকায় সেটা মেটানোর আর কোনো পথ খুঁজে না পেয়ে এই বীভৎস কাজে নেমে পড়েছিল সে।
স্কুলে সে মার খেত বোকা বলে। চাষবাসের চেষ্টা করেও পারে নি। ব্যবসা করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। শৈশব কৈশোর আর যৌবনের গোটা সময় এমন সব ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে যেতে যেতে অর্থোপার্জনের আর কোনো পথই বাকি ছিল না তার কাছে। তাই খাবার যোগাড় আর টাকা আয়ের জন্য রেলস্টেশন থেকে অপরিচিত মানুষ বাসায় নিয়ে এসে খুন করার কাজ বেছে নিয়েছিল ডেনকে।
স্টেশনটা ছিল তার বাসার একেবারে কাছেই। আর তার বাসাটাও শহরের একদম বাইরের দিকে হবার কারণে, কেউ দেখে ফেলারও সুযোগ ছিল না। ছন্নছাড়া, ভিক্ষুক, স্টেশনে আসা অন্য শহরের যাত্রী- ডেনকে এমন মানুষদেরই অতিথি হিসেবে আপ্যায়ন করার আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে যেত নিজের বাসায়। ভ্যাগাবন্ড কিংবা অপরিচিতদের আর কে-ইবা বাসায় নিয়ে খাওয়াতে চায়। সহজেই তাই ডেনকের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে তারা পা দিত নিজেদের মৃত্যুফাঁদে।
সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হল এটাই, একটানা ১৫ বছর ধরে কীভাবে ডেনকে চালিয়ে গেল একের পর এক লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড? মুয়েনস্টারবার্গের একটি মানুষও জানতে পারল না, কীভাবে তাদের পছন্দের মানুষ ফাদার ডেনকে দিনের পর দিন তাদের বোকা বানিয়ে, মানুষের মাংস থেকে খাবার আর চামড়া থেকে জুতার ফিতা বানিয়ে বিক্রি করছিল তাদের কাছেই। এমনকি তার প্রতিবেশীরাও টের পায় নি তাদের ঘরের পাশেই কীভাবে চলছিল এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ।
ভিনসেনজ অলিভারকে আক্রমণের আগে মাত্র দুবার এমন ঘটনা ঘটেছিল, ডেনকের হাত গলে পালিয়ে গিয়েছিল ভিকটিম, যদিও সেগুলো পুলিশ পর্যন্ত গড়ায় নি। একবার এক লোককে সারা গায়ে রক্ত মাখা অবস্থায় দৌড়ে ডেনকের বাড়ি থেকে বের হতে দেখা গিয়েছিল, যাকে এরপর আর কখনো পাওয়া যায় নি। কেউ সেটা পুলিশকে জানানোরও দরকার বোধ করেনি।
এর
কিছুদিন পরেই আরেকজন লোক ডেনকের প্রতিবেশীদের জানায়, তাকে ডেনকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখতে চেয়েছিল কিন্তু সে তার চেয়ে শক্তিশালী হবার কারণে নিজেকে ছাড়িয়ে আনতে পেরেছিল। কেন জানি ঘটনাটা কেউ গুরুত্বের সাথে নেয় নি। এই ঘটনার কথা সাথে সাথে পুলিশকে জানালে হয়ত ঠেকানো যেত আরও কিছু নিরপরাধ প্রাণের মৃত্যু।
তবে ডেনকের প্রতিবেশীরা সবসময় তার বাসা থেকে একটা বিশ্রী রকমের কড়া গন্ধ পেত। কিন্তু কেউ কখনো ভেতরে ঢুকে দেখার আগ্রহ বোধ করেনি কী হচ্ছে তা দেখার। অবশ্য তারা একটু আশ্চর্য হত এই ভেবে যে, দুর্মূল্যের বাজারেও কীভাবে ডেনকের কাছে এত মাংসের মজুদ থাকে। তারা ধরে নিয়েছিল বাজারে মাংসের দাম চড়া হলে ডেনকে হয়ত কালোবাজার থেকে কুকুরের মাংস কিনে খেত। গভীর রাতে তার বাসা থেকে হাতুড়ি পেটানো আর করাত দিয়ে কী জানি কাটার শব্দ শোনা যেত। তখন তারা ভাবত, সে হয়ত পর দিন সকালে বাজারে বিক্রির জন্য খাবার তৈরির কাজ করছে। এই ভেবে ভেবেই তারা কখনও পাত্তা দেয় নি ডেনকের গভীর রাতের কাজকর্মকে।
শহরের মানুষের নিস্পৃহতার কারণেই ডেনকের পক্ষে সম্ভব হয়েছিল দিনের পর দিন এই জঘন্য কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়া। সে রাতের বেলা ভারী বস্তা নিয়ে কোথায় যেত, আর কেনইবা খালি হাতে ফিরে আসত সেটা নিয়ে কারো মাথাব্যথা হয় নি। এত রাতে তার কী কাজ, সেই বস্তাতে কী ছিল, কেন শুধু রাতেই নিয়ে যেত সেগুলো, এসব প্রশ্নও কেউ করে নি। সে যেসব পুরনো জামা-জুতা বিক্রি করত বাজারে, সেগুলোই বা কোথা থেকে আসত সেটা নিয়েও কারো মনে সন্দেহ জাগে নি।
আসলে ব্যাপারটা হলো, কারো কারো মনে ডেনকের চলাফেরা নিয়ে একটু সন্দেহ থাকলেও, সে যেহেতু শহরের অধিবাসীদের কারো ক্ষতি করে নি, তাই সেটা নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্যও হয় নি। এ সুযোগে ডেনকে তার নৃশংস নরভোজ চালিয়ে গিয়েছিল বছরের পর বছর।
[কার্লে ডেনকে নামক এক ব্যক্তি কমপক্ষে ৪২ জনকে মেরে তাদের মাংস খেয়েছেন৷ ধারণা করা হয়, তিনি গ্রামের মানুষদের মেরে তাঁদের মাংস পোল্যান্ডে শূকরের মাংস বলে বিক্রিও করতেন৷ তার শিকার এক ব্যক্তি পালিয়ে গিয়ে পুলিশকে খবর দিলে মানুষের মাংসসহ কার্লেকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ দু’দিন পরে জেলেই আত্মহত্যা করেন কার্লে]
#তিনিই হলেন জার্মানের ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার
---সমাপ্ত---
আত্নহত্যা নাকি হত্যা পর্বঃ০১
- "আমার মনে হচ্ছে আমার স্বামীর একটি মেয়ের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক চলছে। আপনি একটু এব্যাপারে খোঁজ করুন এবং আসলেই কি আমার ধারণা সঠিক কিনা তা জানান।"
- "আপাততঃ আমি এসব কেস নিচ্ছি না।"
- "প্লিজ স্যার আমি অনেক বড় বিপদে আছি আমাকে একটু সাহায্য করুন। আপনার একটা সাহায্য একটা মেয়ের ঘর বাঁচাতে পারে।"
- "আমি কোন ভাবেই এই কেস নিতে পারবো না।"
মেয়েটা অনেক অনুরোধ করার পরে-ও ডিটেকটিভ বাহাদুর তার কেসটি নিতে মানা করে দেয়। মেয়েটি আর না পেরে বাহাদুর ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি থেকে বেরিয়ে যায়। মেয়েটি বের হওয়ার পর বাহাদুর খবরের কাগজটি হাতে নিয়ে পড়তে লাগলো। এমন সময় নিহাল বললো,
- "গত দুই দিন যাবত তুমি কোন কেসই নিতে চাইছো না আর এখন এই মেয়েটির কেসটি ও নিতে রাজি হলে না কিন্তু কেন?"
অনেকটা অভিমানী স্বরে ডিটেকটিভ নিহাল এই কথা বললো। বাহাদুর খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় উওর দিল,
- "আপাততঃ এসব কেসে ফোকাস করার ইচ্ছে নেই।"
- "কিন্তু মেয়েটার স্বামীর কেসটা তো অনেক সহজ। শুধু কার সাথে অবৈধ সম্পর্ক চলছে এটা খুঁজে বের করতে পারলেই কেস সলভ হয়ে যাবে।"
- "আচ্ছা এসব কথা বাদ দাও চলো বাইরে থেকে একটু ঘুরে আসা যাক।"
- "কোথায় যাবে?"
- "দেখি কোথায় যাওয়া যায়।"
এই বলে বাহাদুর চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াতেই দেখল কিছুক্ষণ আগে যে মেয়েটি তার স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কিত কেস নিয়ে এসেছিল সে তার কেসের ডিটেইলসের প্যাকেটটি ভুলক্রমে টেবিলে রেখে চলে গিয়েছে। বাহাদুর প্যাকেটটি তার পকেটে নিয়ে বিইএ থেকে বের হয়ে একটি রিকশা নিয়ে ২টি জায়গায় ঘোরাঘুরি করল। তবে ঘোরাঘুরি করার সময় বাহাদুর একটি কথাও বলেনি। ডিটেকটিভ নিহাল বুঝতে পারল যে বাহাদুর এখানে বেড়াতে আসেনি বরং বাহাদুর কেস ইনভেস্টিগেশন করতে এসেছে কিন্তু কোন কেস ইনভেস্টিগেশন করছে সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। অতঃপর জায়গা দুটি ঘুরে তারা দু'জন একটি চায়ের দোকানে বসলো আর সেখানেই তাদের সাথে দেখা হয়ে গেল পাশের থানার ইন্সপেক্টর জিহাদের সাথে। ইন্সপেক্টর জিহাদ তাদেরকে দেখতেই বলল,
- "আসসালামু আলাইকুম ডিটেকটিভ। কেমন আছেন?"
ডিটেকটিভ নিহাল উওর দিল,
- "ওয়া আলাইকুমুস সালাম ইন্সপেক্টর। আলহামদুলিল্লাহ, আপনি?"
- "জি আমিও ভালো তা এখানে কি কোন কেস ইনভেস্টিগেশন করতে এসেছিলেন?"
- "হ্যাঁ আবার না দুটোই।"
বাহাদুরের মুখ থেকে এমন উওর শুনে কিছুটা বিরক্তির স্বরে জিহাদ বললো,
- "আচ্ছা বাহাদুর আপনি সবসময় এতটা রহস্য নিয়ে কথা বলেন কেন? কখনো তো স্বাভাবিকভাবে কথা বলেন।"
জিহাদের একথার উত্তরে বাহাদুর একটি মুচকি হাসি দিল।
- "বাহ আপনার হাসিতে ও রহস্য আছে।"
একথা বলে জিহাদ চায়ে চুমুক দিল। কিছুক্ষণের নীরবতা কাটিয়ে জিহাদ আবারও বললো,
- "হঠাৎ করেই এই এলাকায় আত্মহত্যার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। আমার মনে হয় যারা আত্মহত্যা করে তারা তাদের জীবনকে বিন্দু পরিমানও ভালোবাসে না।"
এই বলে জিহাদ তার হাতে থাকা ক্যাপটি মাথায় পরে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াতে যাবে এমন সময় বাহাদুর বললো,
- "কোন কেস কে এক এঙ্গেল থেকে দেখলে সেটা কোনদিনও সলভ করা সম্ভব না। একটা কেস কে একাধিক এঙ্গেল থেকে দেখলে তখনই কেসটা আসলে কিসের সেটা বোঝা যাবে এবং সলভ করাও সহজ হবে।"
- "ঠিক কি বলতে চাচ্ছেন বুঝতে পারলাম না?"
জিহাদ প্রশ্ন করলো এবং তার প্রশ্নের উওরে বাহাদুর বললো,
- "হয়তো কেসগুলো কে একটা এঙ্গেল থেকে দেখছেন তাই আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। যদি বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে দেখেন এবং ভালোভাবে তদন্ত করেন তাহলে বুঝতে পারবে এগুলো আসলে আত্মহত্যা নাকি হত্যা!"
- "আপনার ভাষ্য মতে যতগুলো আত্মহত্যার কেস সামনে আসছে সবগুলো হত্যা তাই তো?"
- "আমার ভাষ্য বলতে কিছুই নেই ভালোভাবে তদন্ত করলে নিজেই সব প্রশ্নের উওর পেয়ে যাবেন।"
বাহাদুর আর কথা না বাড়িয়ে সোজা হাঁটা শুরু করল। তার পিছু পিছু ডিটেকটিভ নিহালও হাঁটা শুরু করলো। ইন্সপেক্টর জিহাদ কিছু জিজ্ঞেস করতে যে ও যেন পারল না। এদিকে ডিটেকটিভ নিহালের মনে হাজারো প্রশ্ন। সে এতো-টুকু সিওর যে, তারা যে দুটি জায়গায় গিয়েছিল সেখানে বাহাদুর ঘুরতে যায় নি বরং কেস ইনভেস্টিগেশন করতে গিয়েছে। খানিক পরে তারা দুজন আবারো বাহাদুর ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি তে পৌঁছাল। এজেন্সির ভেতরে প্রবেশ করতেই নিহাল বাহাদুর কে বললো,
- "আমি খুব ভাল করেই জানি, যে দুটি জায়গায় আমাকে নিয়ে গিয়েছো বেড়াবে বলে আসলে সে দুটি জায়গায় তুমি ইনভেস্টিগেশন করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কোন কেস ইনভেস্টিগেশন করতে গিয়েছ তাতো বলেনি।"
বাহাদুর স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন করলো,
- "যে দুটি জায়গায় গিয়েছিলাম সে দুটি জায়গা ঠিক কিরকম?"
- "আবাসিক এলাকা, কিন্তু কোন কেস ইনভেস্টিগেশন করতে গিয়েছিলে সেটা তো এখনো বলনি?"
- "একজন ডিটেকটিভের শুধু ভালো পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা থাকলেই হয় না বরং তার থেকে প্রখর মেধার অধিকারী হতে হয় এবং পুরাতন জিনিস গুলো মনে রাখার অভ্যাস করতে হয়।"
- "যেটা বলতে চাচ্ছ একটু সরাসরি বল।"
- "গত মাসের ৩ তারিখ ও ১৯ তারিখের খবর কাজগুলো নিয়ে আসো। ওই টেবিলে তৃতীয় ডেস্কে আছে।"
বাহাদুরের কথামতো নিহাল ডেস্ক থেকে গত মাসের ৩ তারিখ ১৯ তারিখের খবরের কাগজ গুলো বের করল এবং খবরের কাগজে দুটি বাহাদুরের সামনে দিল। বাহাদুর খবরের কাগজ হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে তারপর নিহালের কাছে নিয়ে বললো,
- "গত মাসের ৩ তারিখের খবরের কাগজের ৮ নাম্বার পৃষ্ঠা ও ১৯ তারিখের খবরের কাগজের ১২ নাম্বার পৃষ্ঠা উভয়ের চতুর্থ কলামের ৫ নং খবরটি ভালো করে দেখো।"
নিহাল খবর গুলো দেখে বললো,
- "আরে এগুলো তো গত মাসে ঘটে যাওয়া আত্মহত্যা খবর গুলো।"
- "তুমি এতটা সিওর হয়ে কিভাবে বলতে পারছো যে এগুলো আত্মহত্যা?"
- "পুলিশ ইনভেস্টিগেশনে তো ওটাই বলা হয়েছে।"
- "তুমি কি জানো না যে খবরগুলো দেখতে সাধারণত আত্মহত্যা মনেহয় সেগুলোর সঠিক তদন্ত হয় না? খবরের কাগজে যে ২ জনের ছবি দেখছ আমরা দুজন আজকে তাদের বাসার আশেপাশে গিয়েছিলাম। তবে দুঃখজনক বিষয় বাসার আশেপাশে তেমন সন্দেহভাজন কোন জিনিসই খুঁজে পেলাম না যেটার মাধ্যমে আমি বলতে পারবো যে এইগুলো হত্যা। বাসার আশেপাশে সবকিছুই স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল আর এমনটা হওয়াও স্বাভাবিক কারণ আমি প্রায় ১ মাস পরে কেসগুলো হাতে নিয়েছি। এতদিনে অল্প ক্লু থাকলে সেগুলো হারিয়ে গেছে। চাইলে তাদের বাসার ভেতরে ঢুকে তদন্ত করতে পারতাম কিন্তু পুলিশ অফিসারেরা যেভাবে তদন্ত করেছিল মনেহয় না কোন ক্লু পেতাম তাই তাদের বাসার ভেতরেও ঢুকিনি। তবে এখনো আমার মন বলছে যে এই কেসগুলো আত্মহত্যা না বরং হত্যা। তবে কোন ক্লু না পাওয়া পর্যন্ত আমি কিছুই প্রমাণ করতে পারবো না।"
- "এখন বুঝতে পারলাম আজকে সকালে যে মেয়েটি এসেছিল তার স্বামীর কেস নিয়ে তুমি কেন সে কেসটি নিতে চাওনি। তবে যে কেসটা নিয়ে বর্তমানে তুমি স্টাডি করছ সেটাতো সম্পূর্ণ ক্লু বিহীন কেস। তাই এটার কোন ফলাফলেই আমরা সহজে পৌঁছাতে পারবো না। আর কোন ফলাফলে পৌঁছাতে না পারলে এইগুলা যে হত্যা সেটাও প্রমাণ করা সম্ভব হবে না।"
- "এই দুটি খবরের কাগজের আত্মহত্যার খবর দুটি পাশাপাশি রাখ আর ছবিগুলো ভালো করে দেখ। তাহলেই বুঝতে পারবে এগুলো আত্মহত্যা নাকি হত্যা।"
ছবিগুলো পাশাপাশি রেখে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করার পর নিহালের ধারণাও পাল্টে গেল। কারণ ছবির দুজনের আত্মহত্যার পদ্ধতিটা একই। ডান হাতে ব্লেড ও বাম হাতের শিড়া কাটা। নিহাল বললো,
- "মনে হচ্ছে এ-ই খুনগুলোর খুনি একজনই।"
- "তুমি ঠিক ধরেছ সবগুলোর খুনি একজনই। তবে এই একটা মিল দিয়ে আমারা কিছুই প্রমাণ করতে পারবো না।"
- "বাহাদুর আমার তোমার প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। যেহেতু এই কেসটা তুমি হাতে নিয়েছ আশা করি এই কেসের শেষ তুমি দেখেই ছাড়বে। কিন্তু তার আগে আমাদের থেকে একটু অন্য ভাবেও চিন্তা করতে হবে। যেহেতু আমরা প্রাইভেট ডিটেকটিভ তাই আমাদের কাছে যেসব কেস আসবে আমরা যদি সেগুলো নিতে মানা করে দেয় তাহলে পরবর্তীতে হয়তো অনেকেই কেস দিতে চাইবে না। শুধু তাই না কেস না নেওয়া যেমন আমাদেরকে আর্থিক ভাবে ভালো আঘাত করছে তেমনি মানুষদের কে সার্ভিস দেওয়া থেকে ও দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। তাই আমি বলবো আজকে সকালে যে মেয়েটা এসেছিল তার স্বামীর কেস নিয়ে তুমি ওই কেসটা হাতে না-ও। যেহেতু মেয়েটা নিজ থেকেই বলেছে তার স্বামীর পরকীয়ার সম্পর্ক চলছে সেহেতু কেসটা আরও বেশি সহজ হয়ে গেল। এখন আমরা শুধু ওই মেয়েটা কে খুঁজলেই হবে যে পরকীয়া সম্পর্কের মূল। এই কেসটা সলভ হয়ে গেলে তারপর নাহয় অন্য কেস নিয়ে ভালো ভাবে চিন্তা করবে।"
অতঃপর বাহাদুর নিহালের কথায় সম্মতি জানালো। বাহাদুরের সম্মতি পেয়ে নিহাল যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেল। উচ্ছসিত কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
- "তা কেসটা কিভাবে তদন্ত শুরু করবে?"
- "আমার কাছে মেয়েটার স্বামীর কেস ডিটেলসের প্যাকেট টি আছে। আগে ভালো করে কেসের ডিটেইলস দেখি তারপর সিদ্ধান্ত নেব কিভাবে কেসটা তদন্ত শুরু করবো।"
যে-ই ভাবা সেই কাজ, বাহাদুর তার পকেটে থেকে কেসের ডিটেলসের প্যাকেট টি বের করে সেটি খুলতেই একটি ছেলে ও একটি মেয়ের ছবি বেরিয়ে আসলো। ছবিগুলোর পেছনে লেখা দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে ছেলের ছবিটি হলো মেয়েটির স্বামীর। নাম আসফাক আহমেদ আর মেয়ের ছবিটি হলো মূল আসামির অর্থাৎ আসফাক আহমেদের যার সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক চলছে তার। মেয়েটির নাম অন্তরা খানম। বাহাদুরের হাত থেকে ছেলের ছবিটি নিয়ে নিহাল এক প্রকার চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
- "আরে এই ভদ্রলোককে তো আমি আগেও দেখেছি!"
- "কোথায় দেখেছ?"
বাহাদুর অনেকটা কৌতুহলী হয়ে এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করল।
- "পাহাড়তলীর ডেলা টাওয়ারের সামনেই তার সাথে দেখা হয়েছিল। তবে আমাদের দেখা হওয়ার দৃশ্যটি খুবই অদ্ভুত ছিল। আমি ডেলা টাওয়ার অতিক্রম করে সামনে অগ্রসর হচ্ছিলাম আর তিনি ঢুকছিলেন এমন সময় আমাদের দুজনের একে অপরের সাথে খুব বাজে ভাবে ধাক্কা লাগে। যার ফলে তিনি তার বাঁহাতে খুব বেশি ব্যাথা পান এবং তার হাতে থাকা জিনিসগুলো পরে যায়। তারপর আমি নিজে সেসব জিনিস গুলো তার বাসা পর্যন্ত নিয়ে যায়। তবে অদ্ভুত ব্যাপার হলো ভদ্রলোক ধন্যবাদ দেওয়া তো দূরে থাক আমার মুখের উপর এমনভাবে দরজা বন্ধ করলেন যেন ঘরের মধ্যে অনেক মূল্যবান কিছু লুকিয়ে রেখেছেন।"
- "তোমার কি মনে আছে কত তলার কত নাম্বার ফ্ল্যাটে তার বাসা?"
- "হ্যাঁ মনে আছে, অষ্টম তলার বি নাম্বার ফ্ল্যাট।"
- "চলো তাহলে এখনই যাওয়া যাক।"
- "এত রাতে?"
- "রাতদিন বলতে কিছুই নেই, কেস যেহেতু হাতে নিয়ে ফেলেছি তাই আর দেরি না করে তদন্ত শুরু করে যাক।"
অতঃপর তারা দুজন একটি রিকশা নিয়ে সোজা ডেলা টাওয়ারের সামনে উপস্থিত হলো কিন্তু উপস্থিত হওয়ার পর বুঝতে পারল ডেলা টাওয়ারে নিশ্চয় কোন ঝামেলা হয়েছে। পার্কিং এরিয়ায় দুইটি পুলিশের গাড়ি আর আশেপাশে কয়েকটি পুলিশ গুলি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। শুধু তাই না টাওয়ারের ভেতরেও অনেকগুলো পুলিশ। দূর থেকে দেখলে মনে হচ্ছে সপ্তম অথবা অষ্টম তলায় অনেকগুলো পুলিশ একত্রে জমা হয়েছে। টাওয়ারের আরেকটু কাছাকাছি যেতেই একজন দারোয়ান তাদেরকে আটকে বললো,
- "স্যার এখন ভেতরে যাওয়া নিষেধ।"
- "কি হয়েছে?"
বাহাদুর দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করতেই প্রতি উত্তরে দারোয়ান বলল,
- "অষ্টম তলায় একজন আত্মহত্যা করছে।"
শুরুতেই দারোয়ানের মুখ থেকে এমন কথা শুনবে তা তারা কল্পনা ও করেনি। তাও নিজেকে সংযত রেখে বাহাদুর তার পকেট থেকে ছবিদুটি বের করে আসফাক আহমেদের ছবিটি দারোয়ানের দিকে এগিয়ে দিয়ে অনেকটা ভয়ার্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
- "দেখুনতো ছবিতে থাকা এই ভদ্রলোকটি আত্মহত্যা করেছে নাকি অন্য কেউ?"
দারোয়ান ছবিটি তার হাতে নিয়ে বললো,
- "হ্যাঁ আসফাক সাহেবই আত্মহত্যা করেছেন। বড্ড ভালো মানুষ ছিলেন তিনি। কেন যে আত্মহত্যা করলেন কিছুই বুঝতে পারছি না।"
নিহাল ও বাহাদুর দু'জনেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। ঠিক এই মুহুর্তে কি বলা উচিত তারা দু'জন তা বুঝতে পারছে না। তারা দু'জনেই এক অদ্ভুত ভাবনার মধ্যে ডুবে গেল। তবে তাদের ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে দারোয়ান বাহাদুরের হাতে থাকা মেয়ের ছবিটি নিয়ে জিজ্ঞেস করল,
- "এই ছবিটি আপনারা কোথায় পেয়েছেন?"
বাহাদুর জিজ্ঞেস করল,
- "আপনি কি এই মেয়েটাকে চিনেন আর মেয়েটাকে কি কখনো আসফাক আহমেদের সাথে দেখেছেন?"
- "জি চিনি এবং অনেকবার দেখেছি।"
দারোয়ানের একথা শুনে নিহালের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। তারমানে তারা আসল অপরাধীর খুব কাছে। নিহাল দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে জিজ্ঞেস করল,
- "শেষ কবে দেখেছিলেন?"
- "মারা যাওয়ার আগে।"
- "মারা যাওয়ার আগে মানে!"
- "ছবির মেয়েটা আসফাক আহমেদের স্ত্রী ছিলেন। ১ বছর আগে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন আর আজকে আসফাক সাহেব আত্মহত্যা করেছেন....
চলবে,
গল্পঃ #আত্মহত্যা_নাকি_হত্যা
পর্বঃ০১
জীবন সবসময় দ্বিতীয় সুযোগ দেয় ||
জীবন সবসময় দ্বিতীয় সুযোগ দেয়
সুযোগ পেয়েও হারিয়ে ফেলার মতো বড় বোকামি আর কিছু নয়।আমরা অতি কাবিল ব্যাক্তি তো সব কিছুতে একটু কাবলামি না করলে কেমনে কি😒😒
আমি একটা মুভি দেখছিলাম অনেক আগে নাম ভুলে গেচি🙄🙄
আচ্ছা যাক মুভিতে নায়িকা অনেক কষ্ট করে খাবার জুটায়।অনেক কাজের সন্ধানে তিনি যান কিন্তু পান না।একটা সময় একটা খারাপ মুভিতে কাজের সুযোগ পান।এবং তিনি করেনও। কারণ অনেক চেষ্টা করেও ভালো কাজ তিনি পাননি।
ধীরে ধীরে এগিয়ে যান একটা সময় তার অবস্থান খুব ভালো হয়ে যায়। এর কিছুদিন পর থেকে তিনি তার সুযোগকে অবহেলা করেন। এবং একটা পর্যায়ে তিনি তার প্রথম অবস্থা থেকেও খারাপ পর্যায়ে চলে যান।
হতাশায় নিমজ্জিত তিনি একদিন সুইসাইড করেন।
এরপর থেকে যে ব্যাপারে মন টানে আমার সেই ব্যাপার জড়িত সকল সুযোগ আমি নিয়ে নেই। এতে অনেক সময় হিতে বিপরীত হয়েছে তবু্ও😋😋
হাসিতো ফাসি মুভিটাতে হতাশ নায়ককে নায়িকা বলেছিলেন যার বাংলা হলো 'শেষ সুযোগ বলে কিছু নেই। চেষ্টার পরও যে সুযোগ চলে যায় তা শেষ নয়। আরও একটা সুযোগ আছে। '
অনেক আগে দেখেছি কিছু ভুলও হতে পারে তবে সারমর্ম এটাই ছিল।
ভালো লেগেছিল মুভিটা আমার। জীবন আমাদের অনেক অনেক সুযোগ দেয়। যিনি সময়মতো আকড়ে ধরেন তিনি সুযোগকে দোষ দেন না। চেষ্টা করে আরও অনেক সুযোগ তৈরি করেন। আর যাদের দরজায় ঠকঠক করে কড়া নাড়তে নাড়তে ক্লান্ত সুযোগ ফিরে
যায় তাদের জন্য চেষ্টার পরিমাণ বাড়াতে হবে অনেক।
লাভ-লোকসান
➡আমরা বাঙ্গালি কোনো কাজ করার আগে তার লাভ ক্ষতি নিয়ে হিসাব কষতে শুরু করে দেই,,যদিও এটা খুব খারাপ দিক নয় কিন্তু সব ক্ষেত্রে লাভ লোকসানের হিসাব চলে না।
➡আমরা যখন ফোনে গেইমস খেলি অথবা ইউটিউব বা ফেইসবুকে কোনো ফানি ভিডিও দেখি অথবা নিউজফিডে অযথাই স্ক্রল করি তখন সময় কোন দিক দিয়ে চলে যায় তার হিসাবই থাকেনা।
অথচ ১০ মিনিট রাইটিং পোস্ট লিখতে গেলেই আমাদের মুল্যবান সময় নষ্ট হয়ে যায়। যারা এই মনোভাব পোষণ করেন তাদের জন্য আসলেই১০ মিনিটেই রাইটিং পোস্ট একটা বিরাট লসের জায়গা।
➡অন্য দিকে সাথে সাথে আনন্দ বা ফল না পেলেও কিন্তু এই ১০ মিনিট রাইটিং পোস্ট আমাদের জন্য হোমিওপ্যাথির ন্যায় কাজ করে অর্থাৎ দেরিতে হলেও কাজ করে। যা দীর্ঘমেয়াদী বিষয়। সারা জীবন আমাদের উপকারে আসবে।
?
▶১০মিনিট রাইটিং পোস্ট ২ মিনিটে পড়ে, ৮ মিনিটে কমেন্ট করতে হয়। এতে আমাদের বাংলায় দ্রুত পড়ার এবং লিখার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়৷। আর নিয়মিত লিখার ফলে আমাদের লিখার মানও ভালো হয়,
আর চর্চা এমন একটা মন্ত্র যা আমাদের যেকোনো কাজকে সহজ ও সফল করে দেয়।
➡ এ ক্ষেত্রে আমাদের মস্তিষ্কের একটা চর্চা হয়ে যায় ফলে আমরা খুব সহজেই আর দ্রুত কোনো কিছু পড়ে বুঝে ফেলতে পারি এবং সে বিষয়ে একটা মন্তব্য ও লিখতে পারি।
মেয়েদের জন্য ১৫ টি হাদিস ||
মেয়েদের জন্য ১৫ টি হাদিস :-
১.দেবর মৃত্যু সমতুল্য। (মৃত্যু থেকে মানুষ যেভাবে পলায়ন বা সতর্কতা অবলম্বন করে এক্ষেত্রে তাই করতে হবে)
(বুখারী শরীফ ৫২৩২, মুসলিম শরীফ ২১৭২, তিরমিযী শরীফ ১১৭১)
২.কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে নির্জনে মিলিত হলে নিঃসন্দেহে তাদের তৃতীয়জন হয় শয়তান। (তিরমিযী শরীফ ১১৭১)
৩.তোমরা সেই মহিলাদের নিকট গমন করো না যাদের স্বামীরা বিদেশে আছে। কারণ, শয়তান তোমাদের রক্ত শিরায় প্রবাহিত হয়। (তিরমিযী শরীফ ১১৭২)
৪.কোন অবৈধ নারীকে স্পর্শ করার চেয়ে মাথায় লোহার পেরেক পুঁতে যাওয়া ভালো।
(আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ২২৬)
৫.রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “দুই শ্রেণীর মানুষ জাহান্নামের অধিবাসী যাদেরকে আমি দেখিনি। তারা ভবিষ্যতে আসবে। প্রথম শ্রেণী হবে একদল অত্যাচারী, যাদের সঙ্গে থাকবে গরুর লেজের মত চাবুক যার দ্বারা তারা লোকদেরকে প্রহার করবে। আর দ্বিতীয় শ্রেণী হল সে নারীর দল, যারা কাপড় পরিধান করবে কিন্তু তবুও তারা উলঙ্গ অবস্থায় থাকবে, নিজেরা অন্যদের প্রতি আকৃষ্ট এবং অন্যদেরকেও তাদের প্রতি আকৃষ্ট করবে, যাদের মস্তক (খোঁপা বাধার কারণে) উটের হেলে যাওয়া কুঁজের মত হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তার গন্ধও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধ বহু দূরবর্তী স্থান থেকেও পাওয়া যাবে।”
(মুসলিম শরীফ ২১২৮)
৬.রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের বাহিরে দেখতে পান যে, নারীরা রাস্তায় পুরুষের সাথে মিশে গেছেন। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের বলেন, তোমরা অপেক্ষা কর, কারণ, তোমাদের জন্য রাস্তার মাঝে হাটা উচিত নয়, তোমাদের জন্য হল রাস্তার পাশ। এ কথা শোনে নারী দেয়াল ঘেঁসে হাটা শুরু করে তখন দেখা গেল তাদের অনেকের কাপড় দেয়ালের সাথে মিশে যেত।
(আবু দাউদ শরীফ ৫২৭২)
৭.কোন মহিলা যেন মাহরাম পুরুষ ছাড়া একাকিনী সফর না করে, তার নিকট যেন মাহরাম ছাড়া কোনো বেগানা পুরুষ প্রবেশ না করে, এ কথা শোনে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, হে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমি অমুক অমুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য সৈন্য দলে নাম লিখিয়েছি অথচ আমার স্ত্রী হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন এখন আমি কি করব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে উত্তর দিলেন তুমি তার সাথে বের হও। (বুখারী শরীফ ১৮৬২)
৮.নারী গোপন জিনিস, সুতরাং যখন সে(বাড়ি হতে) বের হয়, তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে রমণীয় করে দেখায়। (তিরমিযী শরীফ ১১৩৭)
৯.রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিষেধ করেছেন যে, “আমরা যেন মহিলাদের নিকট তাদের স্বামীদের বিনা অনুমতিতে গমন না করি।” (তিরমিযী ২৭৭৯)
১০.প্রত্যেক চক্ষুই ব্যভিচারী। আর নারী যদি সুগন্ধি ব্যবহার করে কোনো (পুরুষের) মজলিসের পাশ দিয়ে পার হয়ে যায় তাহলে সে এক বেশ্যা।
এমন কি এই অবস্থায় নামাযের জন্য যেতেও নিষিদ্ধ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে মহিলা সেন্ট ব্যবহার করে মসজিদে যায়, সেই মহিলার গোসল না করা পর্যন্ত কোনো নামায কবুল হবে না।”
(সহীহ আল-জামে আস-সগীর আযযিয়াদাতুহ ২৭০)
১১.আদম সন্তানের উপর ব্যভিচারের কিছু অংশ লিপিবদ্ধ হয়েছে সে অবশ্যই তার মধ্যে লিপ্ত হবে। দুই চোখের ব্যভিচার হল দৃষ্টি, দুই কানের ব্যভিচার হল শ্রবণ, মুখের ব্যাভিচার হল কথা বলা, হাতের ব্যভিচার হল স্পর্শ করা এবং পায়ের ব্যভিচার হল খারাপ উদ্দেশ্যে অগ্রসর হওয়া। আর অন্তর আশা ও আকাঙ্ক্ষা করতে থাকে। লজ্জা স্থান তাকে বাস্তবায়ন করে অথবা মিথ্যায় পরিণত করে। (মুসলিম শরীফ ২৬৫৭)
১২.যে নারী স্বগৃহ, স্বামীগৃহ বা মায়ের বাড়ি ছাড়া অন্য স্থানে নিজের পর্দা রাখে (কাপড় খোলে) সে তার ও তার রবের মধ্যকার পর্দা ও লজ্জাশীলতাকে বিদীর্ণ করে দেয়। (তিরমিযী শরীফ ২৮০৩)
১৩.কোন নারীর উপর তোমার দৃষ্টি পড়লে তার প্রতি) বারবার দৃষ্টিপাত করো না। বরং নজর অতিসত্তর ফিরিয়ে নিও, কারণ, তোমার জন্য প্রথমবার ক্ষমা, দ্বিতীয়বার নয়। (আহমাদ শরীফ ১৩৬৯)
১৪.নারীদের বেশ ধারী পুরুষের উপর অভিশাপ এবং পুরুষদের বেশ ধারিণী নারীদের উপর আল্লাহর অভিশাপ। (ইবনে মাজাহ শরীফ ১৯০৪)
১৫.যে নারী তার মাথায় এমন চুল বাড়তি লাগায় যা তার মাথার নয়, সে তার মাথায় জালিয়াতি সংযোগ করে। (সহীহ আল-জামিউস সাগীর ২৭০৫)
কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,“যে ব্যক্তি মানুষকে হিদায়াতের দিকে ডাকে তার জন্য ঠিক ঐ পরিমাণ সাওয়াব রয়েছে,যে পরিমাণ পাবে তাকে অনুসরণকারীরা!!
(সহীহ মুসলিম শরীফ ২৬৭৪,৬৮০৪)
#আল্লাহ তায়ালা মা বোনদেরকে আমল করার তাওফিক দান করুন।
#আমিন
আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা
আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা
এক. আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় আমল, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা:
যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«أحبُّ الأعمال إلى الله إيمانٌ بالله»
“আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় আমল, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা” [2]
আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার অর্থ: তাওহীদের প্রতি ঈমান আনা। অর্থাৎ যাবতীয় ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য করা। আর তা সংঘটিত হবে, অন্তরের আমলসমূহ কেবল আল্লাহর জন্য করা। আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমল অন্তরের আমলসমূহের অনুসারী। কারণ, ঈমান অনেকগুলো শাখা প্রশাখা ও অসংখ্য আমলের নাম। তার মধ্যে কিছু আছে অন্তরের আমল, আবার কিছু আছে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমল। আর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি হল, অন্তরের আমল। কারণ, অন্তরের আমল সব সময় এবং সর্বাবস্থায় প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষের জন্য আবশ্যকীয়। যখন কোনো বান্দা থেকে অন্তরের আমল দূর হয়ে যায়, তখন তার ঈমানও দূর হয়ে যায়। যেমনিভাবে ঈমানের বাহ্যিক আমলসমূহ অর্থাৎ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমল, তা বিশুদ্ধ হওয়া ও গ্রহণযোগ্য হওয়া নির্ভর করে অন্তরের ঈমানের উপর; যা মূল বলে স্বীকৃত। এ কারণেই আল্লামা ইবনুল কাইয়্যেম রহ. ‘বাদায়ে‘উল ফাওয়ায়েদ’ কিতাবে লিখেন:
‘সুতরাং অন্তরের বিধান কি তা জানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিধান জানা হতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটিই হচ্ছে আসল, আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিধি-বিধান এর শাখা-প্রশাখা’।
একজন মুমিনের নিকট দ্বীনের আসল মূলকথা ও মূল ভিত্তি হচ্ছে যে সে তার অন্তরের আমল থেকে শুরু করবে, যার সূচনা হবে ইলমের সৌন্দর্য সম্পর্কে জানা ও তার রবের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন সংবাদের উপর, যা থেকে অন্তরের সকল আমলের ফলাফল লাভ হয়। যেমন, আল্লাহর প্রতি দৃঢ়-বিশ্বাস, দ্বীন বা আনুগত্যকে একমাত্র আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ করা, আল্লাহর জন্য মহব্বত করা, আল্লাহর উপর ভরসা করা, আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা, আল্লাহর শর‘ঈ ও কাদরী ফায়সালার উপর ধৈর্য ধারণ করা, আল্লাহকে ভয় করা, আল্লাহর নিকট আশা করা, আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব ও দুশমনি করা, আল্লাহর জন্য বিনয়ী হওয়া, আল্লাহর জন্য অপমানিত ও লাঞ্ছিত হওয়া, আল্লাহর ফায়সালায় প্রশান্তি লাভ করা ইত্যাদি বহু আমলকে আবশ্যক করে।
ঈমানের প্রকাশ্য ও গোপন আমলসমূহ পালন করার পদ্ধতি ও পরিমানের দিক বিবেচনায় মানুষেরও মর্যাদা ও শ্রেণীর বিভিন্নতা হয়ে থাকে; [সবাই এক পর্যায়ের বা এক স্তরের হয় না।] তাদের মধ্যে কতক মানুষ আছে, যারা তাদের নিজেদের উপর জুলুমকারী। আবার কতক আছে, মধ্যপন্থী, আবার কতক আছে, যারা ভালো কাজে অগ্রসর। এ তিনটি স্তরের মানুষের মধ্যে প্রতি স্তরের মানুষের আরও অসংখ্য শ্রেণী বিন্যাস আছে, যা আয়ত্ত করা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
আল্লামা ইবনে রজব রহ. «ألا وإن في الجسد مضغة .. الحديثَ» “মনে রাখবে দেহের মধ্যে একটি গোস্তের টুকরা আছে” এ হাদিসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন,
‘এখানে এ কথার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে যে, বান্দার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা সম্পাদিত যাবতীয় কর্মকাণ্ড সঠিক হওয়া, হারাম থেকে বিরত থাকা এবং সন্দেহযুক্ত বিষয়সমূহ হতে বেঁচে থাকা, ইত্যাদি সবই বান্দার অন্তরের কর্মকাণ্ডের পরিশুদ্ধতা অনুযায়ীই হয়ে থাকে। যখন অন্তর হবে নিরাপদ, তার মধ্যে আল্লাহর মহব্বত এবং আল্লাহ্ তা‘আলা যা মহব্বত করে, তার প্রতি মহব্বত করা ছাড়া আর কোন কিছুর মহব্বত তার অন্তরে স্থান পাবে না বা থাকবে না এবং একমাত্র আল্লাহর ভয় এবং আল্লাহ যা অপছন্দ করে তাতে পতিত হওয়ার ভয় ছাড়া, আর কোন ভয় তার অন্তরে থাকবে না, তখন তার সমগ্র অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমল ঠিক হয়ে যাবে। তখন বান্দার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা কোনো নিষিদ্ধ কাজ সংঘটিত হবে না এবং সন্দেহ, সংশয়যুক্ত বিষয়সমূহ থেকে হারামে পতিত হওয়ার আশঙ্কায় বেঁচে থাকবে। ’
এখানে একটি প্রশ্ন যুক্তিসংগত, তা হচ্ছে, ঈমান কেন আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় আমল?
উত্তর: কারণ, ঈমানের বাস্তবায়নের মাধ্যমে একজন বান্দা সমস্ত মাখলুকাত থেকে মুখ ফিরিয়ে একমাত্র আল্লাহর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে। বান্দার অন্তর আল্লাহ ছাড়া সব কিছুকে বাদ দিয়ে একমাত্র এক আল্লাহর দিকে ধাবিত হয়। আর এটিই হল, ইবাদতের হাকীকত ও মর্মার্থ; যার জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা মানুষ ও জ্বীন সৃষ্টি করেছেন, কিতাবসমূহ নাযিল করেছেন, অসংখ্য নবী ও রাসূলকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন এবং সাওয়াব ও শাস্তি নির্ধারণ করেছেন।
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রহ. মাজমু‘ ফাতাওয়ায় বলেন,
‘‘মানুষের অন্তর কখনোই সমস্ত মাখলুকাত হতে অমুখাপেক্ষী হবে না, কিন্তু তখন হবে, যখন আল্লাহই হবে তার এমন অভিভাবক যার ইবাদত ছাড়া আর কারো ইবাদত সে করে না, তার কাছে ছাড়া আর কারো কাছে সে সাহায্য চায় না, তার উপর ভরসা করা ছাড়া আর কারো উপর সে ভরসা করে না, আর একমাত্র আল্লাহ যে সব কিছুকে পছন্দ করেন তা ছাড়া অন্য কোন কিছুতে সে খুশি হয় না এবং যে সব কিছুতে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, তা ছাড়া অন্য কোনো কিছুতে স সন্তুষ্ট হয় না। আর আল্লাহ যে সবকে অপছন্দ ও ঘৃণা করেন, সে সব কিছুকে সে অপছন্দ ও ঘৃণা করে। আল্লাহ যাদের সাথে দুশমনি রাখেন তাদের ছাড়া আর কারো সাথে দুশমনি রাখে না। আল্লাহ যাদের সাথে বন্ধুত্ব করেন, তাদের সাথেই বন্ধুত্ব করে। তাদের ছাড়া আর কারো সাথে বন্ধুত্ব করে না। কাউকে বাধা দিতে বা বারণ করতে হলে, আল্লাহর জন্যই বাধা দেয় ও বারণ করে। সুতরাং যখনই একজন বান্দার দ্বীনে আল্লাহর জন্য শক্তিশালী ইখলাস থাকবে, তখনই তার দাসত্ব পরিপূর্ণতা লাভ করবে এবং সৃষ্টিকুল থেকে সে অমুখাপেক্ষী হবে। আর আল্লাহর জন্য দাসত্ব পরিপূর্ণতা লাভ করলেই তা বান্দাকে শিরক ও কুফর থেকে বাঁচাতে পারবে।”
এ কারণেই ঈমান, সর্বোত্তম ও সর্বাধিক প্রিয় আমল। আর এ ছাড়া যত আমল আছে, সব আমল আল্লাহর নিকট ফজিলতের দিক দিয়ে ঈমানের চেয়ে নিম্নপর্যায়ের।
শীতকালে পায়ের গোড়ালি পরিস্কার করার কার্যকারি উপায়
শীতকাল বা যেকোনো শুষ্ক আবহাওয়ায় পায়ের ত্বকে আর্দ্রতার পরিমাণ কমে আসে। তখন তৈরি হয় পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়ার প্র’বণতা। শীতের সময় ছাড়াও বছরের অন্য সময়েও অনেকের পা ফাটে। পা না ফাটলেও গোড়ালির ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।শ’রীরের সবচেয়ে বেশি চা’প প’ড়ে পায়ের গোড়ালিতে। আর তাইতো পায়ের গোড়ালি ফেটে যায়। এছাড়াও শুষ্ক আবহাওয়াতে পায়ের গোড়ালি বাইরে থাকে। যে কারণেও পায়ের গোড়ালি ফাটতে পারে। রাস্তার ধূলাবালি বা মাটির সংস্প’র্শেও অনেক সময় গোড়ালি ফাটে। গোড়ালি ফাটা খুবই ক’ষ্টকর।অনেক সময় র’ক্ত পর্যন্ত প’ড়ে। এর পেছনে রয়েছে স’চেতনভাবে পায়ের ত্বকের যত্নের অভাব। এই অভাব খুব সহজেই দূ’র করা যায় ঘরোয়া উপায়। চলুন তবে জে’নে নেয়া যাক পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ ও প্রতিকার স’ম্পর্কে-১.শ’রীরে ভিটামিনের অভাব হলে পা ফেটে থাকে। মানব দে’হে ক্যালসিয়াম, জিংক ও আয়রনের ঘাটতি পা ফাটার অন্যতম কারণ।২.মানবদে’হে পানিশূন্যতার কারণে পা ফাটতে দেখা যায়। পানিশূন্যতা দূ’র ক’রতে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন।৩.খুব বেশি গরম পানিতে গোসল, ধুলা-বালি, দীর্ঘদিন ধ’রে পায়ের যত্নের অভাব, অপরিচ্ছন্ন জুতা পরা , অতিরি’ক্ত পুষ্টির অভাব।৪.ডায়বেটিস রো’গীদের স্নায়ুজনিত স’মস্যা তৈরির ফলে পায়ের আর্দ্রতা হারিয়ে ফে’লে। ফলে পা ফাটা হতে পারে।৫. অল্প ফেটে গেছে এমন জায়গার চামড়াকে জো’রে জো’রে টেনে তোলা বা ছিঁড়ে দেয়া।৬.অনেকে আবার পা ফাটা স’মস্যা জে’নেটিক ভাবে পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ বাবা, চাচা,মা কারো এই স’মস্যা থাকলে ছেলে -মেয়েরা ও বংশ পরম্পরায় পেয়ে থাকে।৭.পা প্রতিদিন প’রিষ্কার না করা, ভ্যাসলিন বা ময়েশ্চার ব্যবহারের পরে তা সঠিকভাবে প’রিষ্কার না করে আবার লোশন, ক্রিম বা ময়েশ্চার ব্যবহার করা।পায়ের গোড়ালি ফাটার হাত থেকে বাঁ’চার উপায়:১। মধু পায়ের যত্নে অত্যন্ত কা’র্যকরী উপাদান। এক বালতি হালকা গরম পানিতে এক কাপ মধু মিশিয়ে নিন। তারপর সেই মি’শ্রণ দিয়ে পায়ে ম্যাসাজ করুন ২০ মিনিট। তারপর পা-ঘষার পাথর দিয়ে শক্ত চামড়া ঘষে প’রিষ্কার করে নিন। এতে অনেক উপকার পাবেন।২। অ্যালোভেরায় বিটামিন এ, সি ও ই থাকে। এই কারণে ত্বকের জন্য অ্যালোভেরার জে’ল খুবই কা’র্যকরী। হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে, পা-ঘষার পাথর দিয়ে গোড়ালি ঘষে প’রিষ্কার করে নিন। তারপর মোটা করে এই জে’ল লা’গান পায়ের তলায়। এরপর মোজা পরে শুয়ে থাকুন। সকালে উঠে হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে নিন।৩। ভ্যাসলিন এর স’ঙ্গে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে সারা রাত পায়ে লা’গিয়ে রাখু’ন। ফলে পায়ের গোড়ালি ফাটা দূ’র হবে ও পা নরম মসৃণ হয়ে যাবে।৪। হালকা গরম পানিতে তিন চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। সেই মি’শ্রণে পা ডুবিয়ে রাখু’ন ১৫ মিনিট। এরপর পানি থেকে পা তুলে পা-ঘষার পাথর দিয়ে ঘষে প’রিষ্কার করে নিন।৫। অলিভ অয়েল, তিলের তেল, নারকেল তেল, সরষের তেল ও বাদাম তেল পা ফাটার ভালো একটি সমাধান। রাতে যে কোনো একটি ভেজিটেবল তেল লা’গিয়ে নিতে পারেন। এতে পা ফাটা অনেকটাই কমে যাবে।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)